রবিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

যেভাবে খুন হন স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা তানু

বাগেরহাট প্রতিনিধি

প্রতিপক্ষ দলের সন্ত্রাসীদের গুলিতে বাগেরহাট জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরে আলম তানু ভুঁইয়া (৩৭) নিহতের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহতের পরিবার ও বিএনপি নেতারা আওয়ামী লীগকে দায়ী করেছে। গতকাল দুপুরে বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে লাশের ময়নাতদন্তের পর বিকালে শহরের পুরান বাজার ও বাসাবাটী এলাকায় দুই দফা জানাজা শেষে বিকালে তানু ভুঁইয়াকে শহরের সরুই সরকারি কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

এ হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে চার দিনের কর্মসূচি দিয়েছে জেলা বিএনপি। এই ঘটনায় গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। পাশাপাশি পুলিশও কোনো অভিযুক্তকে আটক করতে পারেনি। নিহত নুরে আলম তানু ভুঁইয়া বাগেরহাট শহরের বাসাবাটির মৃত আবদুর রউফ ভুঁইয়ার ছেলে। তার স্ত্রী ও তাসমিম (৯) নামে এক মেয়ে রয়েছে।

নিহত তানু ভুঁইয়ার স্ত্রী কানিজ ফাতেমা রাখি ও বড় ভাই সেলিম ভুঁইয়াসহ পরিবারের সদস্যরা জানান, শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে শহরের বাসাবাটি বগা ক্লিনিকের দিকে যায় তানু। এর কিছু পরেই পরপর কয়েকটা গুলির শব্দ শোনা যায়। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ যুবলীগের ফরিদ, সন্ত্রাসী আলআমিন, মনি, রাতুল ও সিরাজুলসহ কয়েকজন তানু ভুঁইয়াকে পর পর তিনটি গুলি করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। রাজনৈতিক কারণেই এই হত্যাকান্ড ঘটেছে বলে দাবি করেছেন তারা। বাগেরহাট জেলা হাসপাতাল মর্গে লাশের ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকরা বলেছেন, নিহত তানু ভুঁইয়ার বুকে দুটি ও নাভির কাছে একটি গুলি লাগায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে। শনিবার দুপুরে বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে লাশের ময়নাতদন্তের পর বিকালে শহরের পুরান বাজার ও বাসাবাটি এলাকায় দুই দফা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় কেন্দ্রীয় বিএনপির সহপ্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামিমুর রহমান, বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ জেলা বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের শত শত নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন। বাগেরহাট জেলা পুলিশের মিডিয়া সেলের প্রধান পুলিশ পরিদর্শক এস এম আশরাফুল আলম জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও মাদক বেচাকেনা নিয়ে প্রতিপক্ষ ফরিদের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হয়েছেন সাবেক স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা তানু ভুঁইয়া। নিহত তানু ভুঁইয়াও চিহ্নিত সন্ত্রাসী ছিলেন। তার নামে মাদক, বিস্ফোরক ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে ১১টি মামলা রয়েছে। সন্ত্রাসী দলনেতা ফরিদও বাগেরহাট শহরের একই এলাকার টুটুল শেখের ছেলে। ফরিদের নামে হত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধে পাঁচটি মামলা রয়েছে। সন্ত্রাসী ফরিদকে আটক করতে রাত থেকে পুলিশের একাধিক দল জেলা ও জেলার বাইরে কাজ করছে। এদিকে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোজাফ্ফর রহমান আলম সন্ধ্যায় জানান, ‘আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীদের হাতে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা তানু ভুঁইয়া নিহতের প্রতিবাদে জেলা বিএনপি চার দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। রবিবার জেলা বিএনপি ও তার অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের কালোব্যাচ ধারণ, প্রতিবাদ মিছিল, সোমবার জেলা সদরে বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের বিক্ষোভ মিছিল, মঙ্গবার জেলার সব উপজেলায় স্বেচ্ছাসেবক দল বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ, বুধবার জেলা বিএনপি অফিসে নিহত স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা তানু ভুঁইয়ার আত্মার শান্তি কামনায় দোয়া মাহফিল করা হবে বলে জানান এই বিএনপি নেতা।

সর্বশেষ খবর