১৫ জুন, ২০২১ ১৬:৩৭

আষাঢ়ের প্রথম দিনে প্রকৃতিতে দোল খাচ্ছে কদম ফুল

বেড়েছে চাহিদা, বেড়েছে বাজারমূল্য

নজরুল মৃধা, রংপুর

আষাঢ়ের প্রথম দিনে প্রকৃতিতে দোল খাচ্ছে কদম ফুল

আষাঢ়ের প্রথম দিনে প্রকৃতিতে দোল খাচ্ছে কদম ফুল। বর্ষা এলে গাছে গাছে এই ফুলের সমারোহ দেখা যাওয়ায় অনেকে একে বাদল দিনের ফুল বলেন। কবি-সাহিত্যিকরা বর্ষা এলেই কদম ফুলের বন্দনা গীতে কাব্য রচেন। এক সময় বাজার মূল্য না থাকায় শুধু জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হত এই কদমগাছ। জন্মও হত প্রাকৃতিকভাবেই। 

বর্তমানে কদমের সুদিন ফিরে আসতে শুরু করেছে। যান্ত্রিকতার ছোঁয়ায় তৈরী হচ্ছে পারটেক্স। আসবাবপত্র  ও ঘর সাজাতে এই পারটেক্স তৈরীর অন্যতম উপদান হচ্ছে এখন কদম কাঠ। তাই দিন দিন এর চাহিদা ও বাজারমূল্য বাড়ছে। প্রাকৃতির ওপর নির্ভর না করে অনেক নার্সারিতেই এখন কমদগাছের চারা পাওয়া যাচ্ছে। নগরীর গুড়াতিপাড়াসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় কদমগাছ ও ফুলের শোভা দেখা গেছে। তবে অনেক গাছের কদমফুল এখনো পরিপক্ক হয়নি।  

কদম দীর্ঘাকৃতি, বহু শাখাবিশিষ্ট বিশাল বৃক্ষ বিশেষ। রূপসী তরুর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কদম। কদমের কাণ্ড সরল, উন্নত, ধূসর থেকে  প্রায় কালো এবং বহু ফাটলে রুক্ষ, কর্কশ। শাখা অজস্র এবং ভূমির সমান্তরালে প্রসারিত। বড় বড় পাতা হয়। কদম ফুল দেখতে বলের মতো গোল, মাংসল পুষ্পাধারে অজস্র সরু সরু ফুলের বিকীর্ণ বিন্যাস। 

পূর্ণ প্রস্ফুটিত মঞ্জরির রঙ সাদা-হলুদে মেশানো হলেও হলুদ-সাদার আধিক্যে প্রচ্ছন্ন। প্রতিটি ফুল খুবই ছোট, বৃতি সাদা, দল হলুদ, পরাগচক্র সাদা এবং বহির্মুখীন, গর্ভদণ্ড দীর্ঘ। ফল মাংসল ও টক। এই ফল কাঠ বিড়ালী ও বাদুড়ের প্রিয় খাদ্য। ওরাই এর বীজ বহন করে প্রকৃতিতে ছড়িয়ে দেয়। 

সেই বীজ থেকে এক সময় চারা গজায়। চারা থেকে গাছ, ফুল ও ফল। কদম গাছ খুব নরম হওয়ায় এর কোন অংশ দিয়ে আসবাবপত্র তৈরী করা যেত না। ফলে এই গাছটির বাণিজ্যিক কোন চাহিদা ছিল না। এছাড়াও গাছটির বংশবিস্তার হত পাখির মাধ্যমে। 

পাখিরা এর বীজ ভক্ষণ করে তা মল আকালে প্রকৃতিতে ছড়িয়ে দিত। চাহিদা না থাকায় গাছটি হারিয়ে যাওয়ার উপক্রম হলেও বর্তমানে এই গাছটি ব্যবহার হচ্ছে পারটেক্স তৈরীতে। ফলে প্রকৃতির ওপর নির্ভর না করে অনেক নার্সারি মালিক কদমের চারা তৈরী করে বাজারজাত করছেন। 

এছাড়াও বন বিভাগও হারিয়ে যাওয়ার পথে এই কদমগাছ রক্ষায় বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করছে বলে জানালেন রংপুর বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন। তিনি জানান, 'পারটেক্সে কদমের ব্যবহার শুরু হওয়ায় এর বাজারমূল্য আগের চেয়ে কয়েকগুণ বেড়েছে। তাই সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে এই গাছের উৎপাদন বাড়ছে।'


বিডি প্রতিদিন / অন্তরা কবির 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর