রবিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০১৪ ০০:০০ টা
সিপিডির গবেষণা প্রতিবেদন

একজন পুরুষের চেয়ে নারী তিন গুণ বেশি কাজ করে

সেন্টার ফল পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়- ১৫ বছর বা তদূর্ধ্ব একজন নারী গড়ে প্রতিদিন একই বয়সের একজন পুরুষের চেয়ে তিন গুণ বেশি কাজ করেন। কিন্তু তা জাতীয় আয়ের হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয় না। প্রতিদিন একজন নারী এসব কাজে যেখানে ৭ দশমিক ৭ ঘণ্টা ব্যয় করেন সেখানে একজন পুরুষ মাত্র ২ দশমিক ৫ ঘণ্টা ব্যয় করেন। একজন নারী প্রতিদিন ১২ দশমিক ১টি কাজ করেন। এর বিপরীতে পুরুষ করেন মাত্র ২ দশমিক ৭টি কাজ। গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘অর্থনৈতিক উন্নয়নে নারীর অবদান’ শীর্ষক ডায়ালগে এ গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সিপিডির সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বক্তব্য দেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক (বিআইডিএস) মোস্তফা কে মুজেরি, সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহিন আনাম। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংস্থাটির গবেষণা পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।  সিপিডির গবেষণা প্রতিবেদনে, ৬৪ জেলা থেকে থেকে ১৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সের মোট ১৩ হাজার ৬৪০ ব্যক্তির কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে ৮ হাজার ৩২০ জন নারী এবং পুরুষ ৫ হাজার ৩২০ জন। মোট জরিপকৃত খানার সংখ্যা ৫ হাজার ৬৭০টি। ২০১৪ সালের মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে এ জরিপ সম্পন্ন করা হয়। গবেষণায় বলা হয়, ১৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বছরের একজন নারী গড়ে প্রতিদিন একই বয়সের একজন পুরুষের চেয়ে ৩ গুণ সময়  দেয়। কিন্তু জাতীয় আয়ের হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয় না। প্রতিদিন একজন নারী এসব কাজে যেখানে ৭ দশমিক ৭ ঘণ্টা ব্যয় করেন সেখানে একজন পুরুষ মাত্র ২ দশমিক ৫ ঘণ্টা ব্যয় করেন। একজন নারী প্রতিদিন ১২ দশমিক ১টি কাজ করেন। এর বিপরীতে পুরুষ করেন মাত্র ২ দশমিক ৭টি কাজ।  পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, সমাজে নারী-পুরুষের বৈষম্য এখনো প্রকটভাবে বিদ্যমান। নারীদের অর্থনৈতিক অবদান জাতীয় আয়ের হিসাবে অন্তর্ভুক্ত হয় না। এসব কাজকে স্বীকৃতি দিয়ে কীভাবে তা জিডিপি পরিমাপে অন্তর্ভুক্ত করা যায় তা পরিসংখ্যান ব্যুরোকে বের করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সিপিডির সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, যেহেতু নারীর কাজকে অর্থনৈতিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি সেহেতু তার কাজ আনপেইড রয়ে গেছে। এর ফলে এসব কাজ অর্থনীতিতে পরিমাপ করা হয়নি। শেষ পর্যন্ত যা অদৃশ্যই থেকে যায়। ড. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, নারীদের এ অর্থনৈতিক কাজের স্বীকৃতির মধ্য দিয়ে নারীর ক্ষমতায়ন প্রতিষ্ঠিত হবে এবং সমাজ ব্যবস্থা সামাজিক ন্যায্যতার ওপর দাঁড়াবে।

সর্বশেষ খবর