তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, যারা আমাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ তারা যখন রাজনৈতিকভাবে আমাদের মোকাবিলায় ব্যর্থ হন, তখন মৌলবাদ উসকে দেওয়া হয়। তখন তারা ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নেন। গুজবের পথ বেছে নেন।
গতকাল দুপুরে রাজধানীর সার্কিট হাউস রোডে তথ্য ভবনে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল পদক প্রদান অনুষ্ঠান, ২০২০-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে পদক প্রদান অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসান, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য মোজাফফর হোসেন পল্টু, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরু, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ও প্রেস কাউন্সিল পদক প্রদানে জুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান ইকবাল সোবহান চৌধুরী এবং বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক ও প্রেস কাউন্সিলের সদস্য নঈম নিজাম।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রেস কাউন্সিলের সদস্য দৈনিক সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মুনীরুজ্জামানসহ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া সাংবাদিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর পদক প্রদান অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাণী পড়ে শোনানো হয়।পদকপ্রাপ্তরা হলেন- গ্রামীণ সাংবাদিকতায় সমকালের সহসম্পাদক জাহিদুর রহমান, উন্নয়ন সাংবাদিকতায় আমাদের সময়ের স্টাফ রিপোর্টার মোহাম্মদ ইউসুফ আরেফীন, নারী সাংবাদিকতায় ফিন্যানশিয়াল এক্সপ্রেসের আরাফাত আরা ও ফটোসাংবাদিকতায় ফিন্যানশিয়াল এক্সপ্রেসের শফিকুল আলম। এ ছাড়া প্রাতিষ্ঠানিকভাবে দুটি পত্রিকাকে পদক দেওয়া হয়। পত্রিকা দুটি হলো দৈনিক করতোয়া ও ফিন্যানশিয়াল এক্সপ্রেস। আজীবন সম্মাননা পান দৈনিক জনকণ্ঠের উপদেষ্টা সম্পাদক তোয়াব খান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. হাছান মাহমুদ আরও বলেন, বাংলাদেশ সব সীমাবদ্ধতা ও প্রতিবন্ধকতা উপড়ে ফেলে এগিয়ে যাচ্ছে। এ কারণে সব সূচকে আমরা পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছি। অর্থনীতি, সমাজ ও মানব উন্নয়নে তাদের পেছনে ফেলেছি। কিছু ক্ষেত্রে আমরা ভারতকেও পেছনে ফেলেছি।
তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান বলেন, জাতি গঠনে সাংবাদিকরা দর্পণের ভূমিকা পালন করছেন। এ করোনাকালে তারা সাহসী ভূমিকা পালন করছেন। এ সময় কাজ করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৪ হাজার সাংবাদিক। মারা গেছেন ৩৮ জন সাংবাদিক।
আবদুল মতিন খসরু বলেন, সাংবাদিকরা সম্মুখযোদ্ধা। এটা শুধু পেশাই নয়, একটা বড় নেশা। আগে যারা সাংবাদিকতা করতেন তারা ছিলেন মেধাবী ও দক্ষ। সাংবাদিকরা স্বাধীন, দৃঢ়চেতা। তারা কখনো টাকায় বিক্রি হন না। এখনো অনেক মেধাবী ছেলেমেয়ে সাংবাদিকতায় আসছে। তাদের পাশে প্রেস কাউন্সিলকে থাকতে হবে।
মোজাফফর হোসেন পল্টু বলেন, বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলকে আরও আধুনিকায়ন করতে হবে। সাংবাদিকতায় বস্তুনিষ্ঠতা থাকতে হবে। হলুদ সাংবাদিকতায় জাতির উন্নয়ন হয় না। সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়।
জুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশ হয়েছে বলেই আমরা সাংবাদিক হতে পেরেছি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো তাঁর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সাংবাদিকবান্ধব। তিনি সাংবাদিকদের কল্যাণে অনেক কাজ করছেন।
সভাপতির বক্তব্যে বিচারপতি মোহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, করোনাকালে বাংলাদেশেই সবচেয়ে বেশি সাংবাদিককে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। দিল্লি থেকে এক সাংবাদিক আমাকে ফোনে জানিয়েছেন, একমাত্র বাংলাদেশেই সাংবাদিকদের প্রণোদনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।