সোমবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

জনদাবি নিয়ে সরব বাম দল

রুহুল আমিন রাসেল

জনগণের দাবি নিয়ে রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রামে সরব বাম দলগুলো। ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনে বাম দলগুলোর সোচ্চার প্রতিবাদ দেখেছে সাধারণ মানুষ। পাটকল, গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন খাতের শ্রমিকদের দাবি আদায়েও মাঠে সক্রিয় এসব দল। তবে দেশে অনেক বাম দল থাকলেও রাজনীতির মাঠে সক্রিয় কেবল কমিউনিস্ট পার্টি ও বাসদ। তারা ধর্ষণবিরোধী লংমার্চের মতো আন্দোলন করে আলোড়ন তুলেছে। এ ছাড়া জনগুরুত্বপূর্ণ দাবিতে রাজপথে দেখা মিলছে বামদের। যদিও দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগ-বিএনপির বাইরে বৃহত্তর বাম ঐক্যের ডাক দিলেও কার্যকর সে ঐক্য নেই। অধিকাংশ দল ফ্রাইডে পার্টিতে পরিণত হয়েছে। আবার নেতা-কর্মীদের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও গ্রুপিং কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যায়ে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানা গেছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘বামপন্থিরা প্রতিদিন সংগ্রাম করে যাচ্ছে। কিন্তু গণমাধ্যমগুলো সে সংগ্রামের খবর প্রকাশের ক্ষেত্রে কার্পণ্য করে। আমরা বামপন্থিদের ঐক্যের লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছি। সব সময় সরব আছি। জনগণের দুঃখ-কষ্টে সব সময় সরব বামপন্থিরা। কিন্তু বাম দলগুলোর এই সক্রিয়তা কদাচিৎ গণমাধ্যমে আসে।’ তবে বাংলাদেশের সামাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, ‘করোনা সংকটকালে বামদের কর্মকান্ড প্রচারমাধ্যমে এসেছে। ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনের মতো লড়াই-সংগ্রাম বামপন্থিরা করেছে। আমরা যখন যে পরিস্থিতিতে পড়েছি, তখন তেমন আন্দোলনে সক্রিয় ছিলাম। এর কিছু খবর গণমাধ্যমে বড় আকারে এসেছে। এ ক্ষেত্রে বাম গণতান্ত্রিক জোট সক্রিয়। অন্য দলগুলোও ইস্যুভিত্তিক আন্দোলনে মাঠে আছে। তবে বাম দলগুলোর কোন্দল ও গ্রুপিং সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা নেই। কোথাও কোনো ভাঙনের নমুনা এ মুহূর্তে দেখছি না। যদিও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় মতের অমিল হলে তা ভিন্ন বিষয়।’ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘জনজীবনের প্রতিটি ইস্যুতে বামপন্থিরা সামর্থ্যরে সবটুকু দিয়ে রাজপথে সোচ্চার ও সরব রয়েছে, যার স্বীকৃতি গণমাধ্যমে কম। তবে আমাদের সামর্থ্যরে কিছুটা সীমাবদ্ধতা আছে। আমরা টাকার রাজনীতি করি না। ফলে কর্মীরা নিজেদের সীমিত শক্তি ও সামর্থ্য নিয়ে রাজপথে সক্রিয় থাকেন। আছে সাংগঠনিক সীমাবদ্ধতাও। এর পরও দুর্যোগ, নিত্যদিনের সংকট আর মহামারীতে মানুষের ন্যায্য অধিকার আদায়ের প্রশ্নে সবার আগে এগিয়ে আসেন বামপন্থিরা।’ জানা গেছে, দেশের বাম দলগুলোর একটি অংশ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট বেঁধে সংসদে আছে। আর অধিকাংশ বাম দলই নিষ্ক্রিয়। যদিও কমিউনিস্ট পার্টি আর বাসদের নেতৃত্বাধীন কয়েকটি দলের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। কয়েক বছর ধরে বাম জোট রাজনীতির মাঠে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। সর্বশেষ সংসদ নির্বাচনেও জোটবদ্ধভাবে অংশ নেয় বাম দলগুলো। সেই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে বিচ্ছিন্নভাবে ইস্যুভিত্তিক আন্দোলনে সক্রিয় বাম জোট। এ প্রসঙ্গে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী বলেন, ‘বর্তমান সরকার ফ্যাসিবাদী কায়দায় দেশ চালাচ্ছে। আমরা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় উত্তরণে আন্দোলন করছি। জনগণের ঐক্যবদ্ধ বৃহত্তর শক্তি গড়ে তোলার চেষ্টা করছি।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর