ভারতে চেন্নাইয়ে চিকিৎসা নিতে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন কণ্ঠশিল্পী আলিফ আলাউদ্দীন। তিনি গত ১০ মার্চ ডায়ালাইসিসের পর ফেরার পথে হাসপাতালের নিচে পড়ে গিয়ে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আলিফ আলাউদ্দীন নিজেই।
এ নিয়ে দীর্ঘ এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে আলিফ আলাউদ্দীনের স্বামী গিটারিস্ট কাজী ফয়সাল আহমেদ লিখেছেন, ‘ডায়ালিসিস শেষ করে হাসপাতালের নিচেই গেটের সামনে অপেক্ষা করছিলাম ট্যাক্সির জন্য। আলিফ আমার পাশেই ছিল। হঠাৎ বিকট চিৎকার দিল সে। আমি ঘুরে দেখলাম, আলিফ হাতের ব্যাগ ছুড়ে ফেলে দিয়ে পড়ে যাচ্ছে। কিন্তু সেই মুহূর্তে খেয়াল করলাম, তার সামনের স্টিলের গ্রিলে সে মাথায় আঘাত পাবে। আমি আমার হাত দিয়ে সেটা ঠেকাতে পারলাম ঠিকই, কিন্তু ও পড়ে গেল রেলিংয়ের চিকন গ্রিলের ওপর। চোখ ও কপালে আঘাত পেল। এর পর থেকে ওর সেন্স নেই। আমার সামনে পড়ে আছে আর কাঁপছে। চোখ ওপরের দিকে, মুখ বাঁকা হয়ে আছে, হাতের কনুইয়ে ব্যথা পেয়েছে। তখন কিছুক্ষণের জন্য আমার মনে হয়েছিল, তার জান বের হয়ে গেছে শরীর থেকে। হাসপাতালের গার্ড চিৎকার করে স্ট্রেচারের ব্যবস্থা করে নিয়ে যায় ইমার্জেন্সিতে। ’
এর পরের ঘটনা ও আলিফের বর্তমান অবস্থাও জানিয়েছেন ফয়সাল। তিনি লিখেছেন, ‘সেন্স আসার পর সেই মুহূর্তে আলিফ কিছুই মনে করতে পারেনি কখন পড়েছে, কখন নিচে গেছে আমার সাথে! ডায়ালিসিসের সময় ব্লাড থিনার দেওয়া হয়। তার জন্য ব্যথা পাওয়া জায়গাগুলোতে রক্ত এসে ফুলে গেছে। তারপর আলিফের তিনদিন কেটেছে আইসিইউতে। সিটিস্ক্যান, এমআরআই, ইইজি, ইকো ও ইসিজি টেস্ট করানো হয়েছে। বর্তমানে চক্ষু বিশেষজ্ঞ দেখছেন। ইরোলজিস্ট, নিউরোলজিস্ট ও নেফ্রোলজিস্ট- সবাই একটা করে রিপোর্ট চেক করছেন আর জানাচ্ছেন পরবর্তী পদক্ষেপ। ডাক্তারদের পরিপূর্ণ চেষ্টায় আলিফ এখন সেই অবস্থা থেকে অনেকটাই ভালো। তবে এখনো অনেক জটিলতা আছে। আগামী তিন মাস ওষুধ খেয়ে আবার সব টেস্ট করে ডাক্তারকে দেখাতে যেতে হবে। বর্তমানে সপ্তাহে তিন দিন ডায়ালিসিস, দুটি করে ইঞ্জেকশন আর ওষুধ চলছে আলিফের।’
উল্লেখ্য, কণ্ঠশিল্পী আলিফ আলাউদ্দীন প্রখ্যাত সুরকার ও সংগীতপরিচালক আলাউদ্দীন আলী ও নজরুল সংগীতশিল্পী সালমা সুলতানার মেয়ে। গত কয়েক বছর ধরেই তিনি গুরুতর অসুস্থ। তার দুটি কিডনির ৯০ ভাগ কার্যক্ষমতা হারিয়েছে। বর্তমানে তিনি নিয়মিতভাবে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক