৭ জুন, ২০১৯ ১৮:৫১

মৌলভীবাজারে পর্যটন স্পটগুলোতে উপচে পড়া ভিড়

সৈয়দ বয়তুল আলী, মৌলভীবাজার:

মৌলভীবাজারে পর্যটন স্পটগুলোতে উপচে পড়া ভিড়

মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত

ভ্রমণ পিয়াসী মানুষ একটু অবকাশ পেলেই ছুটে যায় দিগ-দিগন্তে সৌন্দর্য্যে অবলোকনে। জন্মগত ভাবেই মানুষ কৌতূহলী। তার সে কৌতূহল নতুন নতুন বিষয়ের প্রতি। প্রকৃতি ও মানুষের সৃষ্ট সৌন্দর্য্যের নানা নিদর্শন সে মানবীয় সত্তা দিয়ে অনুভব ও উপলব্ধি করতে চায়। 

বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলীয় পর্যটনবহুল প্রাকৃতিক লীলাভূমি মৌলভীবাজার জেলায় অবসর সময়কে আনন্দময় করে তোলার জন্য রয়েছে অনেক দর্শনীয় স্থান। ঈদের ছুটি উপভোগ করতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অনেকেই পরিবার পরিজন নিয়ে এসেছেন মৌলভীবাজরের নয়নাভিরাম প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে।

পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিতে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়ে মুখরিত মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত, কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানসহ সবক'টি পর্যটন কেন্দ্রগুলো। দেশি বিদেশি পর্যটকদের ভিড় যেন দিন দিন বেড়েই চলেছে। 

এছাড়া পর্যটন স্পটগুলোর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন উপজেলায় টিলাঘেরা সবুজ চা বাগান, খাসিয়া পল্লী, এশিয়ার বৃহত্তম হাকালুকি হাওর, কমলগঞ্জের ছায়া নিবিড় পরিবেশে অবস্থিত নয়নাভিরাম মাধবপুর লেক, ঝর্ণাধারা হামহাম জলপ্রপাত, মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জি, শিল্পকলা সমৃদ্ধ মণিপুরীসহ  ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, শ্রীমঙ্গলের নীলকণ্ঠের সাত রংয়ের চা, চা গবেষণা কেন্দ্র, কুলাউড়ার ঐতিহ্যবাহী নবাববাড়ী, মুরইছড়া ইকোপার্ক, গগণ ঠিলা, দোলন চাপা ইকোপার্ক, মৌলভীবাজার সদরের বর্ষীজোড়া ইকোপার্ক, মুন ব্যারেজ। এছাড়া জেলার বিভিন্ন চা বাগান জীবনধারা ও সংস্কৃতিসহ প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর এই জনপদ যেকোনো পর্যটকের মন ও দৃষ্টি কেড়ে নেওয়ার মতো। 

সরেজমিনে মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতে দেখা গেছে, দূর-দূরান্ত থেকে পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধবসহ নানা বয়সী মানুষ বাস, মাইক্রোবাসসহ বিভিন্ন ধরনের ছোট-বড় যানবাহনে করে বেড়াতে আসছেন। মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের নির্মিত গাড়ি রাখার টার্মিনালে জায়গা না হওয়ায় আগত পর্যটকরা সড়কের পাশে গাড়ি পার্কিং করেছেন। এতে অনেকসময় যানজট লাগছে। স্থানীয় দোকানগুলোতে জমজমাট বিকিকিনি হচ্ছে। 

বনবিভাগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঈদের দিন বুধবার থেকে তৃতীয় দিন শুক্রবার বিকাল তিনটা পর্যন্ত মাধবকণ্ডুণ্ড জপ্রপাতে প্রায় ১৫ হাজার পর্যটকের সমাগম ঘটেছে। প্রতিদিন আশপাশের উপজেলার মানুষ ছাড়াও দেশের অন্যান্য জেলা এবং বিদেশী পর্যটকরা ভিড় করছেন মাধবকুণ্ডে। 

সিলেট থেকে মাধবুকণ্ডে সপরিবারে বেড়াতে আসা আব্দুল কাদির তফাদার বলেন, ‘মাধবুকণ্ড বাংলাদেশের একটি আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট। শ্রষ্টা যেন  সবটুকু সৌন্দর্য ঢেলে এখানকার প্রকৃতিকে সাজিয়েছেন। এখানে রয়েছে পাহাড়, ঝর্ণা।

সিলেট জালালাবাদ কলেজের প্রভাষক ইশরাক জাহান জেলী বলেন, ‘ মাধবকুণ্ডে আগেও এসেছি। এবারও সপরিবারে এসেছি। আর প্রকৃতির কাছে আসলে স্বাভাবিকভাবে মানুষের মন অনেকটা উদার হয়ে যায়। আমরা যারা শহরে জীবনযাপন করি, কয়েকদিন পর আমাদের উচিত প্রকৃতির কাছে আসা। আর প্রকৃতির কাছে আসলে শ্রষ্টাকে জানা যায়। আর এখানকার যোগাযোগ ব্যবস্থা আগের চেয়ে এখন অনেক ভালো। এছাড়া এখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থাও ভলো। এটা আমার ভালো লেগেছে।’ 

মাধবকুণ্ড পর্যটন পুলিশের এএসআই (সহকারী উপ-পরিদর্শক) ভানু লাল রায় শুক্রবার বিকেলে বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে মাধবকুণ্ডে পর্যটকরা বেড়াতে আসছেন। প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটকের সমাগম ঘটেছে এখানে। পর্যটকের নিরাপত্তায় পুলিশ সবসময় কাজ করছে। আগত পর্যটকরা পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে যাতে পাহাড়ের চূড়ায় না উঠতে পারে, সেজন্য পুলিশ সর্তক রয়েছে। এখনো কোনো ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেনি। 

মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহজালাল বলেন, পর্যটন স্পটে যাতে কোন পর্যটন হয়রানির শিকার না হয় সেজন্য স্পটগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।


বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর