শুক্রবার, ১৯ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা
কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী

দুর্নীতি-মাদকবিরোধী অভিযান চলবে

প্রতিদিন ডেস্ক

দুর্নীতি, মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ডিসি সম্মেলন শেষে গতকাল সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক সম্মেলনে তিনি সরকারি কর্মকর্তাদের এ নির্দেশনা দেন। খবর বিডিনিউজ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই, দুর্নীতি, মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে। উন্নয়ন প্রকল্পগুলো পরিকল্পিতভাবে নিতে হবে।

দেশকে আমরা দুর্নীতিমুক্ত করতে চাই, দারিদ্র্যমুক্ত করতে চাই। জঙ্গিবাদ সন্ত্রাসের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করতে ও মানুষের জীবনে শান্তি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাই। আমাদের সব কর্ম পরিকল্পনা আমরা সেভাবে গ্রহণ করি।

শেখ হাসিনা বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে যে শুধু অর্থ গ্রহণ করবে সে না, প্রদানকারী এবং গ্রহণকারী উভয়ই সমভাবে দোষী। সেভাবে দেখতে হবে। নিজেদের উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশের উন্নয়নে সরকারি কর্মকর্তাদের কাজ করতে পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আপনারা আপনাদের মেধা দিয়ে এ চাকরিতে এসেছেন। আপনার সেই মেধার উদ্ভাবনী শক্তি দিয়ে দেশকে উন্নয়নের জন্য নতুন নতুন কর্মসূচি কীভাবে নেওয়া যায়, সেটাও আপনাদের চিন্তা করতে হবে এবং সেভাবে কাজ করবেন। কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, জমির স্বল্পতা রয়েছে বলে কৃষি উৎপাদন যেন ব্যাহত না হয়, সেদিকে দৃষ্টি রেখে যথাযথ পরিকল্পনা নিতে হবে। শিল্পায়নের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে জানমালের ক্ষতি যেন না হয়, সেদিকে নজর রাখতেও কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমাদের আরও একটা উৎপাত আছে সেটা মনুষ্য সৃষ্ট দুর্যোগ। সেটা মোকাবিলা আমরা করতে পেরেছি সফলভাবে। ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের অবস্থা সৃষ্টি না হয় সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে। তিনি বলেন, ধারাবাহিকভাবে সরকারে আছি বলেই আমাদের উন্নয়ন কর্মকা গুলো আজ দৃশ্যমান। যার সুফল দেশের মানুষ পেতে শুরু করেছে। আর এ উন্নয়নটা বাস্তবায়নে আপনাদের বিশেষ অবদান রয়েছে, সে জন্য আপনাদের সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। শেখ হাসিনা বলেন, আমি সব সময় চেষ্টা করেছি, যারা কাজ করবে, সে কাজ করবার মতো একটা উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করা। দেশের মানুষকে ভালোবাসতে হবে। দেশের উন্নয়ন করতে হবে। এই চিন্তাটা মাথায় রেখেই সবাই কর্ম ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করতে হবে। আমাদের একটাই লক্ষ্য যে বাংলাদেশ দীর্ঘ ২৪ বছরের সংগ্রাম ও ত্যাগের ফসল, লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা। আমরা চাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এ দেশ গড়ে উঠবে।

অনুষ্ঠানে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম, বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ, সংগঠনের মহাসচিব স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব শেখ ইউসুফ হারুন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

মাছ উৎপাদন বাড়াতে জলাশয়গুলো আগের অবস্থায় আনা হবে : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, তার সরকার মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে জনগণের আমিষের চাহিদা পূরণে দেশের জলাশয়গুলোকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাসস। গতকাল সকালে তিনি রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে (কেআইবি) জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০১৯’র উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এরই মধ্যে আমরা একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি- আমাদের যত জলাশয়, পুকুর, খাল, বিল রয়েছে সেগুলোকে আমরা পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনব। যাতে আমাদের মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি পেতে পারে। পুরস্কার হিসেবে ৮ ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানকে স্বর্ণপদক ও ৫০ হাজার টাকা করে চেক এবং ৯ ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানকে রৌপ্য পদক ও ৩০ হাজার টাকা করে চেক প্রদান করা হয়। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. রইসুল আলম ম ল অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন। একই মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু এবং মৎস্য অধিদফতরের মহাপরিচালক আবু সাইদ মোহম্মদ রাশিদুল হক এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। পরে প্রধানমন্ত্রী কেআইবি প্রাঙ্গণে সপ্তাহব্যাপী জাতীয় ‘মৎস্য মেলা’র উদ্বোধন করেন। মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে দেশের সব জেলায় মেলার আয়োজন করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর