শুক্রবার, ২০ মে, ২০২২ ০০:০০ টা
র‌্যাবের ব্রিফিং

প্রশ্নপত্র ফাঁসে শিক্ষক খুনি সমাজসেবী

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের চারজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। এদের মধ্যে একজন শিক্ষক, একজন কম্পিউটার অপারেটর, একজন সমাজসেবী এবং একজন একটি হত্যা মামলার আসামি।

এ চারজন সরকারি-বেসরকারি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করতেন এবং সমাধান দিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিতেন।

গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান সংস্থার আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেন, আগামীকাল (আজ) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এ জন্য প্রতারক চক্র তাদের তৎপরতা বৃদ্ধি করে। র‌্যাবও এ বিষয়ে নজরদারি বাড়ায়। বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের হোতা ইকবাল হোসেন এবং তার তিন সহযোগী রমিজ মৃধা, নজরুল ইসলাম ও মোদাচ্ছের হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চক্রের সদস্যরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সরকারি-বেসরকারি চাকরিপ্রত্যাশীদের খুঁজে বের করে ১০-১৫ লাখ টাকার বিনিময়ে পরীক্ষায় পাস করানো এবং চাকরি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলতেন। আগ্রহী পরীক্ষার্থীদের ডিজিটাল ডিভাইস দেওয়া হতো এবং তাদের কাছ থেকে প্রাথমিকভাবে এক-দুই লাখ টাকা জামানত নেওয়া হতো। অবশিষ্ট টাকা চাকরি পাওয়ার পর পরিশোধ করবে মর্মে চুক্তি করা হতো। এভাবে তারা কয়েক বছর ধরে বিপুলসংখ্যক চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। প্রতারণার জন্য বিদেশ থেকে আনা ডিজিটাল ডিভাইস দুটি অংশে বিভক্ত। ডিভাইসটির একটি অংশ ইয়ার পিস। এটি পরীক্ষার্থীদের কানের ভিতর সেট করা হয়। আরেক অংশে থাকে গোপন ফোন। এটি শরীরের কোনো এক স্থানে বিশেষ কায়দায় লুকিয়ে রাখা হয়। পরীক্ষার্থীরা প্রশ্নপত্রের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে তাদের কাছে পাঠান। প্রতারক চক্রের সদস্যরা প্রশ্নের উত্তর চুক্তিবদ্ধ পরীক্ষার্থীদের সরবরাহ করেন।

র‌্যাব জানায়, চক্রটির হোতা ইকবাল হোসেন ২০০৮ সালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। নিজ এলাকায় শিক্ষকতা করার সময় ২০১৫ সালে একই এলাকার অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী আলতাফ হোসেনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। আলতাফ আগে এ প্রতারণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। করোনা মহামারির সময় আলতাফ হোসেন মারা গেলে ইকবাল হোসেন চক্রটি পরিচালনা শুরু করেন।

সর্বশেষ খবর