বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা
বিচারকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার

নীলফামারী জেলা বার সভাপতিসহ তিন আইনজীবীকে তলব

নিজস্ব প্রতিবেদক

এবার বিচারকের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগে নীলফামারীর জেলা আইনজীবী সমিতির (জেলা বার) সভাপতি মো. মোমতাজুল হকসহ তিনজনকে তলব করেছেন হাই কোর্ট। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি সশরীরে হাজির হয়ে আদালতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি, আইন-আদালতের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন এবং বিচারকের সঙ্গে অপেশাদারিত্বমূলক আচরণ ও দুর্ব্যবহারের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। অন্য দুই আইনজীবী হলেন- মো. আজহারুল ইসলাম ও ফেরদৌস আলম।

নীলফামারীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) গোলাম সারোয়ারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে আদালত অবমাননার দায়ে তাদের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘটনা নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই নীলফামারীর বিষয়টি নতুন করে সামনে এলো।

এর আগে গত ২৯ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল বরাবর নীলফামারীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) গোলাম সারোয়ার চিঠি পাঠান। পরে সেই চিঠি রেজিস্ট্রার জেনারেল প্রধান বিচারপতির কাছে উপস্থাপন করেন। গত ৩ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি অভিযোগটি হাই কোর্ট বিভাগের বিচারপতি জে বি এম হাসানের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে উপস্থাপনের নির্দেশ দেন। তার ধারাবাহিকতায় গতকাল বিষয়টি হাই কোর্টের কার্যতালিকায় ওঠার পর আদেশ দেওয়া হয়।

বিচারকের ওই চিঠিতে বলা হয়, গত ২৮ নভেম্বর নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনের এক মামলায় আসামিদের জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। এ আদেশ ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই ওই মামলার নিয়োজিত আইনজীবী মমতাজুল হক, মো. আজহারুল ইসলাম, ফেরদৌস আলমসহ তাদের অপরাপর সহযোগী আইনজীবীরা অত্যন্ত মারমুখী হয়ে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে এজলাসের টেবিল চাপড়িয়ে বিকট শব্দে বিচারকের প্রতি বিরূপ উক্তি উচ্চারণ এবং হামলার চেষ্টা করে।

তারা হুমকি দিয়ে বলেন, ‘জামিন দিয়ে নেমে যা, স্যরি বল, চাকরি করার দরকার নেই, বাড়ি গিয়ে বসে থাক, কোথা থেকে পড়াশোনা করেছো, আইন-কানুন জানো না, নীলফামারীর বার খুবই ভয়ংকর, এর আগে অনেক বিচারককে পিটিয়ে এখান থেকে তাড়িয়েছি, কোথা থেকে এসেছো, এসেই উল্টাপাল্টা আদেশ দাও।’

এজলাসের অবস্থা বেগতিক দেখে বিচারক তাদের সঙ্গে কোনো তর্কে না জড়িয়ে তাৎক্ষণিক এজলাসের কার্যক্রম মুলতবি রেখে খাস কামরায় চলে যান। তখনো আইনজীবীরা বিচারককে খারাপ ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন।

সর্বশেষ খবর