বিচ্ছেদের এক বছর পর, অর্থাৎ ২০১৮ সালে ওয়াশিংটন পোস্টে একটা লেখা লিখেছিলেন আম্বার হার্ড। মতামতধর্মী সেই লেখায় অসুখী দাম্পত্য জীবনের নানা কথা তুলে ধরেন ‘অল দ্য বয়েজ লাভ ম্যান্ডি লেন’ ছবির মাধ্যমে প্রথম দর্শকমনে স্থান করে নেওয়া আম্বার। জনি ডেপের দাবি ওই লেখার মাধ্যমে তার সাবেক স্ত্রী তার বিরুদ্ধে কুৎসা রটিয়েছেন এবং তাতে তার মানহানি হয়েছে।
আম্বারের অভিযোগ
ওয়াশিংটন পোস্টে প্রকাশিত লেখায় ২৩ বছরের বড় সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছিলেন আম্বার হার্ড।
সব অভিযোগ মিথ্যা?
মামলার বিবরণে জনি ডেপ দাবি করেন, তিন বছরের (২০১৫ থেকে ২০১৭) যৌথ জীবনে তিনি কখনেওই আম্বারের গায়ে হাত তোলেননি বা তার ওপর যৌন নির্যাতন চালাননি।
জনি ডেপের মেসেজ
তবে আম্বার হার্ডকে পেটানো বা তার ওপর যৌন নির্যাতন চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করলেও পুরোনো কিছু টেক্সট মেসেজ তুলে আনায় বিব্রত হতে হয় জনি ডেপকে। আম্বারকে পাঠানো মেসেজগুলো যে তার তা স্বীকার করে ৫৯ বছর বয়সী অভিনেতা বলেন, সেই বার্তাগুলো পাঠিয়েছিলেন খুব কষ্টের সময় এবং সেগুলোর জন্য তিনি লজ্জিত।
জনি ডেপের পাল্টা অভিযোগ
মামলার শুনানিতে ‘পাইরেটস অব দ্য ক্যারিবিয়ান’-খ্যাত জনি ডেপ দাবি করেন, তিনি কখনেও কোনেও রকমের নির্যাতন না চালালেও অনেকবার তর্কাতর্কির সময় সাবেক স্ত্রী আম্বার তার সঙ্গে সহিংস আচরণ করেছেন।
আম্বারের বক্তব্য
আম্বার হার্ডও তার বিরুদ্ধে সহিংসতার অভিযোগ, অর্থাৎ ডেপকে পেটানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আদালতে তিনি বলেন, মাঝে মাঝে যে বোতল বা অন্য কিছু ছুঁড়ে মারতেন তা ছিল আত্মরক্ষার কৌশল।
‘আমার সবকিছু শেষ হয়ে গেছে’
আদালতে ডেপ বলেন, “ও (আম্বার) যখন দাবি করে যে, আমি একজন মাতাল, কোকেইনে আসক্ত, যে কিনা স্ত্রীকে পেটায়... তখনই আমি হেরে গেছি। আমার সবকিছু তখনই শেষ হয়ে গেছে। মামলার রায় যা ই হোক না কেন, আমাকে সারাজীবনই এটা বয়ে বেড়াতে হবে।”
মামলায় কী রায় হল
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে প্রাক্তন স্ত্রী আম্বার হার্ডের বিরুদ্ধে করা মানহানির মামলায় জিতলেন মার্কিন অভিনেতা জনি ডেপ। আদালতের জুরি সদস্যরা জানিয়েছেন, আম্বার গার্হস্থ্য হিংসার যে অভিযোগ জনির বিরুদ্ধে এনেছিলেন তা মিথ্যা এবং অবমাননাকর। সেই আদালত আম্বারকে নির্দেশ দিয়েছেন জনি ডেপকে ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৩৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকা) পরিশোধ করতে। এর মধ্যে ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮৯ কোটি ৫৮ লাখ টাকা) জরিমানা এবং বাকি ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪৪ কোটি ৭৯ লাখ টাকা) শাস্তি হিসেবে ধার্য করা হয়েছে।
পাশাপাশি জনির বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ আনার পিছনে অ্যাম্বারের অসৎ উদ্দেশ্য ছিল বলেও আদালত জানিয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/কালাম