শুক্রবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে কেমিক্যাল গুদাম সরছে না

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে কেমিক্যাল গুদাম সরছে না

ড. ইফতেখারুজ্জামান

রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে রাজধানীর পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিক গুদাম সরছে না বলে মনে করেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান। গতকাল টিআইবি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করে বলেন, সুশাসনের অভাবে নিমতলী ও চুড়িহাট্টার মতো দুর্ঘটনা ঘটে। টেকনিক্যাল কমিটির সুপারিশ মানছে না সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো। কখনো ট্রেড লাইসেন্স বের করা কঠিন হয়ে পড়লে রাজনৈতিক নেতাদের প্রভাব ব্যবহার করা হয়। আবার রাসায়নিক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত না হয়েও কোনো কোনো রাজনৈতিক নেতা নিজেদের নামে লাইসেন্স বের করে দেন ব্যবসায়ীদের। সংবাদ সম্মেলনে ‘নিমতলী, চুড়িহাট্টা এবং অতঃপর পুরান ঢাকার অগ্নিনিরাপত্তা নিশ্চিতে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ  এবং করণীয়’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করে টিআইবি। প্রতিবেদনে বলা হয়, পুরান ঢাকার চুড়িহাট্টা এলাকায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের পরে গঠিত টেকনিক্যাল কমিটির সুপারিশ অবজ্ঞা করা হচ্ছে। চুড়িহাট্টা অগ্নিকান্ডের পর ট্রেড লাইসেন্সসহ কারখানা ও রাসায়নিক গুদাম স্থাপনে প্রয়োজনীয় লাইসেন্স প্রদান বা নবায়ন বন্ধ থাকলেও অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশে এবং রাজনৈতিক প্রভাব কাজে লাগিয়ে লাইসেন্স বের করার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সিটি করপোরেশনের অসাধু কর্মকর্তাদের পরামর্শে ব্যবসায়ীরা তাদের প্রতিষ্ঠানের নাম থেকে রাসায়নিক শব্দটি বাদ দিয়ে এন্টারপ্রাইজ হিসেবে ট্রেড লাইসেন্স বের করেন। দাহ্য পদার্থ পরিবহন করে গুদাম পর্যন্ত নেওয়া হয় অনেকটা প্রকাশ্যেই। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা তল্লাশি করে অর্থের বিনিময়ে ছেড়ে দেয়। আবাসিক এলাকা ও ভবন এবং বহুতল ভবনে রাসায়নিক পদার্থ মজুদ করা যাবে না। সেই সুপারিশ বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এতে আরও বলা হয়, স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ ও জনপ্রতিনিধিরা এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। সুবিধাভোগী হিসেবে রয়েছেন কিছু বাড়ির মালিক, ব্যবসায়িক সমিতি, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার একাংশ এবং অনেক বড় বড় কোম্পানি যারা পুরান ঢাকা থেকে প্লাস্টিক পণ্য নিয়ে কাজ করেন। চুড়িহাট্টায় আগুন লাগার পরে গঠিত টাস্কফোর্স গুদাম চিহ্নিত করে বন্ধ করে দিতে চাইলে ব্যবসায়ীরা প্রধানমন্ত্রী ও মেয়রের কাছে অভিযোগ করেন। পরবর্তীতে টাস্কফোর্সের কার্যক্রম স্তিমিত হয়ে পড়ে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। প্রতিবেদনে যে কোনো দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের জন্য নীতিমালা প্রণয়ন; নিমতলী ও চুড়িহাট্টা অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে পুনর্বাসন ও পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং রাসায়নিক নিরাপত্তা বিষয়ে নির্দেশিকা ও নীতিমালা প্রণয়নসহ ১০টি সুপারিশ জানায় টিআইবি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর