২৩ অক্টোবর, ২০২০ ১৭:৪৪

সর্বাধুনিক পর্যটন সুবিধা নিয়ে গড়ে উঠছে সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক

নিজস্ব প্রতিবেদক

সর্বাধুনিক পর্যটন সুবিধা নিয়ে গড়ে উঠছে সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সাবরাং দ্বীপের নয়নাভিরাম পরিবেশে গড়ে উঠছে দেশের প্রথম পর্যটননির্ভর অর্থনৈতিক অঞ্চল সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক। এটি হবে এশিয়ার মধ্যে সর্বাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত পর্যটন কেন্দ্র। যা বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করতেই নির্মাণ করা হচ্ছে।

এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে বৃহস্পতিবার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁ হোটেলে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) এবং সিঙ্গাপুরভিত্তিক ইন্টার-এশিয়া গ্রুপ প্রাইভেট লিমিটেড (Inter-Asia Group Pte Ltd.)-এর মধ্যে ভূমি ইজারা চুক্তি সাক্ষরিত হয়। ইন্টার-এশিয়া গ্রুপ প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক রিক হক সিকদার এবং বেজা-এর নির্বাহী সদস্য (বিনিয়োগ প্রচার) এবং বাংলাদেশ সরকারের অতিরিক্ত সচিব আবদুল মান্নান নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তি স্বাক্ষর করেন।

চুক্তি স্বাক্ষরের পর ইন্টার-এশিয়া গ্রুপ প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক রিক হক সিকদার বলেন, “আমরা সাবরং ট্যুরিজম পার্ককে সত্যিকার অর্থে বিশ্বমানের পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তুলব। এজন্য আমরা সিঙ্গাপুর, ফিলিপাইনের বিশ্বসেরা প্রতিষ্ঠানকে এ উদ্যোগের সাথে যুক্ত করেছি।”

প্রকৃতি ও পরিবেশ বিষয়ে তিনি বলেন, “এখানকার জীববৈচিত্র্য, দেশের কৃষ্টি, সংস্কৃতি এবং পরম্পরাকে রক্ষা করার পাশাপাশি পর্যটনবান্ধব অঞ্চল গড়ে তোলা এবং কক্সবাজার জেলার আওতাধীন বিভিন্ন পর্যটন এলাকাগুলোর মধ্যে সেতুবন্ধন রচনা করা আমাদের এই উদ্যোগের অন্যতম লক্ষ্য।”

এবছর ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) আওতায় মহেশখালীতে সোনাদিয়া ইকো-ট্যুরিজম পার্ক এবং টেকনাফ উপজেলায় নাফ ট্যুরিজম পার্ক (এনএএফ) এবং সাবরং ট্যুরিজম পার্ক-এর মাস্টার প্ল্যান উদ্বোধন করেন। এসময় তিনি বলেন, “প্রয়োজনীয় সব সুযোগ-সুবিধাসম্বলিত করে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্নভাবে এ পার্ক নির্মাণ করতে হবে।”

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়ে বলেন, “এটি এমনভাবে নির্মাণ করতে হবে, যাতে অন্যান্য দেশের পর্যটকেরা এর প্রতি আকৃষ্ট হন এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে এখানে আসেন।”  

সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) ভিত্তিতে সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক গড়ে তোলা হবে। এই পর্যটনকেন্দ্রে কী কী সুযোগ সুবিধা থাকবে সে প্রসঙ্গে বেজা চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, “বিভিন্ন ক্যাটাগরির রিসোর্ট ও হোটেলের পাশাপাশি গলফ কোর্স, শপিং সেন্টার, ঐতিহ্য ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, অ্যামফিথিয়েটার, কনভেনশন সেন্টার, আ্যমিউজমেন্ট পার্ক, হাসপাতাল, ফায়ার স্টেশন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র থাকবে। এছাড়া পয়ঃবর্জ্য পরিশোধন প্ল্যান্ট, কঠিন বর্জ্য ও ই-বর্জ্য পরিশোধন প্ল্যান্ট, পাওয়ার প্ল্যান্ট, বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশন, পানি পরিশোধন ও সংরক্ষণাগার, সোলার প্যানেল এবং বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট হবে।

যোগাযোগের জন্য বাস ডিপো, ট্রান্সপোর্টেশন হাব, হেলিপ্যাড ও জেটি স্টেশন করা হবে। রাস্তা, হাঁটা পথ ও বাইসাইকেল লেনের জন্য রাখা হবে। এছাড়া প্রধান আকর্ষণ সমুদ্রসৈকত, ঝাউবন, লেক ও গ্রিন পার্ক ইত্যাদি অনেক কিছুই করা হবে এখানে।”

বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পাশাপাশি হাজার হাজার তরুণের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করবে সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক।

ভূমি চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যথাক্রমে বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’র নির্বাহী চায়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব মাক্‌ছুদুর রহমান পাটওয়ারী, বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব জিয়াউল হাসান এনডিসি এবং বিজিমইএ-এর প্রেসিডেন্ট ড. রুবানা হক।

বেজা-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ সরকারের সচিব পবন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সরকারি সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, পাওয়ারপ্যাক হোল্ডিংস লিমিটেডের পরিচালক, শন হক সিকদার এবং এর সিওও সৈয়দ কামরুল ইসলাম মোহন।

বিডি প্রতিদিন/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর