মঙ্গলবার, ১০ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

বাসায় ফিরেই আত্মহত্যা মেধাবী স্কুলছাত্রীর

দিনের পর দিন সীমাহীন উত্ত্যক্ত বখাটেদের ধরতে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

বাসায় ফিরেই আত্মহত্যা মেধাবী স্কুলছাত্রীর

সাথী

বগুড়ার দুপচাঁচিয়ার জিয়ানগরে বখাটে ধরতে গেলে পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। এ সময় তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এ ছাড়া বখাটেরা পুলিশের একটি ওয়্যারলেসও ছিনিয়ে নিয়েছে। গত রবিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে বখাটের উত্ত্যক্তের শিকার হয়ে রোজিফা আকতার সাথী নামে নবম শ্রেণির এক মেধাবী ছাত্রী আত্মহত্যা করে। পুলিশের দল সেই বখাটেকে ধরতে গিয়েই এ ঘটনার শিকার হয়। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, জিয়ানগর মণ্ডলপাড়ার খুদে ব্যবসায়ী গোলাম রব্বানীর মেয়ে সাথীকে একই এলাকার আমিনুল মীরের ছেলে হুজাইফা ইয়ামিন দীর্ঘদিন ধরে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। বিষয়টি ছেলের বাবা ও পরে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে জানালেও ইয়ামিন উত্ত্যক্ত করা থামায়নি। এ অবস্থায় গত রবিবার সকালে সাথী দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদরে প্রাইভেট পড়তে যায়। সেখান থেকে বাড়ি ফেরার পথে ইয়ামিন তার পিছু নেয় এবং উত্ত্যক্ত করতে থাকে। এ ঘটনায় সাথী মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে এবং বাড়ি ফেরার পর বিকালে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। রাত ৮টার দিকে পুলিশ বখাটেকে গ্রেফতার করতে জিয়ানগরের মণ্ডলপাড়ার পার্শ্ববর্তী হেরুঞ্জা গ্রামে অভিযান চালায়। এ সময় পুলিশ সদস্যরা বখাটের বাবা আমিনুল মীরকে পেয়ে আটকের চেষ্টা করলে বখাটে ও তার সহযোগীরা হামলা চালায়। দুপচাঁচিয়া থানার ওসি আবদুর রাজ্জাক জানান, যুবক ইয়ামিনকে আটক করতে গেলে আমিনুল মীরের লোকজনের হামলায় থানার এসআই আবদুর রহিম, এসআই জাকির এবং এএসআই হাফিজ আহত হন। তারা পুলিশের ওয়্যারলেস সেট ছিনিয়ে নেয়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত বখাটের আত্মীয়স্বজনসহ ২৬ জনকে আটক করেছে।

ওসি আরও জানান, স্কুলছাত্রীকে উত্ত্যক্ত ও আত্মহত্যা এবং পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল জলিল মণ্ডল জানান, পুলিশের ওপর হামলার সময় একটি ওয়্যারলেস সেট খোয়া যায়। সেটি উদ্ধারে অভিযান চলছে। জিয়ানগর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল মোতালেব গনি জানান, সাথী তাদের স্কুল থেকে অষ্টম শ্রেণি সমাপনী পরীক্ষায় (জেএসসি) যথারীতি গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। পড়ালেখার প্রতি মেয়েটির খুব আগ্রহ ছিল। বিজ্ঞানের প্রতিটি বিষয়ে সে খুব ভালো নম্বর পেত এবং ক্লাসের ফার্স্ট গার্ল ছিল। প্রতিযোগিতাপূর্ণ বিভিন্ন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সে অনেক প্রতিষ্ঠান থেকে পুরস্কার পেয়েছে। সাথীর মৃত্যুতে শোক জানানোর জন্য গতকাল স্কুলের ক্লাস বন্ধ রাখা হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর