মাওলানা নুরুল ইসলাম ফারুকী হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেফতার রহস্যময়ী নারীসহ তিনজনের কাছ থেকে কোনো তথ্য পাননি তদন্তসংশ্লিষ্টরা। প্রাথমিকভাবে তারা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নন বলে ধারণা করছে পুলিশ। উগ্রবাদী সংগঠনের কর্মীরা তাকে হত্যা করেছেন বলে ধারণা তাদের। কারা তার বিরুদ্ধে অনলাইন ব্লগ, ইউটিউব ও ফেসবুকে মাজারের পূজারী, দজ্জাল, খাজাবাবাসহ বিভিন্ন নামে অপ্রচার চালিয়েছেন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এদিকে, ফারুকী হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কুমিল্লা থেকে গ্রেফতার ইউসুফ মজুমদারকে দুই দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। মামলার তদন্তসংশ্লিষ্টরা বলছেন, রিমান্ডে থাকা তিন আসামি হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ত নন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। মাহমুদা খাতুন ব্যক্তিগত সমস্যার ব্যাপারে মাওলানা ফারুকীর কাছে তাবিজ নিতে এসে ফেঁসে যান। তার সঙ্গে যোগাযোগ থাকায় দর্জি দোকানি শরিফকে গ্রেফতার করা হয়। এ ছাড়া কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে গ্রেফতার ইউসুফকে থানা পুলিশ ডিবিতে হস্তান্তর করেছে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা পাননি তদন্ত কর্মকর্তারা। কী কারণে থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করল সে ব্যাপারেও নিশ্চিত নন তারা। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক জুলহাস উদ্দিন আকন্দ জানান, ফারুকী হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সন্দেহভাজন আসামি ইউসুফকে ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত দুই দিন মঞ্জুর করেন। ইউসুফ হত্যাকাণ্ডে তার সম্পৃক্ততা স্বীকার করেননি। এ কারণে তাকে ফারুকী হত্যাকাণ্ডে গ্রেফতার দেখানো হয়নি। ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে রিমান্ড আবেদন করা হয়। এ ছাড়া রবিবার রিমান্ডে আনা মাহমুদা ও শরিফুলও এখন পর্যন্ত হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে তাদের সম্পৃক্ততা স্বীকার করেননি। তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে কোনো তথ্যও পাওয়া যায়নি।
চট্টগ্রাম প্রতিবেদক জানান, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের চেয়ারম্যান সৈয়দ বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদী বলেছেন, ফারুকী হত্যাকে সাধারণ হত্যাকাণ্ড হিসেবে মনে করলে হবে না। একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর পরিকল্পিত ও সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ এটি। গতকাল বিকালে নগরীর লালদীঘি ময়দান চত্বরে ইসলামিক ফ্রন্টের চট্টগ্রাম উত্তর, দক্ষিণ ও মহানগরীর উদ্যোগে ফারুকী হত্যার প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত গণজামায়েতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। গণজমায়েত থেকে আজ বেলা ১১টায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ, ৩ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম জেলার আওতাধীন সব উপজেলা সদরে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল, ৪ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন, ৫ সেপ্টেম্বর বাদ জুমা জেলার সব মসজিদে দোয়া দিবস পালনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। প্রসঙ্গত, বুধবার রাত সোয়া ৯টার দিকে রাজধানীর ১৭৪ পূর্ব রাজাবাজারের নিজ বাসায় নৃশংসভাবে খুন হন মাওলানা নুরুল ইসলাম ফারুকী।