থাইল্যান্ডে শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রে ঢুকে হামলাকারী প্রথমেই চার-পাঁচ জন কর্মীকে গুলি করেন। এরপর একটি তালাবদ্ধ কক্ষে ঢুকে ঘুমন্ত শিশুদের ওপর নির্বিচার গুলি চালান। গুলির শব্দ শুরুতে মানুষ আতশবাজি ভেবেছিলেন।
বিবিসি অনলাইনে গতকাল এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার থাইল্যান্ডে ঘটে যাওয়া ওই ঘটনার মর্মস্পর্শী বিবরণ দিয়েছেন শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রের শিক্ষকসহ প্রত্যক্ষদর্শীরা। থাইল্যান্ডের ওই শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রে সাবেক পুলিশ কর্মকর্তার হামলায় ৩৭ জন নিহত হন। এ ঘটনায় কেন্দ্রে থাকা ২৪ শিশুর মধ্যে ২৩ শিশুই নিহত হয়। শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রের প্রধান শিক্ষক নান্থিচা পুঞ্চুম বলেন, শিশুদের ঘুমের জন্য পাঠিয়ে তিনি দুপুরের খাবার খেতে যাচ্ছিলেন। ঠিক এমন সময় তিনি পরপর পাঁচটি গুলির শব্দ শুনতে পান। তিনি বলেন, এই কেন্দ্রে সাধারণত ৯২ জন শিশু থাকে। বাস না পাওয়া ও বৃষ্টির কারণে আটকা পড়ায় হামলার সময় ২৪ জন শিশু ছিল। এদের মধ্যে মাত্র একটি শিশু বেঁচে আছে। তিনি বলেন, ‘এমন ঘটনা ঘটবে, তা কোনো দিন স্বপ্নেও ভাবিনি...এরপর কী করতে হবে, তা জানি না। এই মুহূর্তে কোনো কিছুই ভাবতে পারছি না।’ শিশুরা ঘুমাচ্ছিল দেখে শিক্ষকরা প্রধান দরজা বন্ধ করেছিলেন। কিন্তু ওই হামলাকারী বাইরে যেখানে গাড়ি পার্ক করে রেখেছিলেন, সেখানে কেন্দ্রের কয়েকজন কর্মী খাচ্ছিলেন। তাদের লক্ষ্য করেও গুলি চালান হামলাকারী। এতে সেখানে থাকা চার কর্মী নিহত হয়েছেন। এরপরই তিনি দরজা ভেঙে শিশুদের ঘরে ঢুকে এলোপাতাড়ি হামলা চালাতে থাকেন। শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রের একজন শিক্ষক বলেছেন, হামলাকারীর হাতে বন্দুক ও ছুরি ছিল। নিহতদের মধ্যে দুই বছরের কম বয়সী শিশুও ছিল। তিনি বলেন, তিনি আতশবাজির মতো গুলির শব্দ শুনছিলেন। মেঝেতে তার দুই সহকর্মীকে পড়ে থাকতে দেখেছেন। এরপর হামলাকারী তার দিকে এগোতে থাকেন। এ সময় তিনি অন্য সহকর্মীদের একটি কক্ষে দ্রুত ঢুকতে বলেন। ওই কক্ষের দরজা বন্ধ করে তারা সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে থাকেন। শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রের পাশেই কর্মরত জেলা কর্মকর্তা জিদাপা বুনসোম বলেন, ‘সবাই খুব ভয় পেয়েছিলাম। বিষয়টি গুলির শব্দ বোঝার পরেই সবাই লুকানোর জন্য ছোটাছুটি করতে থাকে।’ ঘটনাস্থল থেকে পাবিনা পুরিচান নামের একজন শিক্ষক পালাতে পেরেছিলেন। তিনি বলেন, ওই হামলাকারীকে ছুরিসহ অন্য এক চালককে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যেতে দেখেছেন। রাস্তায় ওই হামলাকারী ইচ্ছা করেই অন্যদের ধাক্কা দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। চারদিকে রক্ত ছড়িয়েছিল। এসব দেখে তিনি হামলাকারীর কাছ থেকে সরে গেছেন।