আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক উপকমিটি থেকে বাদ পড়া হেলেনা জাহাঙ্গীরকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। গত রাত সোয়া ৮টা থেকে টানা চার ঘণ্টা গুলশানের বাসভবনে তল্লাশি অভিযান শেষে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার শেষে রাত সোয়া ১২টায় র্যাব জানিয়েছে, হেলেনা জাহাঙ্গীরের বাসা থেকে বিদেশি মদ, মুদ্রা, হরিণের চামড়া, বিদেশি অসংখ্য ছোরা এবং ক্যাসিনো সামগ্রী উদ্ধার করা হয়েছে। রাত সোয়া ১২টায় হেলেনা জাহাঙ্গীরকে গাড়িতে তুলে হেডকোয়ার্টার্সে নিয়ে যায় র্যাব। গুলশান থানায় তার বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে। এ ছাড়া তার আইপি টিভি জয়যাত্রা কার্যালয়েও অভিযান চালানো হবে বলে র্যাবসূত্র জানিয়েছেন। এর আগে রাত সোয়া ৮টায় র্যাবের একটি টিম হেলেনা জাহাঙ্গীরের গুলশান-২ নম্বরের ৩৬ নম্বর রোডের বাসায় যায়। অভিযানের শুরুতেই হেলেনা জাহাঙ্গীর র্যাব সদস্যদের দেখে অঝরে কাঁদতে থাকেন। র্যাব ভবনের পঞ্চম তলায় হেলেনার বাসায় তল্লাশি শুরু করে। রাত সাড়ে ১০টায় র্যাবের নারী সদস্যসহ অতিরিক্ত সদস্য ওই বাসায় প্রবেশ করেন। এ সময় বাসার মূল ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়। সাংবাদিকদের ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। অভিযান শেষে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে বের করে নিয়ে আসে র্যাব। এর আগে বারবার দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে এফবিসিসিআইর সাবেক পরিচালক হেলেনা জাহাঙ্গীরকে আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক উপকমিটির সদস্যপদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক উপকমিটির সদস্যপদ থেকে গত রবিবার হেলেনা জাহাঙ্গীরকে অব্যাহতি দিয়ে আনুষ্ঠানিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তিতে উপকমিটির সদস্যসচিব ও আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ সই করেন। এতে বলা হয়, হেলেনা জাহাঙ্গীর আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক উপকমিটির সদস্য ছিলেন। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত তার সাম্প্রতিক কর্মকান্ড সংগঠনের নীতিবহির্ভূত হওয়ায় আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক উপকমিটির সদস্যপদ থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। জয়যাত্রা গ্রুপের কর্ণধার হেলেনা জাহাঙ্গীর নিজেকে আইপি টিভি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি হিসেবেও পরিচয় দেন। সম্প্রতি ফেসবুকে ‘বাংলাদেশ আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ’ নামে একটি সংগঠনের সভাপতি হিসেবে হেলেনা জাহাঙ্গীরের নাম আসে। সে কারণেই তাকে উপকমিটির পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক। ‘চাকরিজীবী লীগ’ নামে সংগঠনটির পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, তারা দু-তিন বছর ধরেই আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন হিসেবে অনুমোদন পাওয়ার চেষ্টা করছে। তবে আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, সংগঠনটির সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো সম্পর্ক নেই।