আচ্ছা কখনো কী একবার ভেবে দেখেছেন, গতকাল রাতে আপনি যেই রুমের বিছানায় ঘুমিয়েছিলেন তার পরের দিন আপনি সেই রুমের বিছানায় নেই। আপনি ঠিক অন্য কোনো রুমের অন্য কোনো বিছানায় শুয়ে আছেন। এমনকি বিছানার চাদরের রংটিও বদলে গেছে। আশেপাশের কাউকেই আপনি ঠিক চিনতে পারছেন না। সবকিছু যেন ঠিক বদলে গেছে। ঐ মুহূর্তে আপনি ঠিক কি করবেন?
অনেকেই হয়তো হেসে উড়িয়ে দিয়ে বলবেন যে, "এসব আবার সম্ভব নাকি, হাহা।" কিন্তু আমি যদি বলি, হ্যাঁ, এটি সম্ভব। প্যারালাল ইউনিভার্স থিউরী বলছে এটা সম্ভব। আমরা মহাবিশ্বে বাস করি। কিছু কিছু বিজ্ঞানীর মতে ঠিক এই বিশ্বের সমান্তরালে ভলে আরও একটি বা অনেক বিশ্ব, যেখানে আমি আছি আপনিও আছেন (মাইরালাইচ্ছে)।
আমরা জানি বিগ ব্যাং এর সাথে সাথে সৃষ্টি এই মহাবিশ্বের। কিছু কিছু মানুষের মতে (বিখ্যাত মানুষ) ঠিক আমার আপনার সমান্তরালে চলছে আরেকটি বা একাধিক বিশ্ব। যদি টাইম ট্র্যাভেল সম্ভব হয়, তাহলে এর পিছনে থাকবে এই প্যারালাল ইউনিভার্স চলুন বিস্তারিত প্রলাপ জানা যাক। 'বিগ ব্যাং' বা মহাবিস্ফোরণের ফলে পৃথিবীর সৃষ্টি হয়েছিল এই মতবাদ বহু পুরনো। এ নিয়েও মতভেদের কমতি নেই। বিগ ব্যাং-এর ৯.১ বিলিয়ন বছর পর পৃথিবী গঠিত হয়। বিজ্ঞানীদের মতে, যে ভয়ানক বিস্ফোরণেরকে বিগ ব্যাং বলা হয়, তা আসলে আমাদেরই মতো ভিন্ন দুটি ব্রহ্মাণ্ডের সংঘর্ষের ফল। আর সেখান থেকেই পুরো বিশ্বের সৃষ্টি। আমাদের বিশ্বের পাশাপাশি কল্পিত ভিন্ন ব্রহ্মাণ্ডকেই বিজ্ঞানীরা নাম দিয়েছেন প্যারালাল ইউনিভার্স। সেই ব্রহ্মাণ্ডর ঠিক আমাদের ব্রহ্মাণ্ডের মতোই। সেখানে রয়েছে হুবহু আমাদেরই মতো দেখতে মানুষজন, ঠিক যেন আমাদেরই জেরক্স কপি। বিজ্ঞানীদের ধারণা এ রকম হওয়াটা একেবারে অসম্ভব নয়! প্যারালাল ইউনিভার্স হচ্ছে আমাদের ব্রহ্মাণ্ডের মতো আরও একটি বা একাধিক ব্রহ্মা যা ঠিক আমাদেরই মতো। সেখানকার প্রকৃতি, ভূমণ্ডল এমনকি প্রাণিজগৎও একেবারে আমাদেরই মতো। হুবহু আমাদেরই মতো দেখতে সবকিছু। একেবারে যেন আমাদের যমজ বিশ্ব। আমাদের পৃথিবীতে এখন যা ঘটছে সেখানেও ঠিক তাই ঘটছে। আমাদের পৃথিবীতে আমরা যা করছি সেখানে আমাদের 'জেরক্স কপি' ঠিক তাই করছে। এই ব্যাপারটা পুরোপুরি কোয়ান্টাম মেকানিক্সের আওতায় পড়ে। ১৯৫৬ সালে মার্কিন বিজ্ঞানী হাগ এভাবেই সর্বপ্রথম কোয়ান্টাম মেকানিক্সের সাহায্যে প্যারালাল ইউনিভার্স রহস্য ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেন। কিন্তু কোথায় আছে এই প্যারালাল ইউনিভার্স? অনেকের মতে, আমাদের খুব কাছেই, একেবারে নাগালের মধ্যেই আছে এই যমজ ব্রহ্মা । আবার কারও কারও মতে পৃথিবী থেকে বহু বহু দূরের কোনো গ্যালাক্সিতে রয়েছে এটি। তবে সবচেয়ে রোমাঞ্চকর ও আশ্চর্যজনক যে তত্ত্বটি খাড়া করেছেন কয়েকজন গবেষক তা হলো- প্যারালাল ইউনিভার্সের অস্তিত্ব রয়েছে আমাদের জানা তিনটি ডাইমেনশন বা মাত্রার দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা বাইরে। অবাক হওয়ার মতোই ব্যাপার বটে। যেখানে রয়েছে ঠিক আমাদের মতো 'জেরক্স কপি'।
অনেক বিশেষজ্ঞ বলছেন যে, প্যারালাল ইউনিভার্সের সংখ্যা এক নয়, একাধিক। আমাদের
ব্রহ্মাণ্ডের একেবারে পাশাপাশি রয়েছে এসব ব্রহ্মান্ড । বলতে গেলে একেবারে গা ঘেঁষাঘেঁষি করে। ক'দিন আগে বিশ্বের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা বলেছেন, এরকম একাধিক প্যারালাল ইউনিভার্সের ঘর্ষণের ফলেই 'বিগ ব্যাং' বা মহাবিস্টেম্ফারণ ঘটেছিল। আর দুই প্যারালাল ইউনিভার্সের ঘর্ষণের ফলেই নতুন আরেকটি ইউনিভার্স অর্থাৎ
পৃথিবীর উৎপত্তি। কোয়ান্টাম মেকানিক্স নিয়ে গেষণায় মগ্ন বিজ্ঞানীরা এই তত্ত্বটি মনে-প্রাণে বিশ্বাস করেন। কিন্তু সত্যিই কি প্যারালাল ইউনিভার্স
কিংবা জেরক্স কপি বলে কিছু আছে? আপনার কি মনে হয়?
ভিডিও লিংক:
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন