বৃহস্পতিবার, ২৭ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

সাবরিনার দুই এনআইডির ব্যাখ্যা চায় দুদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

সাবরিনার দুই এনআইডির ব্যাখ্যা চায় দুদক

চিকিৎসার নামে প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে গ্রেফতার জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরীর নামে দুটি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ বিষয়ে জানতে চেয়ে নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়েছে সংস্থাটি। ইসির সংশ্লিষ্টরা জানান, সাবরিনার দুটি এনআইডি সচলের বিষয়ে দুদক থেকে কমিশনে চিঠি এসেছে। অভিযোগ রয়েছে, সাবরিনার ভিন্ন নম্বরের দুটি এনআইডি রয়েছে এবং দুটোই সচল। তাতে স্বামীর নাম দুটিতে ভিন্ন, জন্ম তারিখও পরিবর্তন করা হয়েছে; সঙ্গে ঠিকানাও।

ইসিকে চিঠি দেওয়ার বিষয়ে গতকাল দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা (পরিচালক) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বলেন, সম্প্রতি ডা. সাবরিনার বিষয়ে দুটি আইডির তথ্য পায় দুদক। এ বিষয়ে জানতে নির্বাচন কমিশনের চিঠি দেওয়া হয়েছে। এ দুদক সূত্রে জানা যায়, নির্বাচন কমিশনের সচিব বরাবর দেওয়া চিঠিতে ডা. সাবরিনার দুটি জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর দিয়ে গত ১৯ আগস্ট চিঠি দেওয়া হয়েছে। বিষয়ে প্রকৃত তথ্য জানতে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছেন অনুসন্ধান কর্মকর্তা উপ-পরিচালক সেলিনা আখতার মনি। তবে এখনো দুদকের কাছে চিঠির জবাব আসেনি।  করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা নিয়ে প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা চৌধুরীকে জেলগেটে গত ২৪ আগস্ট জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। একই ঘটনায় তার স্বামী আরিফুল হক চৌধুরীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। খতিয়ে দেখছে ইসি : দ্বৈত ভোটার হয়ে সাবরিনা দুটি জাতীয় পরিচয় নেওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত হলে সম্পৃক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন সচিব মো. আলমগীর। গতকাল ইসির সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর সাংবাদিকদের জানান, দুর্নীতি দমন কমিশনের চিঠি এসেছে। জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ এ বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রতিবেদন দেবে।

দ্বৈত ভোটারের বিষয়টি যদি প্রমাণিত হয় এবং এর সঙ্গে কমিশনের কোনো কর্মকর্তা কর্মচারীর সম্পৃক্ত পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সংশ্লিষ্টরা জানান, সাবরিনার ভিন্ন নম্বরের দুটি এনআইডি রয়েছে এবং দুটোই সচল। ভোটার তালিকা আইন অনুযায়ী, মিথ্য তথ্য দিয়ে ভোটার হলে অনধিক ছয় মাস কারাদন্ড বা অনধিক দুই হাজার টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে। কোনোভাবেই পুনঃভোটার বা দ্বৈত ভোটার যেন কেউ হতে না পারে, সে বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশনা রয়েছে সংস্থাটির। মিথ্যা তথ্য দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করার অভিযোগ ওঠার পর তদন্ত করে ইতিমধ্যে মোহাম্মদ সাহেদের এনআইডি ‘ব্লক’ করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। জানা গেছে, করোনার ভুয়া মেডিকেল রিপোর্ট প্রস্তুত ও সরবরাহ করে ৮ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়াসহ সাবরিনার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। সরকারি চাকরিতে বহাল থেকে তার স্বামী আরিফ চৌধুরীর সহায়তায় প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে করোনা রোগীদের নমুনা সংগ্রহপূর্বক ১৫,৪৬০টি ভুয়া মেডিকেল রিপোর্ট প্রস্তুত ও সরবরাহ করেছেন তিনি। ডা. সাবরিনা জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের রেজিস্ট্রার ছিলেন। ১২ জুলাই গ্রেফতার হওয়ার পর তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থেকে করোনার ভুয়া প্রতিবেদন দিয়ে আট কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ছাড়াও সাবরিনার অন্যান্য অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধানে মাঠে নামে দুদক। ১৩ জুলাই সাবরিনার বিষয়ে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন।

সর্বশেষ খবর