মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

মন্ত্রিসভার বৈঠকে অভিনন্দন যুব ক্রিকেট দলকে

নিজস্ব প্রতিবেদক

আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় বাংলাদেশ যুব ক্রিকেট দলকে অভিনন্দন জানিয়েছে মন্ত্রিসভা। গতকাল মন্ত্রিসভা বৈঠকে এই অভিনন্দন প্রস্তাব গৃহীত হয় বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সংস্কার ও সমন্বয়) শেখ মুজিবুর রহমান। আর সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে দেশে ফেরার পর বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন জাতীয় যুব ক্রিকেট দলকে সংবর্ধনাও দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে বিকালে সচিবালয়ে সংবাদ ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) জানান, দক্ষিণ আফ্রিকায় অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে যুব টাইগাররা বিজয়ী হওয়ায় মন্ত্রিসভার বৈঠকে তাদের অভিনন্দন জানানো হয়। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের সব পর্বে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল অসাধারণ নৈপুণ্য ও বিজয়ের মাধ্যমে একটি পরিপূর্ণ সুসংহত দল হিসেবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছে। এ বিজয় বাংলাদেশকে একটি গৌরবময় এক স্থানে নিয়ে গেছে। মন্ত্রিসভা বলেছে, মুজিববর্ষের সূচনালগ্নে নতুন প্রজন্মের বিশ্বকাপ জয় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা বিনির্মাণে এক অনন্য সংযোজন, এক অসাধারণ অর্জন। মন্ত্রিসভা মনে করে, এ অর্জন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকারের ক্রীড়া উন্নয়নে গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচির ফলপ্রসূতার পরিচায়ক। মন্ত্রিসভা এ-ও আশা করে যে প্রথমবারের মতো এ অর্জন অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে আরও দৃঢ় প্রত্যয়ী করে তুলবে এবং ভবিষ্যতে আরও ভালো ফল আনার ক্ষেত্রে উদ্দীপনা জোগাবে। নিরলস অনুশীলনের মাধ্যমে অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দল একই ধারাবাহিকতায় কাক্সিক্ষত ফলাফল অর্জন করে জাতিকে গৌরবান্বিত করবে বলেও মন্ত্রিসভা আশাবাদ ব্যক্ত করেছে। এদিকে মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে দুপুরে সচিবালয়ে সড়ক মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সড়কমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, যুব বিশ্বকাপে শক্তিশালী ভারতকে পরাজিত করায় বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব ১৯ দলকে অভিনন্দন। স্বাধীনতার পর প্রথমবারের মতো এমন একটি বিজয় এনে দেওয়ার জন্য বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ দলকে সংবর্ধনা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মন্ত্রিসভা বৈঠকের শুরুতে তিনি এ ঘোষণা দেন। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সুবিধামতো সময়ে একটা দিনে এই সংবর্ধনা দেওয়া হবে।

মাদক মামলায় বিশেষ আদালত : মাদকদ্রব্য মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে বিশেষ আদালত গঠনের একটি আইনে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। গতকালের বৈঠকে মাদকদ্রব্য নিযন্ত্রণ (সংশোধন) আইন, ২০২০-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) শেখ মুজিবুর রহমান জানান, মাদক মামলার বিচারে ট্রাইব্যুনাল গঠনের কথা থাকলেও সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে এসব মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য সব জেলা ও মহানগরে বিশেষ আদালত গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ফলে আদালতে বছরের পর বছর ঝুলে থাকা মাদক মামলার সংখ্যা কমে আসবে। কোনো মামলার রায়ের পর হাই কোর্ট বা উচ্চ আদালতে দৌড়ঝাঁপ করতে হবে না।

 তিনি বলেন, অবৈধ মাদক ব্যবসায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে এবং মাদকের নবসৃষ্ট আগ্রাসন বন্ধে ২০১৮ সালের ২৭ অক্টোবর জাতীয় সংসদে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন পাস হয়। পরে একই বছরের ১৪ নভেম্বর এই আইনে রাষ্ট্রপতির সম্মতি দেন। ওই আইনের ৪৪ ধারায় ট্রাইব্যুনাল স্থাপনের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু প্রশাসনিক কারণে বিচার ও আইন বিভাগ থেকে অদ্যাবধি মাদকদ্রব্য অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল স্থাপন বা অতিরিক্ত জেলা দায়রা জজকে তার দায়িত্বের অতিরিক্ত ট্রাইব্যুনালের দায়িত্ব প্রদান করা সম্ভব হয়নি। ফলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ কার্যকরী হওয়ার পরও এ আইনে দায়েরকৃত মামলাসমূহ বিচারের মাধ্যমে নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে জটিলতা সৃষ্টি হয় এবং জুলন্ত মামলার সংখ্যা ক্রমেই বাড়তে থাকে। বর্তমানে এক লাখ ৭৫ হাজারেরও বেশি মামলার জট সৃষ্টি হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব জানান, এমতাবস্থায় এ আইনের আওতায় দ্রুত বিচার কার্য শুরুর লক্ষ্যে ৪৪ ধারার ট্রাইব্যুনালের পরিবর্তে একটি সম্পূর্ণ আদালত গঠনের মাধ্যমে আইনটি সংশোধনের প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়।

তিনি বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, সংশোধন করা হলে এ আইনের অধীন মাদকদ্রব্য অপরাধগুলো অপরাধের গুরুত্ব অনুযায়ী এখতিয়ারসম্পন্ন আদালতে বিচার হবে। সংশ্লিষ্ট দায়রা জজ, মহানগর দায়রা জজ তাদের এখতিয়ার সম্পন্ন এলাকার জন্য কেবল মাদকদ্রব্য অপরাধের বিচারের জন্য এক বা একাধিক আদালত নির্দিষ্ট করতে পারবেন। ফলে মাদক অপরাধের মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হবে। এ ছাড়াও মন্ত্রিসভা গতকাল বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন আইন ২০২০-এর খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে।

সর্বশেষ খবর