বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুনে মনে হয়েছে, তিনি অপরাধবোধ থেকে নির্বাচনের জয়-পরাজয়ের ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেন, কেন জানি তার মনে হয়েছে, নির্বাচন ঠিক হয়নি। এর একটা ব্যাখ্যা দেওয়া প্রয়োজন। সেই ব্যাখ্যাটিই তিনি ভাষণে দিয়েছেন। গতকাল দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিএনপি কেন নির্বাচনে ভালো করতে পারল না, কেন আওয়ামী লীগ এত ভালো করল। সাধারণত আমরা কী দেখি? একটা নির্বাচনের পর এ ধরনের কথা কেউ আনে না যে প্রতিপক্ষ কেন পরাজিত হলো। বিএনপির ব্যাপারে তিনি অনেক কথা বলেছেন তার চিন্তাভাবনা থেকে। কিন্তু আসল ঘটনাতে কেউ যেতে চাচ্ছে না। ভয়ে মিডিয়াও বলছে না। অন্য সবাইও বলতে ভয় পাচ্ছে। ইতিমধ্যে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম, বিভিন্ন পলিটিক্যাল এরিনা থেকে যেসব বক্তব্য এসেছে,  যেসব রিপোর্ট এসেছে, তাতে প্রমাণিত হয়েছে এই নির্বাচন কোনো নির্বাচনই হয়নি। আসলে এটা জাতির সঙ্গে কঠিন তামাশা হয়েছে। যে কথাটি আমরা বারবার বলেছি। তিনি আরও বলেন, আমার কাছে মনে হয়, এ নির্বাচন বাংলাদেশের একটি বড় রকমের ক্ষতি করে দিয়েছে দীর্ঘস্থায়ীভাবে। এ নির্বাচনের ফলে মানুষের নির্বাচন প্রতিষ্ঠানের ওপর থেকে আস্থা চলে গেছে। নির্বাচন কমিশনের ওপর থেকেও আস্থা চলে গেল। এ নির্বাচনে রাষ্ট্রযন্ত্রগুলোকে ব্যবহার করার ফলে রাষ্ট্রের ওপর থেকেও আস্থা চলে যাচ্ছে মানুষের। বিভিন্ন এজেন্সিকেও ব্যবহার করা হয়েছে। সামগ্রকিভাবে জনগণের প্রতিক্ষপ হিসেবে রাষ্ট্রকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। যেটা আওয়ামী লীগ করেছে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, শুধু আমি নই, দেশের সব ধরনের সচেতন মানুষ মনে করে, এই নির্বাচন কোনো নির্বাচনই হয়নি। যে কারণে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও সব দল নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছে। একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে পুনরায় একটা নির্বাচন দাবি করেছি আমরা। সেই নির্বাচনে জনগণ যেন তাদের রায় দিতে পারে তার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেছি। প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় ঐক্যের ডাক ও বিরোধী দলকে সংসদে যোগদানের আহ্বান সম্পর্কে মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি জাতীয় ঐক্যের যে ডাক দিয়েছেন তা মেনে নেওয়ার কোনো কারণ নেই। নির্বাচনের আগে তিনি যখন আমাদের সঙ্গে সংলাপ করেছেন, তখন তিনি যে কথাগুলো বলেছিলেন সেগুলো কী রাখতে পেরেছেন? একটাও রাখেননি। তিনি বলেছিলেন, কোনো গ্রেফতার ও নতুন কোনো মামলা হবে না। নির্বাচনের একটা ‘লেভেল প্লেয়িইং ফিল্ড’ তৈরি করা হবে। তাও করেননি। তাছাড়া আমরা তো নির্বাচনের ফলাফলই প্রত্যাখ্যান করেছি। সেখানে নতুন করে শপথ নেওয়া বা সংসদে যাওয়ার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। 

জম্ম দিন মানে মৃত্যুদিনের কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া : গতকাল ছিল মির্জা ফখরুলের ৭১তম জম্ম দিন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, বৃদ্ধ মানুষকে জম্ম দিনের কথা বলা মানে তার মৃত্যুর দিন ঘনিয়ে আসছে- সে কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া। এখন জম্ম দিন মানে জীবন থেকে আরও একটা বছর চলে যাওয়া, সেটি মনে করিয়ে দেওয়া।