বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

কেজরিওয়ালের ওপরই ভরসা দিল্লিবাসীর

গৌতম লাহিড়ী, নয়াদিল্লি

কেজরিওয়ালের ওপরই ভরসা দিল্লিবাসীর

ভারতীয় রাজনীতির শক্তিমান নেতা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর ভারতীয় জনতা পার্টিকে (বিজেপি) হারিয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হয়েছে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি- এএপি (আপ)। মোট ৭০ আসনের মধ্যে ৬৩টিতে জিতেছে আপ। ২০১৫ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তারা জিতেছিল ৬৭টি আসনে। এবারের নির্বাচনে ৫৫টি আসনে জয়ের প্রত্যাশার বিপরীতে বিজেপি জয়ী হয় ৭টি আসনে, গতবারের তুলনায় তাদের শুধু ৪টি আসন বাড়ল। ভোটের ফল ঘোষণার পর আপ অফিসের সামনে হর্ষোৎফুল্ল বিপুল জনতার সামনে ভাষণকালে অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, আপ-এর এই সাফল্য ‘নতুন ধরনের রাজনীতি’র জয়ের ইঙ্গিতই দিচ্ছে। দিল্লির জনগণ এই বার্তাই দিল যে, তারা উন্নত স্কুল ব্যবস্থা, মহল্লাভিত্তিক ক্লিনিক স্থাপন, ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ আর বিনামূল্যে পানির পক্ষেই ভোট দেবেন। তিনি বলেন, ‘দেশের জন্য এটা এক বিরাট বারতা।’ কেজরিওয়াল জানান, ওয়াদা অনুসারে একটু পরেই তিনি নগরীর কেন্দ্রস্থলে হনুমান মন্দিরে গিয়ে দেবতা হনুমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। তিনি বলেন, ‘আজ মঙ্গলবার। আজ হনুমানজির দিন। এ দিন তিনি দিল্লির ওপর আশীর্বাদ বর্ষণ করেছেন।’ ভোটাভুটির আগে সরাসরি প্রচারিত এক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিয়াল দেবতা হনুমানের প্রশস্তিমূলক শাস্ত্রবাণী আবৃত্তি করার সময় বিজেপি তাচ্ছিল্যভরে দুয়োধ্বনি দিয়েছিল। বিরোধীদলীয় রাজনীতিকরা আপ-এর বিপুল বিজয়কে বিজেপির বিভেদাত্মক রাজনীতির বিরুদ্ধে শুভশক্তির বিজয় বলে আখ্যায়িত করেছেন। নির্বাচনী প্রচারণাকালে উচ্চমাত্রার মেরুকরণ, সহিংসতার তীব্রতা, ঘৃণাসঞ্চারক বক্তৃতাবাজির উল্লেখ করে পর্যবেক্ষকরা বলছেন, বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইন এবং এনআরসির বিরুদ্ধে দিল্লির শাহীনবাগে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের প্রতিবাদ বিক্ষোভের বিরুদ্ধে জাতীয়তাবাদের অজুহাতে বিজেপির ক্রোধ ভোটারদের আকৃষ্ট করতে পারেনি। ভোটের ফল বলেছে- ‘সত্যিকারের জাতীয়তাবাদ হলো জনকল্যাণে কাজ করা।’ বিজেপির হাই ভোল্টেজ প্রচারণায় এবার মাঠে নেমেছিলেন দলটির ২৭০ জন এমপি, ৭০ জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও রাজ্যভিত্তিক অনেক নেতা। অমিত শাহ তো দোরে দোরে গিয়ে ভোট চেয়েছিলেন। দুই মাসের প্রচারণায় আপ-কে কোণঠাসা করার লক্ষ্যে নেতারা ‘গুল্লি মারো ওদের’ ছাড়া লম্বা লম্বা বুলি কপছিয়েছেন। কেন্দ্রীয় এক মন্ত্রী তো প্রকাশ্যে মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়ালকে ‘সন্ত্রাসী’ বলে গাল দিয়েছিলেন। সবই ব্যর্থ হয়েছে। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে (ইনি বিজেপির সঙ্গে তার ৩৫ বছরের সম্পর্কচ্ছেদ করেছিলেন) বলেন, দিল্লির ভোটের ফল প্রমাণ করেছে, ‘দেশ চলে বাঘা বাঘা লোকের আঙ্গুলের ইশারায় নয়- দেশ চলে জনগণের ইচ্ছায়।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর