১৯ নভেম্বর, ২০২০ ১৪:২৯

বগুড়ায় শীতের শুরুতেই জমে উঠেছে পিঠার দোকান

আব্দুর রহমান টুলু, বগুড়া

বগুড়ায় শীতের শুরুতেই জমে 
উঠেছে পিঠার দোকান

পাশাপাশি ৬টি মাটির চুলায় আগুন জ্বলছে। কোন চুলায় মিস্টি কুশলী, কোন চুলায় ঝাল কুশলী, আবার একটি চুলায় ভাপা পিঠা, অন্যগুলোতে চিতই পিঠা, তেল পিঠা, চালের ঝাল পিঠাসহ নানা ধরনের পিঠা তৈরি করা হচ্ছে। গরম পিঠার স্বাদ নিতে অপেক্ষা করছেন পিঠাপ্রেমীরা।

শীতের আগমনী বার্তার সাথে সাথে বগুড়ায় জমে উঠেছে পিঠা খালা বেগুনী বেগমের পিঠার দোকান। বগুড়া শহরের কারমাইকেল সড়কের খান্দার বাজারের পশ্চিম পাশে শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামের মূল সড়কের পাশে পিঠার পশরা নিয়ে বসেন পিঠা খালা বেগুনী বেগম।

বেগুনী খালার পিঠার সুনাম এখন বগুড়া জুড়ে। গরম পিঠা খেতে পিঠাপ্রেমীরা বিকেল থেকে ভিড় করতে থাকে বেগুনী খালার দোকানে। সন্ধ্যা থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে পিঠা কিনতে থাকেন পিঠাপ্রেমীরা। বগুড়া শহরের বিভিন্ন স্থানে শীতকালীন নানা ধরনের খাবারের দোকান থাকলেও বেগুনী খালার দোকানের পিঠার চাহিদা বেশি। সকল বয়সের নারী পুরুষ শিশুরা গরম গরম পিঠা খেতে আসে। দামে কম ও মানে ভালো হওয়ায় পিঠার কদর বেশি বলে মনে করেন পিঠা প্রেমীরা।

বেগুনী খালার দোকানে নারিকেলের মিস্টি কুশলী প্রতিটি ১০ টাকা, ঝাল কুশলী ৮ টাকা, বুটের কুশলী ৮ টাকা করে, ভাপা পিঠা প্রতিটি ১০ টাকা, চিতই পিঠা ১০ টাকা করে, তেল পিঠা ১০ টাকা করে, চালের ঝাল পিঠা ১৫ টাকা করে, ডিমের ঝাল পিঠা ২৫ টাকা করে বিক্রি হয়।

বেগুনী খালার পিঠার দোকানে পিঠা খেতে খেতে কথা হয় বেশ কয়েকজনের সাথে। সরকারি কর্মকর্তা পিঠাপ্রেমী জাহাঙ্গীর আলম জানান, কাজের ফাঁকে সময় পেলেই সন্ধ্যায় পিঠা খেতে ছুটে আসেন বেগুনী খালার দোকানে। নিজের খাওয়া শেষ হলে পরিবারের জন্য কিনে নিয়ে যান তিনি।

বগুড়া পৌরসভার সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর হোসনে আরা হাসি পিঠা খেতে খেতে বলেন, বাসায় পিঠা বানানো হয়। তবে মাঝেমাঝে বাড়ির ছোটদের সাথে নিয়ে পিঠা খেতে আসেন বেগুনী খালার দোকানে। বাড়ির কাছে হওয়ায় ছোটদের বিকেলে বেড়ানোর সাথে সন্ধ্যার নাস্তাও হয়ে যায়।

সজল শেখ মেয়েকে সাথে নিয়ে এসেছে। তিনি জানালেন, মেয়ে জেদ ধরেছে দুধ পিঠা খাবে। তাই গরম চিতই পিঠা নিয়ে এসেছেন। দামে কম ও মানে ভালো হওয়ায় প্রায় পিঠা কিনতে তিনি এখানে আসেন।

বেগুনী বেগম জানান, বেশ কয়েক বছর আগে থেকে তিনি পিঠা বিক্রি করে আসছেন। শুরুতে তিনি একলা পিঠা তৈরি করে পিঠা বিক্রয় করলেও বর্তমানে ক্রেতার চাহিদা বাড়ার সাথে সাথে তার দোকানে ৬ জন কর্মচারী রয়েছে। দিন হিসেবে তাদের বেতন দেন। দিন শেষে এখন ভালো আয় হয় তার। আগে অভাব ছিল, পিঠা বিক্রি করে স্বচ্ছলতা এসেছে। তাই দোকানে আরও ৬ জনকে কাজ দিয়ে তাদেরও অভাব দূর করার চেষ্ঠা করছেন। প্রতিদিনই ভাল লাভ হয় তার। তিন থেকে চার মাস শীতের সময় ভালো ব্যবসা হয়। আর তা দিয়েই চলে সারা বছর। প্রতিদিন সব খরচ মিটিয়ে হাজার টাকার মত লাভ থাকে বলেও জানান বেগুনী বেগম।

বেগুনী বেগমের দোকানের কর্মচারী কমলা বেগম জানান, আগে কাজ না থাকলে বসে থাকা লাগতো। এখন কাজ করছি। ভালো আছি পরিবার নিয়ে।

ওই দোকানের আরেক কর্মচারী রহমত আলী জানান, শীত আসতেই দোকানে কাজের চাপ অনেক। পিঠা বানানো থেকে সব কিছু করতে হয়। ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে ব্যস্ত সময় পার হয়।  জানা যায়, বিকেল থেকে প্রায় রাত ১০টা পর্যন্ত চলে হরেক রকম পিঠা বানানো ও বিক্রি।

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর