রবিবার, ৮ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

দুই বাস ও ট্রাকের ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত ৭, আহত ২০

নাটোর প্রতিনিধি

দুই বাস ও ট্রাকের ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত ৭, আহত ২০

নাটোরে দুর্ঘটনায় দুমড়েমুচড়ে যাওয়া বাস -বাংলাদেশ প্রতিদিন

নাটোরের বড়াইগ্রামে দুই বাস ও একটি ট্রাকের ত্রিমুখী সংঘর্ষে সাতজন নিহত ও কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল সকাল ১১টার দিকে মহিষভাঙ্গা এলাকায় গাজী অটো রাইস মিলের সামনে বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কে রাজশাহীগামী ন্যাশনাল পরিবহন ও ঢাকাগামী সিয়াম পরিবহন এবং থেমে থাকা একটি ট্রাকের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষ ঘটে। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা থেকে ন্যাশনাল পরিবহনের একটি বাস রাজশাহী অভিমুখে যাচ্ছিল। বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কের মহিষভাঙ্গা এলাকার গাজী অটো রাইস মিলের সামনে পৌঁছলে ন্যাশনাল বাসটি সামনে থাকা অপর একটি বাসকে অতিক্রম করার সময় বিপরীত দিক থেকে আসা সিয়াম পরিবহন নামের অপর একটি বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ সময় সিয়াম পরিবহন ছিটকে গাজী অটো রাইস মিলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা খায়। ন্যাশনাল পরিবহনও মহাসড়কের পাশের গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে নেমে যায়। এতে ন্যাশনালের চার যাত্রী ও সিয়ামের দুই যাত্রী ঘটনাস্থলেই মারা যান। উভয় বাসের সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এসময় অন্তত ২০ জন যাত্রী আহত হন। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে বনপাড়া হাইওয়ে থানা, বড়াইগ্রাম থানা ও বনপাড়া ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। আহত যাত্রীদের বনপাড়া, নাটোর ও রাজশাহীর বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়। দুপুর ১২টার দিকে দুর্ঘটনায় আহত মোহনা আক্তার মিলি (২৬) নামে এক যাত্রীকে বনপাড়ার আমেনা হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। তিনি নাটোরের লালপুর উপজেলার ওয়ালিয়া গ্রামের রুহুল আমিনের স্ত্রী। অন্য নিহতরা হলেন- কাউছার রহমান (১৭), সাদিয়া আক্তার (১৩),  আলমগীর হোসেন (৪৮), মোহনা আক্তার মিলি (২৬), মিজানুর রহমান (৩০), মশিউর রহমান (২৫) ও আবদুল জলিল (২৬)।

রাজশাহী থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, নাটোরে দুর্ঘটনায় আহত বাসের সুপারভাইজার রবিউল ইসলাম (৩৮) তার বাঁ হাত হারিয়েছেন। তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি সিয়াম পরিবহনের বাসের সুপারভাইজার। রবিউলের বাড়ি রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার ঝলমলিয়ার সেনবাগ গ্রামে। তার বাবার নাম মো. আলী। দুর্ঘটনার পর তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তার সঙ্গে আছেন স্ত্রী সাজেদা বেগম, ছোট ভাই মো. হানিফ, ফুফাতো ভাই নুরুল আমিনসহ কয়েকজন।

ফুফাতো ভাই নুরুল আমিন বলেন, তিনি নাটোরের দিকে যাওয়ার পথে জানতে পারেন রবিউলকে আহত অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হচ্ছে। পরে তিনি সরাসরি হাসপাতালে চলে আসেন। দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষের সময় রবিউলের বাঁ হাতটি কেটে পড়ে যায়। পরে তাকে নাটোরের বনপাড়ার আমেনা ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। রাজশাহী নিয়ে আসার পর তার অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। রবিউলের ছোট ভাই মো. হানিফ বলেন, তারা দুই ভাই। তার ভাইয়ের আরিফ হোসেন (৫) ও আবদুল বারী (৩) নামে দুই ছেলে আছে। রবিউল পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর