রবিবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

চমেকে চার ছাত্রকে নির্যাতনে তোলপাড়

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) ২০২১ সালের ৩০ অক্টোবর ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে মারাত্মক আহত হন তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাহাদি জে আকিব। এ ঘটনার পরই ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু নিষিদ্ধ সময়ের মধ্যেই চলছে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার অপরাজনীতি। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ডেকে নিয়ে চমেকের প্রধান       ছাত্রাবাসে কথিত ‘টর্চার সেলে’ নির্যাতন করেন চার ছাত্রকে। এ নিয়ে তৈরি হয় নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া। প্রশ্ন উঠে নিষিদ্ধ ক্যাম্পাসে কেমন করে রাজনীতি চলে, কেমন করে ছাত্র নির্যাতন করে। তাছাড়া এ ঘটনায় কেউ থানায় অভিযোগ বা মামলাও করেননি। অভিযোগ আছে, গত বৃহস্পতিবার চার ছাত্রকে নির্যাতনকারীরা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী। এর মধ্যে আকিবের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে কলেজ থেকে বহিষ্কৃৃত ছাত্রও আছেন। কিন্তু বহিষ্কৃতরাই আবার হলের সিট দখল করে সেখানে ছাত্রদের নির্যাতন করছেন। এসব ঘটনায় কর্তৃপক্ষের অবহেলার অভিযোগও তোলা হয়। জনস্বাস্থ্য অধিকার রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব ডা. সুশান্ত বড়ুয়া বলেন, ক্যাম্পাসে রাজনীতি বন্ধ নাকি খোলা, সেটা বিবেচ্য নয়। গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো, সেখানে সুষ্ঠু-সুন্দর একাডেমিক পরিবেশ বজায় আছে কি না, সুষ্ঠু সংস্কৃতি ও সুস্থ বিনোদন চর্চা এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ আছে কি না। কর্তৃপক্ষকে এসব বিষয় নিশ্চিত করতে হবে। জানা যায়, গত বুধবার রাত ১২টা থেকে বৃহস্পতিবার ভোর ৪টা পর্যন্ত চমেকের ৬২তম ব্যাচের চতুর্থ বর্ষের (নতুন) শিক্ষাথী জাহিদ হোসাইন ওয়াকিল, সাকিব হোসেন, এম এ রায়হান ও মোবাশি^র হোসেন শুভ্রকে কথিত ‘টর্চার সেলে’ নিয়ে শিবির সন্দেহে রাতভর নির্যাতন করে। এর মধ্যে জাহিদ হোসাইন ওয়াকিল ও সাকিব হোসেনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চমেক হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। অপর শিক্ষার্থী রায়হানকে কুমিল্লা এবং মোবাশি^রকে নারায়ণগঞ্জে পাঠানো হয়েছে। ছাত্রলীগের অভিজিৎ দাশের নেতৃত্বে পর্যায়ক্রমে তাদের ডেকে ডেকে নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ আছে। ঘটনার পর ছাত্রাবাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।  চমেকের অধ্যক্ষ ডা. সাহেনা আক্তার বলেন, গতকাল কলেজের একাডেমিক কমিটির মিটিং হয়েছে। সেখানে ঘটনাটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বৈঠকে  প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনে কলেজের অভিযোগ নিষ্পত্তি কমিটিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রায় দেড় বছর ধরে ক্যাম্পাসে রাজনীতি বন্ধ। এর মধ্যেও কিছু ছাত্র নামধারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটিয়েছে। তাই বিষয়টির মূল উৎস খুঁজে বের করতে কমিটিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। চকবাজার থানার ওসি মনজুর কাদের মজুমদার বলেন, চমেকে সংঘটিত ঘটনায় আহত কোনো ছাত্রই অভিযোগ বা মামলা করতে আসেননি। মামলা হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। তবে ক্যাম্পাস বর্তমানে স্বাভাবিক আছে।

সর্বশেষ খবর