শনিবার, ২৯ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

দক্ষতা দেখাতে না পারলে আন্দোলন হয়

এ কে আজাদ চৌধুরী

দক্ষতা দেখাতে না পারলে আন্দোলন হয়

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এ কে আজাদ চৌধুরী বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য একাডেমিক ও প্রশাসনিক প্রধান। উপাচার্যের পদটি একাডেমিক ও প্রশাসনিকের চেয়েও বেশি ‘ম্যানেজারিয়াল (ব্যবস্থাপনার)’। একজন উপাচার্যকে সবকিছু ম্যানেজ করতে হয়। কিন্তু ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে দক্ষতা দেখাতে না পারলে তাঁর বিরুদ্ধে আন্দোলন হয়। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি। এ কে আজাদ চৌধুরী আরও বলেন, অনেক ক্ষেত্রে উপাচার্যদের এমন প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিতে হয় যা আপাতদৃষ্টিতে খুব পপুলার মনে হয় না। কিন্তু ক্যাম্পাসের বৃহৎ স্বার্থে ‘আনপপুলার ডিসিশন’ও নিতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সঙ্গে উপাচার্যের দৃষ্টিভঙ্গির মিল না-ও থাকতে পারে। এটি ছাত্রদের মধ্যেও সংক্রমিত হতে পারে। তখন ছাত্ররা সামান্য অনিয়ম দেখলেও প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠে। ছাত্ররা কখনো কখনো রাষ্ট্রযন্ত্রের বিরুদ্ধেও প্রতিবাদে ঝুঁকে পড়ে। ছাত্রছাত্রীরা সব সময় আদর্শিক অবস্থানে থাকে। ক্যাম্পাসের বাস্তবতা তাদের অবস্থানের সঙ্গে না-ও মিলতে পারে। এ আদর্শিক অবস্থানের জায়গা থেকেও শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদমুখর হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সাবেক এই চেয়ারম্যান বলেন, উপাচার্যরা ক্যাম্পাসের স্বার্থে অনেক সময় হার্ডলাইনে চলে যান। উপাচার্যের কোনো কোনো যৌক্তিক সিদ্ধান্তও শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ভালোভাবে নেন না। তখন ছাত্র-শিক্ষকদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়। উপাচার্যদের নিয়োগ কোনো কোনো সময় লবিং, দলীয় বিবেচনায় দেওয়া হয়, তাঁদের অনেকে হয়তো প্রশাসনিক দক্ষতা দেখাতে পারেন না। তখন যৌক্তিক কারণেও উপাচার্যদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ তৈরি হয়। পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু ছাত্র প্রতিবাদমুখর থাকবে এটি অস্বাভাবিক নয়। তবে মাঝেমধ্যে ক্যাম্পাসের বাইরে থেকেও ইন্ধন জোগানোর অভিযোগ পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অবস্থান শক্ত হওয়া উচিত। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ছাত্র সংগঠনের নেতারা আক্রমণ করলে পরিস্থিতি বিরূপ হয়ে যায়। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এভাবেই উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। প্রক্টরিয়াল বডি পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ প্রশাসনের সহায়তা চেয়েছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় তো কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জায়গা। এখানে পুলিশের ভূমিকা বা আচরণ ব্যতিক্রম হওয়া উচিত। পুলিশের লাঠিচার্জ, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ ছাত্রদের উত্তেজিত করেছে। ছাত্ররা সব দোষ উপাচার্যের ওপর চাপিয়েছে। এই শিক্ষাবিদ বলেন, দলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে সব সময় উপাচার্য নিয়োগ হয়ে আসছে। নতুন সরকার এলে উপাচার্য পরিবর্তন হওয়ার কথা নয়, কিন্তু হয়ে যায়। একে অনেক সময় সমাজ ও ছাত্রছাত্রীরা ভালোভাবে নেয় না।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর