দুর্বৃত্তদের হামলায় গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন দিনাজপুর ঘোড়াঘাট উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানমের শারীরিক অবস্থার প্রায় সব সূচকেই ‘যথেষ্ট উন্নতি’ হয়েছে। তিনি নিজেই খাবার খাচ্ছেন। আর সে কারণে তাকে এইচডিইউ (হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিট) থেকে কেবিনে স্থানান্তর করতে চান চিকিৎসকরা। এ বিষয়ে আজ বুধবার সিদ্ধান্ত নেবে মেডিকেল বোর্ড।
গতকাল রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের নিউরোট্রমা বিভাগের প্রধান ও ওয়াহিদা খানমের চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেলে বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ জাহেদ হোসেন বলেন, আমরা তাকে (ওয়াহিদা খানমকে) এখন বেডে দেওয়ার কথা চিন্তাভাবনা করছি। যেহেতু এখানে কিছু নিরাপত্তার প্রশ্ন আছে, সে জন্য আমরা তাকে আপাতত এইচডিইউতে রেখেছি। বুধবার (আজ) মেডিকেল বোর্ড বসে সিদ্ধান্ত নেবে যে, উনাকে কেবিনে দেওয়া হবে কিনা।
ইউএনওর সর্বশেষ শারীরিক অবস্থার কথা জানিয়ে অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ জাহেদ হোসেন বলেন, যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে তার। তিনি নিজে মুখে খাচ্ছেন। তরল খাচ্ছেন, একটু নরম খাবারও খেতে পারছেন। ওষুধপত্রও মুখে খাচ্ছেন। তার জ্ঞানের মাত্রাও সম্পূর্ণ সুস্থ মানুষের মতো আছে। অন্য অবস্থাগুলোর এখন মোটামুটি ভালো উন্নতি হয়েছে। শুধু (ডান) হাতটা আগের মতোই আছে। হাতের কোনো উন্নতি নেই, কিন্তু ফিজিওথেরাপি চলছে। ফিজিওথেরাপি চলার পরে কতটুকু কী উন্নতি হয়, সেটা সময়ই বলতে পারবে।
এদিকে ইউএনও ওয়াহিদা খানম ও তাঁর বাবা ওমর আলীর ওপর হামলার ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তুলে নিয়ে যাওয়া তিনজনের মধ্যে দুজনকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। গত সোমবার দুপুরে ওই তিনজনকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। এর মধ্যে দুজনকে রাতেই ছেড়ে দেওয়া হয়। ওই তিনজন হলেন- ইউএনওর ওপর হামলার ঘটনায় হওয়া মামলার এজাহারভুক্ত প্রধান আসামি আসাদুল ইসলামের বড় ভাই আশরাফুল ইসলাম, ইউএনওর গাড়ি চালক (উপজেলা ভূমি কার্যালয়ের গাড়িচালক হিসেবে নিযুক্ত) ইয়াসিন আলী (২৮) এবং ইউএনওর বাসভবনের পরিচ্ছন্নতাকর্মী অরসোলা হেমব্রম (৩৬)। এর মধ্যে আশরাফুল ইসলাম এবং অরসোলা হেমব্রমকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গত সোমবার রাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
আশরাফুল ইসলাম ঘোড়াঘাট উপজেলাসংলগ্ন সাগরপুর গ্রামে ফিরে গেছেন বলে জানিয়েছেন তার ছোট বোন রত্না বেগম। আর অরসোলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইউএনওর বাসার আরেক কর্মী সুনীল চন্দ্র। গত বুধবার রাতে উপজেলা পরিষদ ক্যাম্পাসে ইউএনওর বাসার টয়লেটের ভেল্টিলেটর ভেঙে দুর্বৃত্তরা ঢুকে হামলা চালায়। এ সময় ওয়াহিদার বাবা এগিয়ে এলে তাকেও আঘাত করে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। এ ঘটনার প্রধান সন্দেহভাজন যুবলীগের স্থানীয় নেতা আসাদুল ইসলামকে সাত দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।