মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
ভেন্যু নিয়ে বাড়ছে উত্তেজনা

৩ সহস্রাধিক গ্রেফতার অভিযোগ বিএনপির

নিজস্ব প্রতিবেদক

সারা দেশে বিএনপির ৩ হাজারের বেশি নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নতুন করে আরও শতাধিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে পুরনো মামলাতেই বেশির ভাগ গ্রেফতার দেখানো হচ্ছে। ৩০ নভেম্বর রাত থেকে গতকাল পর্যন্ত পাঁচ দিনে উল্লিখিত সংখ্যক নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। কেন্দ্রীয় নেতা থেকে ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের বাসা-বাড়িতেও সাঁড়াশি অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। অনেক নেতা-কর্মীকে বাসায় না পেয়ে তাদের মা-বাবা, স্ত্রী-সন্তান, আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দুর্ব্যবহারসহ ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে। রবিবার রাতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের বাড়ি ঘেরাও করে রাখে ও দলের যুগ্ম মহাসচিব অসুস্থ হাবিব-উন নবী খান সোহেলের বাসায় অভিযান চালানো হয়েছে। তাকে বাসায় না পেয়ে তার স্ত্রীর বড় ভাই অরাজনৈতিক ব্যক্তি আবদুর রহমান সোহেলকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ। এ ছাড়া উচ্চ আদালতের নির্দেশে জামিনে থাকা নেতা-কর্মীদের জামিন নিম্ন আদালত থেকে গণহারে বাতিল করা হচ্ছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় দফতর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। দলের কেন্দ্রীয় সহদফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদসহ আরও কয়েকজন সিনিয়র নেতার জামিন বাতিল করেছে নিম্ন আদালত। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদের নামে ২০১২ সালের ১২ সেপ্টেম্বর দায়ের করা রাজধানীতে সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ি ভাঙচুরের একটি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন মেজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন তার বিরুদ্ধে এ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। অন্যদিকে রাজধানীর মতিঝিলে ২০২০ সালে গাড়ি পোড়ানোর একটি মামলায় গতকাল বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। এ ছাড়া ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশকে কেন্দ্র করে জঙ্গি ধরার নামে ঢাকাসহ সারা দেশে আবাসিক হোটেল, মেস ও বাসাবাড়িতে পুলিশ গ্রেফতার অভিযান শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, তার নেতৃত্বাধীন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির কমিটিসহ বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের ৬ শতাধিক নেতা-কর্মীকে পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এর মধ্যে মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আক্তার হোসেন, রেজাউর রহমান ফাহিম, বনানী থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাচ্চুসহ বিভিন্ন স্তরের কমিটির নেতারা রয়েছেন। এ ছাড়াও আদাবর থানা থেকে ১১ জন নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, মহানগর উত্তর বিএনপির এলাকা থেকে সাড়ে তিন শতাধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে যুগ্ম আহ্বায়ক ইউনূস মৃধা, মোশাররফ হোসেন খোকন, আবদুস সাত্তারসহ বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মী রয়েছেন।

দেশব্যাপী এই গ্রেফতার ও মিথ্যা মামলা দায়েরের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অবিলম্বে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা এসব বানোয়াট ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ গ্রেফতার নেতা-কর্মীদের মুক্তি দাবি করেছেন।

সর্বশেষ খবর