চট্টগ্রাম মহানগরীর দেওয়ানহাট এলাকায় দুটি গুদামে বিপুল পরিমাণ তৈরি পোশাক পণ্য পাওয়া গেছে। এই গুদাম দুটি ‘আইয়ুবের গোডাউন’ নামে পরিচিত। চট্টগ্রাম ইপিজেড থেকে এসব পণ্য চোরাই পথে এই গোডাউনে এনে রাখা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এই অবৈধ কাজটি চলে এলেও বন্ড কমিশনারেট বা কাস্টমস গোয়েন্দাদের নজরে আসেনি। তবে স্থানীয় কাউন্সিলর জিয়াউল হক সুমনের এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ থাকলেও তিনিই কৌশলে এসব পণ্য ধরিয়ে দিয়েছেন বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার গভীর রাতে গুদামটি সিলগালা করা হয়। গতকাল সকালে র্যাব, বন্ড কর্মকর্তাদের দলটি গার্মেন্ট পণ্য গণনা করতে গেলে গোডাউনের মালিক এস এম আইয়ুব আলী পালিয়ে যান। পরে তালা ভেঙে সকাল থেকে পণ্য গণনা শুরু হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত দুটি গোডাউনে ১০০ টন গার্মেন্ট পণ্যের সন্ধান মিলেছে। তবে সেগুলোর দাম কত এবং কত টাকা শুল্ক ফাঁকির সঙ্গে জড়িত তার হিসাব বের করতে আজ পর্যন্ত সময় লাগবে। চট্টগ্রাম বন্ড কাস্টমসের অতিরিক্ত কমিশনার মাহফুজুল হক ভূঁইয়া বলেন, র্যাবের তথ্যের ভিত্তিতে গোডাউনের মালিক এস এম আইয়ুব আলী, র্যাব কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম বন্ড কর্মকর্তার উপস্থিতিতে গোডাউন সিলগালা করা হয়। পরে সকালে নির্ধারিত সময়ে গোডাউন খুলতে গেলে আইয়ুব আলী অনুপস্থিত থাকেন। র্যাব কর্মকর্তারা তার বাড়িতে গিয়েও তাকে পাননি। পরে তারা সিলগালা ভেঙে প্রবেশ করেন এবং দিনভর গণনা চলে। তিনি বলেন, ‘গুদাম মালিক অনিয়ম যদি না করতেন তবে তিনি পণ্যের বিপরীতে কাগজপত্র দেখাতেন। কিন্তু সেটি না করে তিনি পালিয়ে গেছেন।’
র্যাব-৭-এর সহকারী পুলিশ সুপার মাশকুর রহমান বলেন, শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনা এসব কাপড়ের গুদামে অভিযান চলছে। এখানে গার্মেন্ট কাপড়ের রোল, তৈরি পণ্য পাওয়া গেছে। এ সময় উপস্থিত একাধিক কর্মকর্তা বলেন, আইয়ুব আলীর ছয়তলা ভবনটি গুদাম বানিয়ে বেশির ভাগ ফ্লোরেই এসব কাপড় রেখেছেন। গুদামে পাওয়া ১০০ টনের বেশি কাপড়ের সবই বিদেশি। কিন্তু সেই পণ্য বন্ডেড সুবিধায় আনা, নাকি বিভিন্ন বন্ড সুুুুবিধায় অবৈধভাবে বের করা, সেটি তদন্তের পর জানা যাবে। তবে আইয়ুব আলীর নামে কোনো বন্ড প্রতিষ্ঠান নেই। একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, চট্টগ্রাম ইপিজেড থেকে এসব গার্মেন্ট পণ্য অবৈধভাবে বের করে আইয়ুব আলীর মতো অনেকের গুদামে রাখা হয়। সেখান থেকে চাহিদা অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়। এসব পণ্য বের করার সঙ্গে চট্টগ্রাম ইপিজেড গেটে কর্মরত কাস্টমস ও বেপজার নিরাপত্তারক্ষীরা জড়িত। তাদের পরস্পরের যোগসাজশেই এসব পণ্য পাচার হয়ে খোলাবাজারে চলে যায়। আর সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারায়।