মঙ্গলবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

আর্থিক সুবিধা পাবে বন্ধ কারখানার বেকার শ্রমিক

প্রধানমন্ত্রীর টেবিলে আরও একটি প্রণোদনা প্যাকেজ

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

রপ্তানিমুখী উৎপাদনশীল শিল্প খাতের কাজ হারানো শ্রমিক এবং আংশিক বা পুরো বন্ধ থাকা কারখানাগুলোকে আর্থিক সুবিধা দিতে আরও একটি নতুন প্রণোদনা প্যাকেজ চূড়ান্ত করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। প্রায় ১ হাজার ১৩৩ কোটি টাকার এই প্যাকেজ প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে।

এই প্যাকেজটি ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং জার্মানির দেওয়া অনুদানের অর্থে বাস্তবায়ন করা হবে। এজন্য তারা দিচ্ছে ১১ কোটি ৩০ লাখ ইউরো। এর মধ্যে ইইউ দিচ্ছে ৯ কোটি ৩০ লাখ, বাকি ২ কোটি ইউরো জার্মানির অনুদান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, অনুদানের প্যাকেজটি এরই মধ্যে চূড়ান্ত করে অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে আজ-কালের মধ্যে সার্কুলার জারি করবে অর্থ বিভাগ।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, এই প্রণোদনা প্যাকেজটি বাস্তবায়ন হবে মূলত তৈরি পোশাক খাত, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য ও পাদুকা শিল্পের জন্য। কভিড-১৯ এর কারণে ক্রয়াদেশ হারিয়ে সংশ্লিষ্ট শিল্প খাতের যেসব কারখানা পুরো বা আংশিক বন্ধ হয়ে গেছে, অথবা কারখান লে-অফের কারণে এসব শিল্প খাতে কর্মরত যেসব শ্রমিক কাজ হারিয়েছেন, বা বেতন পাচ্ছেন না, তাদের সহায়তার জন্য এই প্যাকেজটি বাস্তবায়ন হবে। এরই মধ্যে শ্রম অধিদফতরের মাধ্যমে এ ধরনের কারখানা ও শ্রমিকদের তথ্য সংগৃহীত হয়েছে। সূত্র জানায়, করোনার কারণে চাকরি হারিয়েছেন বা কারখানা লে-অফ হওয়ার কারণে মজুরি পাচ্ছেন না, এমন শ্রমিকদের সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে গত মে মাসে এই প্রণোদনা সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব পাঠায় ইইউ ও জার্মানি। এরপর থেকেই এই প্যাকেজটি কীভাবে বাস্তবায়ন হবে, কারা পাবে সেই বিষয়ে কাজ শুরু করে অর্থ বিভাগ এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। কর্মহীন হওয়া শ্রমিকের তালিকা না থাকা, সঠিক কর্মপরিকল্পনা ও সংজ্ঞায়ন না হওয়া এবং মালিক পক্ষের মতানৈক্যের কারণে এ বিষয়টি চূড়ান্ত করতে তিন মাস সময় পেরিয়ে গেছে। অবশ্য আলোচ্য সময়ে রপ্তানিমুখী শিল্প-কারখানা সচল রাখার পাশাপাশি শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজগুলো বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। করোনাভাইরাসের আর্থিক ক্ষতি কাটাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত এপ্রিলে ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা করেন। এর মধ্যে শিল্পঋণের জন্য ৩০ হাজার কোটি টাকা, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতের ২০ হাজার কোটি টাকা, রপ্তানিমুখী শিল্পের শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়। পাশাপাশি নিম্নআয়ের মানুষ ও কৃষকের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকা, রপ্তানি উন্নয়ন ফান্ড ১২ হাজার ৫০০  কোটি টাকা, প্রি-শিপমেন্ট ঋণ ৫ হাজার কোটি টাকা, গরিব মানুষের নগদ সহায়তা ৭৬১ কোটি টাকা, অতিরিক্ত ৫০ লাখ পরিবারকে ১০ টাকা কেজিতে চাল দেওয়ার জন্য ৮৭৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে শিল্পোদ্যোক্তাদের অনুরোধে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধে প্রণোদনা প্যাকেজটির আর্থিক সুবিধা ও মেয়াদকাল একাধিকবার বাড়ানো হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর