রবিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা
সিপিডির নাগরিক সম্মেলন

দূরত্ব জনপ্রতিনিধি ও জনগণে

নিজস্ব প্রতিবেদক

দূরত্ব জনপ্রতিনিধি ও জনগণে

সত্যিকারের নির্বাচন হলে ইশতেহারের গুরুত্ব থাকত।  এখন জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে জনগণের যোগাযোগ নির্বাচনের আগেও  হয় না, পরেও হয় না। যার কারণে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় জনসংযোগের প্রয়োজন পড়ে না। নতুন সংস্কৃতি চালু হয়েছে। সংসদ সদস্যরা মুখের চেয়ে হাত-পা বেশি ব্যবহার করেন (মারধর)। বিশেষ করে শিক্ষকদের ওপর। জনগণ তাদের চাওয়া-পাওয়া সরকারের কাছে তুলে ধরার উপযুক্ত মাধ্যম খুঁজে পাচ্ছেন না। গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত নাগরিক সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে সিপিডি পরিচালিত ‘জাতীয় উন্নয়নে অঙ্গীকার : শিক্ষা, শোভন কর্মসংস্থান, জেন্ডার সমতা’ শীর্ষক প্রকল্পের ফলাফল তুলে ধরা হয়। এই প্রকল্পে আওয়ামী লীগের ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে শিক্ষা, শোভন কর্মসংস্থান ও লিঙ্গ সমতা সংক্রান্ত প্রতিশ্রুতিগুলোর বাস্তবায়ন নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়। ওই ইশতেহার নিয়ে জনগণের মনোভাব জানতে ১৫টি জেলায় ৯০টি উঠান বৈঠকের আয়োজন করে সিপিডি। এসব বৈঠকে ৯১৮ জন অংশ নেন। এ ছাড়া রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রামে আঞ্চলিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান  নিজের  এলাকার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, তৃণমূলের মানুষের চাহিদার সঙ্গে সংলাপে উঠে আসা মতামতের মিল খুঁজে পাননি তিনি। জনপ্রতিনিধিরা দলের নির্বাচনী ইশতেহারের পাশাপাশি স্থানীয় মানুষের সঙ্গে এক ধরনের মৌখিক অঙ্গীকার করেন। জনগণ সবচেয়ে বেশি চান সামাজিক ভাতা কার্ড, খাবার পানির ব্যবস্থা, স্যানিটেশন, এলাকায় রাস্তা, কালভার্ট ও কর্মসংস্থানের সুযোগ। আগে বিদ্যুতের চাহিদা থাকলেও এখন সেটি নেই। তোফায়েল আহমেদ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ইশতেহার যদি কথার কথা হয়, তাহলে সেটি করা না করা একই।  নির্বাচনের তিন দিন আগেও ইশতেহার করা হচ্ছে। অথচ ইশতেহার নির্বাচনের আগে আলোচনার মাধ্যমে এক বছর ধরে তৈরি হওয়া উচিত। ওইসব প্রক্রিয়া দেশে নেই। সত্যিকারের নির্বাচন হলে ইশতেহারের গুরুত্ব থাকত। দলের গঠনতন্ত্রও কথার কথা। অথচ দলই দেশ চালাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘এখন নির্বাচনের আগেও জনগণের যোগাযোগ হয় না, পরেও হয় না। এখন নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় জনসংযোগের প্রয়োজন হয় না। নতুন সংস্কৃতি চালু হয়েছে, সংসদ সদস্যরা মুখের চেয়ে হাত-পা বেশি চালান। বিশেষ করে শিক্ষকদের ওপর।’ খুশী কবির বলেন, সবকিছু সহ্য করার মানসিকতায় পরিবর্তন ঘটাতে হবে। সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে হবে।  জনপ্রতিনিধিরা তাঁদের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য।

ফাহমিদা খাতুন বলেন, ইশতেহারের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলো জনগণের প্রতি তাদের রাজনৈতিক অঙ্গীকারের একটি ধারণা দেয়। ইশতেহার আইনগত দলিল না হলেও এর গুরুত্ব রয়েছে। ২০২৩ সালে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য সিপিডির এ তথ্যগুলো নির্দেশনামূলক হতে পারে।

 

 

সর্বশেষ খবর