১৪ জানুয়ারি, ২০২৩ ১৬:১৮

বাড়িতেই মিনি পার্ক, তাক লাগিয়ে দিলেন নাইম

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

বাড়িতেই মিনি পার্ক, তাক লাগিয়ে দিলেন নাইম

৭৫ ফুট ঊঁচু আলোক টাওয়ার, পদ্মা সেতু, ৪ তলা লঞ্চ, বিমান, প্রাইভেটকার, ফেরীঘাট, তাজমহল, গরু ও ঘোড়ার গাড়ি এবং হাতিসহ বিভিন্ন জাতীয় স্থাপনা। হঠাৎ দেখে কেউ পার্ক ভেবে ভুল করতেই পারেন। তবে না, এটা বরিশালের যুবক নাইম হাওলাদারের বাড়ি। 

উজিরপুরের এই যুবক নিজের আয় করা দেড় লাখ টাকা খরচ করে আলোকসজ্জা আর শোলা দিয়ে গত ৬ মাস ধরে এসব প্রতীকী স্থাপনা তৈরি করেছেন। এক কথায় বাড়িটিকে একটি দৃষ্টিনন্দন পার্কে পরিণত করেছেন নাইম। প্রতিদিন তার সৃষ্টি দেখতে ভিড় করছেন কৌতূহলীরা। ঝলমলে আলোয় রাতে এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্যের অবতারণা হয় নাইমের বাড়িতে। 

অভাবের সংসারে পড়াশোনা বেশিদূর করতে পারেননি। উজিরপুরের আটিপাড়ার ডেকোরেটর ব্যবসায়ী মোজাম্মেল হাওলাদারের ছেলে নাইম। দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পর স্কুল ছেড়ে বাবার ডেকোরেটর ব্যবসায় দেন। 

মজুরি এবং বাবার সহায়তার দেড় লাখ টাকা খরচ করে গত ৬ মাসে নাইম তার বাড়ির সামনে সুপারিগাছ, বাঁশ আর বিভিন্ন রংয়ের বৈদ্যুতিক বাতি দিয়ে ৭৫ ফুট ঊঁচু টাওয়ার তৈরি করেছেন। ককশিট দিয়ে বানিয়েছেন প্রতীকী পদ্মা সেতু, লঞ্চ ও ফেরিঘাট, বিমান, প্রাইভেটকার, গরুর গাড়ি, ঘোড়ার গাড়ি, হাতি, তাজমহল ও লাইটিং ব্রিজ। কৃষি ক্ষেতে নদীর আদল তৈরি করে তার উপর লাইটিং ব্রিজ এবং ব্রিজের নিচ দিয়ে ৪ তলা লঞ্চ চলার দৃশ্য তৈরি করেছেন তিনি। এসব প্রতীকী স্থাপনায় নাইমের বাড়ি এখন মিনি পার্কে পরিণত হয়েছে। তার সৃষ্টি উজিরপুর ছাড়িয়ে জেলা সদরেও মানুষের মুখে। সন্ধ্যার পর টাওয়ার ও লাইটিং ব্রিজ সহ অন্যান্য সৃষ্টির আলোকসজ্জা দূর থেকে আকর্ষণ করে পথচারীদের। মিনি পার্ক খ্যাত নাইমের বাড়ি দেখতে প্রতিদিন ভিড় করে বহু মানুষ। 

নাইম হাওলাদার জানান, নিজের উপার্জিত দেড় লাখ টাকা দিয়ে আলোকসজ্জাসহ অন্যান্য কাজ করেছেন তিনি নিজেই। শখের বশে এসব তৈরি করেছেন তিনি। প্রতিদিন অনেক মানুষ তার বাড়ি দেখতে আসে। এতে ভালো লাগে নাইমের। প্রথম দিকে বাবা-মা এসব কাজে বাঁধা দিলেও এক পর্যায়ে তাদের উৎসাহেই এসব করেছেন তিনি। 

নাইমের বাবা মোজাম্মেল হাওলাদার বলেন, ছোট বেলা থেকেই এসব করছে নাইম। নিজের আয়ের পরও বাবার কাছ থেকে মাঝে মধ্যে এসব করার টাকা চেয়ে নেয় সে। ছেলে তো আর নেশা করে না বা খারাপ কিছু করে না- এসব চিন্তায় ছেলেকেও উৎসাহ দেন তারা। ছেলের অনন্য সৃষ্টির কারণে এখন তার নিজের (মোজাম্মেল) পরিচিতিও বেড়েছে। ছেলে নতুন কিছু উদ্ভাবন করবে বলে বিশ্বাস তার। 

উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারিহা তানজিন বলেন, নাইমের অসাধারণ সৃষ্টি ফেসবুকে দেখেছেন। ব্যক্তি উদ্যোগে সরকারের ভালো কাজ কিংবা মেগা উন্নয়ন ফুটিয়ে তোলা অবশ্যই একটি ভালো কাজ। নাইমের সৃষ্টিগুলো প্রসংশার দাবি রাখে। নাইমের মতো প্রতিভাবানদের সরকার উৎসাহ দেবে বলে তিনি জানান। 


বিডি প্রতিদিন/নাজমুল

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর