মঙ্গলবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

টানটান উত্তেজনা

ডেটলাইন ১০ ডিসেম্বর, বিএনপির সমাবেশের স্থান নিয়ে কাটেনি জটিলতা

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

১০ ডিসেম্বর রাজধানী ঢাকায় বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে টানটান উত্তেজনা চলছে দলের ভিতরে-বাইরে। সরকার বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে দিতে চায়। কিন্তু বিএনপি চায় নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে রাজপথে। সরকার বলছে, নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ হলে সড়কে ভোগান্তি বাড়বে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হলে লোক-সমাবেশ বাড়বে, জনগণের ভোগান্তি হবে না। এ পরিস্থিতিতে এখন পর্যন্ত পুলিশের পক্ষ থেকে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়া সম্ভব হয়নি। এ প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপকমিশনার (ডিসি-মিডিয়া) মো. ফারুক হোসেন বলেন, নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি। তিনি বলেন, নিরাপত্তার বিষয়টা বিবেচনা করলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ভালো হয়। এ প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, অনুমতি না পেয়েও ১০ ডিসেম্বর রাজধানীর নয়াপল্টনে সমাবেশ করলে বিএনপির বিরুদ্ধে সরকার কঠোর ব্যবস্থা নেবে। তিনি বলেন, সরকার সৎ উদ্দেশ্যে তাদের (বিএনপি) সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুমতি দিতে চেয়েছিল। কিন্তু তারা অসৎ উদ্দেশ্যে নয়াপল্টনে সভা করতে চায়।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ১০ ডিসেম্বর ঢাকার অন্য কোথাও নয়, নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনেই গণসমাবেশ হবে। বাধা না দিয়ে পল্টনের সমাবেশ আয়োজনের জন্য ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

জানা যায়, ১০ ডিসেম্বর নিয়ে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। ১০ ডিসেম্বর ঘিরে গেল কয়েক মাস ধরেই শিরোনাম। উত্তাপ-উত্তেজনা এই বাড়ে তো, এই কমে। কী ঘটবে সেদিন? কী ঘোষণা দেবেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সমাবেশটিও বা হবে কোথায়? শান্তিপূর্ণ সমাবেশ, না সংঘাত। সরকারি দলের ভূমিকাই বা হবে কী? নানা আলোচনা। শুরুটা করেছিলেন, আমানউল্লাহ আমান। বলেছিলেন, ১০ ডিসেম্বরের পর দেশ চলবে খালেদা জিয়ার কথায়। এরপরই শুরু হয় বিতর্ক, বাহাস। পরে অবশ্য পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়ে আসে, যখন বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়, ঢাকায় শুধু সমাবেশই করবে দলটি। অবস্থান কর্মসূচি বা অন্য কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে এতেও উত্তাপ ঠিক চলে যায়নি। তবে ঢাকার প্রতিটি ওয়ার্ডে এবং প্রবেশ পথে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা সতর্ক অবস্থানে থাকবেন- এমনটাই বলা হয়েছে। সমাবেশের আগে-পরে আওয়ামী লীগ এবং দলটির সহযোগী সংগঠনগুলোর সম্মেলনসহ নানা কর্মসূচি রয়েছে। অন্যদিকে, বিএনপি তার ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি লোকসমাগম করতে চায় ওই দিন। বিএনপি সমাবেশ থেকে সরকারের প্রতি চূড়ান্ত আলটিমেটাম দিতে পারে। ঘোষণা করা হতে পারে যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচি। এ নিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে কয়েক মাস ধরেই সমমনা দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। বিএনপি সমাবেশের অনুমতি পাবে কি না এ নিয়ে যখন নানা আলোচনা চলছিল তখন বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল গণমাধ্যমকে জানান, বিএনপি কিছু শর্তে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১০ ডিসেম্বর সমাবেশের অনুমতি পারে। আমরা বলছি, একটা বড় কোনো জায়গায় যান। তাদের সর্বশেষ একটা দাবি ছিল যে, তারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ চায়। আমাদের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়ার জন্য আমরা কমিশনারকে বলে দিয়েছি। আমাদের প্রধানমন্ত্রীরও নির্দেশনা তাই। এ ব্যাপারে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গতকাল দলীয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বলেন, আগামী ১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনেই গণসমাবেশ হবে। আমরা তো সব সময় এখানেই শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করে আসছি। এখানে গণসমাবেশ করতে কোনো সমস্যা দেখি না। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গণসমাবেশ হলে নেতা-কর্মীরাও স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। এ সময় প্রচার উপকমিটির আহ্বায়ক মীর সরাফত আলী সপু, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সদস্য সচিব প্রকৌশলী আশরাফ উদ্দিন বকুল, প্রচার উপকমিটির নেতা আ ক ম মোজাম্মেল হকসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন। 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর