৩০ মে, ২০২৩ ১৯:২৩

শখের বসে শিস গান শিখে বিশ্ব রেকর্ড গড়লেন কাকন

এম এম রেজাউল করিম, ঝালকাঠি

শখের বসে শিস গান শিখে বিশ্ব রেকর্ড গড়লেন কাকন

বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশুনার পাশাপাশি বিভিন্ন মাধ্যমে শিস গানের ব্যবহার ও রেকর্ড দেখেই ইচ্ছা যাগে নিজেও কিভাবে এটা রপ্ত করা যায়। শখের বসেই শুরু করেছিলেন বাংলা গান নিয়ে হুইসেল বাজানো। আর ৫৭ সেকেন্ডে সবচেয়ে বেশিবার হুইসেল (শিস) বাজিয়ে ইন্টারন্যাশনাল বুকস অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম তুললেন ঝালকাঠির ছেলে কুমার কাকন উজ্জ্বল। 

মাত্র ২৪ বছর বয়সী এ যুবকই পুরো বিশ্বের মধ্যে হুইসেল ক্যাটাগরিতে প্রথম বারের মতো "লংগেস্ট টাইম টু হুইসেল" টাইটেলে এই রেকর্ডটি গড়েছেন।

কাকনের জন্মস্থান ঝালকাঠি পৌর এলাকার সিটিপার্ক সড়কে। বাবা উত্তম কুমার রায় ঝালকাঠি পৌরসভায় চাকরি করেন এবং মা শিউলি রানী রায় পেশায় একজন আইনজীবী। তিনি ঝালকাঠি জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য। এই দম্পত্তির এক পুত্র ও এক কণ্যা সন্তানের মধ্যে কাকন বড়।

ঝালকাঠি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৬ সনে এসএসসি পাশ করে ভর্তি হয় বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন কলেজে। সেখান থেকে ২০১৮ সনে এইচএসসি পাশ করে ২০২২ সনে ভারত সরকারের অধীনে স্টাডি ইন ইন্ডিয়া (এসআইআই) স্কলারশিপ বিষয়ে ফুল-ফ্রি নিয়ে ব্যাঙ্গালুরের জেইন ইউনিভার্সিটি থেকে বায়োকেমিস্ট্রি জেনেটিক্স এন্ড বায়োটেকনোলজি বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন।

পড়াশুনার জন্য ভারতে অবস্থান করায় ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য ২০২২ সনের সেপ্টেম্বর মাসে ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের ব্যাঙ্গালুর থেকে আবেদন করেন কাকন। পরবর্তীতে ওই বছরের ১৪ ডিসেম্বরে ইন্টারন্যাশনাল বুকস অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষের নিকট "লংগেস্ট টাইম টু হুইসেল" ক্যাটাগরিতে ভিডিও পাঠানোর পরে চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি তা গৃহীত হয়। পরবর্তীতে গত মার্চ মাসে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ব রেকর্ড গড়ার স্বীকৃতি পান বাংলাদেশি এই তরুণ। 

বর্তমানে ভারতের ব্যাঙ্গালুরে অবস্থান করছে কাকন নামে এই যুবক। বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারতের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক  এবং সামাজিক সংগঠনের সাথেও যুক্ত রয়েছেন। এ বছরের শেষের দিকে ভারতের ইন্টার্নশীপ শেষ করে বাংলাদেশে এসে শিস গান ও সঙ্গীত নিয়ে আরও বড় পরিসরে কাজ করার আগ্রহ ব্যক্ত করেন। পাশাপাশি একটি সঙ্গীত একাডেমী করার ইচ্ছে আছে তার।

কাকন বলেন, 'হুইসেল নিয়ে আমার পথচলা শুরু হয় ২০১৮ সালে। তখন দেখেছি মানুষ এটাকে খুব ভালোভাবে গ্রহণ করেছে এবং পছন্দ করেছে। আর তখনই এটা নিয়ে আমার স্বপ্নটা আস্তে আস্তে বড় হতে থাকে। সেই থেকেই ইচ্ছে ছিল হুইসেলের মাধ্যমে বাংলা গানকে পুরো বিশ্বের কাছে কিভাবে তুলে ধরা যায়। যেহেতু ছোটবেলা থেকেই আমি মিউজিকের সাথে যুক্ত ছিলাম তাই শিস গান অথবা হুইসেল আমার আয়ত্ত করতে খুব একটা কষ্ট করতে হয়নি। আমি গর্বিত যে, বাংলা ভাষার গানকে বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে পেরেছি এবং সেই বাংলা গানে হুইসেল বাজিয়ে এটির বিশ্ব রেকর্ড করতে পেরেছি।' 

হুইসেলের মাধ্যমে বাংলা গানকে যেভাবে বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে পেরেছি, ঠিক সেভাবে আরও নতুন রেকর্ড গড়তে চাই। হুইসেলে যে আমার রেকর্ড সেটা ভেঙ্গে আবারও নতুন রেকর্ড করতে চাই। বাংলা সংস্কৃতিকে বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরাই হবে আমার ভবিষৎ পরিকল্পনা। এজন্য প্রয়োজন প্রচুর অধ্যাবসায় আর একাগ্রতা।

কাকনের বাবা উত্তম কুমার রায় বলেন, 'আমার ছেলে পড়ালেখার পাশাপাশি শিস বাজিয়ে গান তুলে বিশ্ব রেকর্ড গড়ায় বাবা হিসেবে আমি গর্বিত। আমরা পরিবারের সবাই এবং স্বজনরা খুশি ও আনন্দিত। আমরা তাকে উৎসাহ যোগাচ্ছি।

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর