মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
ভেন্যু নিয়ে বাড়ছে উত্তেজনা

বাসা ঘেরাও করে দমানো যাবে না : আব্বাস

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘বাসাবাড়ি ঘেরাও করে জনগণের আন্দোলন দমানো যাবে না। সরকার ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে হামলা-মামলা ও গ্রেফতারের মাধ্যমে যতই ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করুক না কেন, তাতে আমাদের নেতা-কর্মীরা ভীত নয়। যে কোনো ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড মোকাবিলা করেই বিএনপি শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করবে।’ গতকাল রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, দক্ষিণ আহ্বায়ক আবদুস সালাম, বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, বিএনপি নেতা মীর সরাফত আলী সপু, রফিকুল আলম মজনু, ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাঈফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

১০ ডিসেম্বরের সমাবেশের স্থান প্রসঙ্গে মির্জা আব্বাস বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাইরে বিকল্প কোনো স্থানের প্রস্তাব এলে সেটা বিবেচনায় নেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘বিকল্প স্থান যদি আমাদের কাছে সন্তোষজনক মনে হয়, যদি নিরাপদ মনে হয়, সে ক্ষেত্রে বিবেচনা করা হবে। এ মুহূর্তে বিকল্প নাম বলা যাচ্ছে না। নয়াপল্টনে আমাদের সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত আছে।’ স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সারা দেশে বিভাগীয় সমাবেশে ছাড় দেওয়া হলেও ঢাকায় সমাবেশে কোনো ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ছাড় দেওয়া হবে না। কিন্তু বাংলাদেশ কাউকে ইজারা দেওয়া হয়নি। ওবায়দুল কাদের তো এখন প্রলাপ বকছেন। ছাড় দেওয়ার কী আছে। এ ছাড়া ছাড় দেওয়ার উনি কে?’ তিনি বলেন, ‘সারা দেশে আমরা বিভাগীয় সমাবেশ করেছি শান্তিপূর্ণভাবে। ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিভাগীয় সমাবেশও শান্তিপূর্ণভাবে করব। সেই সমাবেশে আমাদের পরবর্তী কার্যক্রমের হয়তো ঘোষণা আসতে পারে।’ বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপি দলীয় কার্যক্রম করতে পারছে না। লিফলেট বিতরণ করতে পারছে না। বাধা দেওয়া হচ্ছে পদে পদে।

সমাবেশ সফলের আহ্বান : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ১০ ডিসেম্বরের দিকে শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বের মানুষ তাকিয়ে আছেন। সমাবেশ যে কোনো মূল্যে আমাদের সফল করতে হবে। আজকে আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। সামনে অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। এ অবস্থায় মামলা-হামলা, গ্রেফতার উপেক্ষা করে আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে। গতকাল বিকালে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ উপলক্ষে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের (বিএসপিপি) সঙ্গে মতবিনিময় করে বিএনপি। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।

মির্জা ফখরুল বলেন, সারা দেশে মানুষ জেগে উঠেছে। বিএনপির বিগত নয়টি বিভাগীয় গণসমাবেশে লাখ লাখ মানুষ অংশগ্রহণ করেছেন। নদী সাঁতরিয়ে, হেঁটে, সাইকেলে চড়ে, চিড়া-মুড়ি-গুড় নিয়ে সমাবেশে অংশ নিয়েছেন। মানুষ দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব পুনরুদ্ধার, বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা এবং তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার আন্দোলনে শরিক হয়েছেন। তিনি বলেন, পরিবর্তনের এই আন্দোলনে পেশাজীবীদের এগিয়ে আসতে হবে। সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে আমাদের আন্দোলন বেগবান করতে হবে। অতীতে পেশাজীবী ও বুদ্ধিজীবীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন, বর্তমানেও রাখবেন।

বিএসপিপির আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব কাদের গনি চৌধুরীর পরিচালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, পেশাজীবী নেতাদের মধ্যে অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, প্রকৌশলী আখতার হোসেন, অধ্যাপক ড. সদরুল আমিন, অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, ড. মামুন আহমেদ, অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, ডা. মো. রফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. মো. মোর্শেদ হাসান খান, প্রকৌশলী আশরাফ উদ্দিন বকুল প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর