শুক্রবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

গজব থেকে রক্ষা পেতে অমানবিক কর্মকাণ্ড বন্ধ করুন : হেফাজত

নিজস্ব প্রতিবেদক

স্বনামখ্যাত আলেমরা এক যুক্ত বিবৃতিতে বিগত ২৬, ২৭ ও ২৮ মার্চ-উত্তর পরিস্থিতি প্রসঙ্গে অভিযোগ করেন যে দেশের আলেম-ওলামাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও মানহানিকর আচরণ করা হচ্ছে। বিবৃতিতে বলা হয়, এতে মনে হচ্ছে- আলেম-ওলামারা ভিনদেশি নাগরিক। এ পরিস্থিতি চলতে থাকলে কেউ আল্লাহর পাকড়াও থেকে রেহাই পাবে না। বিবৃতিতে ‘আল্লাহর গজব থেকে রক্ষা পেতে অমানবিক কর্মকান্ড’ বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয়েছে। ওলামারা গত বুধবার বিকালে এক টেলিকনফারেন্সে মতবিনিময় শেষে এই বিবৃতি দেন। বিবৃতিতে তারা বলেন, নিরীহ মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষকদের ওপর অন্যায়ভাবে গুলি চালিয়ে শহীদ করা এবং শত শত নিরপরাধ মানুষকে জীবনের তরে পঙ্গু করে দিয়ে  আবার তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে গ্রেফতার ও হয়রানি করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, আমিরে হেফাজত আল্লামা হাফেজ জুনায়েদ বাবুনগরীকে নতুন করে মিথ্যা হত্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে। হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজীজুল হক ইসলামাবাদী, মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী, মাওলানা ইলিয়াছ হামিদী, মুফতি শরীফুল্লাহ ও মুফতি বশিরুল্লাহসহ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে চারজন, ভোলায় সাতজন, সিলেটে সাতজন, গাজীপুরে চারজন, নরসিংদীতে একজনকে ডিবি অফিসে হয়রানি ও গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করা হচ্ছে। বিবৃতিতে তারা তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ওলামা-মাশায়েখসহ দেশবাসী গভীরভাবে উদ্বিগ্ন ও উৎকণ্ঠিত। আল্লাহ পাক কোনো জালেমকে ছেড়ে দেন না। আল্লাহর গজব থেকে রক্ষা পেতে হলে এসব অমানবিক কর্মকান্ড বন্ধ করুন। তারা আরও বলেন, বর্তমান সরকার দলীয় প্রশাসন ভিন্ন মতাবলম্বীদের জন্য দেশটাকে একটি কারাগারে পরিণত করে রেখেছে। কোনো সম্মানী ব্যক্তিদের ইজ্জত সম্মানের তোয়াক্কা করছে না। দেশের সাধারণ মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা নেই। এভাবে একটি সভ্য জাতি মানসম্মান নিয়ে টিকে থাকতে পারে না। সুতরাং আমরা পরিষ্কার বলে দিতে চাই, এদেশের মানুষের আস্থার প্রতীক, আদর্শ ও শান্তিপ্রিয় সমাজ বিনির্মাণের চালিকা শক্তি ওলামায়ে কেরামের ওপর জেল-জুলুম নির্যাতন বন্ধ করুন। মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করুন। অন্যায়ভাবে গ্রেফতারকৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি দিন। শত শত আহত রোগীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করুন। নিহতদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করুন। তাহলে দেশ জাতি ও সরকারের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে। অন্যথায় এই পবিত্র মাহে রমজানে মজলুমদের আহাজারিতে আল্লাহর আরশ কেঁপে উঠবে এবং আল্লাহর গজব থেকে কেউ রেহাই পাবেন না। ওলামারা আরও বলেন, পবিত্র মাহে রমজানের পবিত্রতা রক্ষা ও এ মাসের অপরিসীম ফজিলত লাভের আশায় দেশ ও জনগণের কল্যাণ কামনায় মসজিদগুলো তারাবিসহ সব ইবাদতের জন্য উন্মুক্ত করে দিন, কোরআনে কারিমের তিলাওয়াতের জন্য মক্তব-হিফজখানাসমূহ খুলে দিন। এসব দাবি মেনে নেওয়ার জন্য তারা বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। আল্লাহ পাক করোনা নামক মহামারী থেকে দেশবাসীকে হেফাজত করুন। বিবৃতিতে সম্মতিদানকারী উলামায়ে কেরামরা হলেন- আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী, আল্লামা সালাহ উদ্দীন নানুপুরী, আল্লামা ইয়াহইয়া হাটহাজারী, আল্লামা হাফেজ তাজুল ইসলাম, আল্লামা নূরুল ইসলাম জিহাদী, আল্লামা আতাউল্লাহ হাফিজ্জী, আল্লামা আবদুল হামিদ পীর সাহেব মধুপুর, আল্লামা আবুল কালাম, আল্লামা আবদুল আউয়াল, আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক বারিধারা, আল্লামা আবদুর রব ইউসুফী, আল্লামা মুফতি মোবরক উল্লাহ, আল্লামা সাজেদুর রহমান, আল্লামা নুরুল ইসলাম খান দরগাহপুর মাদরাসা, আল্লামা মহিউল ইসলাম বুরহান (মুহতামিম রেঙ্গা মাদরাসা), আল্লামা মাহফুজুল হক, ড. আহমদ আবদুল কাদের, অ্যাডভোকেট শাহীনুর পাশা চৌধুরী, আল্লামা জুনায়েদ আল হাবীব, মাওলানা ফজলুল করীম কাসেমী, মুফতি মনীর হোসাইন কাসেমী বারিধারা, মাও. হাবীবুল্লাহ মিয়াজী, মাও. নাসীরুদ্দীন মুনীর, মাও. মীর ইদ্রিস, মাও. আহমদ আলী কাসেমী, মাও. জালালুদ্দীন আহমদ, মাও. আতাউল্লাহ আমিন, মাও. আবদুল কুদ্দুস মানিকনগর, মাও. জসীম উদ্দীন, মাও. মুজিবুর রহমান হামিদী, মাওলানা মুছা বিন আজহার, মুফতি ছাখাওয়াত হোসাইন রাযী, মাও. ইউনুছ রংপুর, মাও. ইসমাইল নুরপুরী, মুফতি আবদুর রহীম, মাও. মোহাম্মাদুল্লাহ জামী, মুফতি মাসউদুল করীম, মাওলানা যাকারিয়া নোমান ফয়যী ও মুফতি আজহারুল ইসলাম প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর