শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

হাসপাতালে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা

নিজস্ব প্রতিবেদক

আবারও হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করালেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। গতকাল বিকালে বসুন্ধরায় এভারকেয়ার হসপিটালে নিয়মিত স্বাস্থ্য

পরীক্ষার অংশ হিসেবে বেশ কয়েকটি পরীক্ষা করান তিনি। পরীক্ষার পর সন্ধ্যায় গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’য় ফিরে যান।

বেগম জিয়া বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে একটি সাদা রঙের গাড়িতে চড়ে হাসপাতালে পৌঁছান। স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে বাসার উদ্দেশে হাসপাতাল ছেড়ে যান। রাত সাড়ে ৮টার দিকে তিনি ফিরোজায় পৌঁছানোর পর সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। অধ্যাপক জাহিদ জানান, নতুন কোনো অসুস্থতা বা স্বাস্থ্যের অবনতি নয়, ‘রুটিন চেকআপ’-এর জন্য চেয়ারপারসনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তাঁর বেশ কয়েকটি পরীক্ষা করা হয়েছে। মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা এ টেস্টগুলোর রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর পর্যালোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত দেবেন। ২০২২ সালের ২৮ আগস্ট স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সর্বশেষ এভারকেয়ার হসপিটালে গিয়েছিলেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। ফিরোজা থেকে এভারকেয়ারের উদ্দেশে রওনার সময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সেখানে উপস্থিত ছিলেন। খালেদা জিয়ার গাড়িবহরের সঙ্গে অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনসহ খালেদার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার ও গৃহকর্মী ফাতেমা হাসপাতালে যান। এভারকেয়ার পৌঁছালে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানান। চেয়ারপারসন হাসপাতালে যাবেন- এ খবর পেয়ে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা আগে থেকেই এভারকেয়ার অঙ্গন ও বাইরে ভিড় জমান। গুলশানের বাসভবন থেকে খালেদা জিয়াকে বহনকারী গাড়িটি বের হলে দলীয় নেতা-কর্মীরা তাঁর গাড়ির সামনে ও পেছনে অবস্থান নিয়ে হাসপাতাল পর্যন্ত ছুটে যান। নেতা-কর্মীর ভিড়ের কারণে খালেদা জিয়াকে বহনকারী গাড়িটির হাসপাতালে প্রবেশে বেশ বেগ পেতে হয়। এ সময় দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগরী উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, যুগ্মমহাসচিব হাবিব-উন নবী খান সোহেল, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ইসলাম রিংকু, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম সাত্তার, চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসউদ্দিন দিদার ও শায়রুল কবির খান, ঢাকা মহানগরী উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক (স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান) আতাউর রহমান হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন। এর আগে একটানা ১৩ দিন হাসপাতালে থাকার পর গত বছরের ২৪ জুন বাড়িতে ফিরেছিলেন খালেদা জিয়া। তখন তাঁর হার্টে একটি রিং পরানো হয়েছিল। চিকিৎসকরা তাঁর হার্টে আরও দুটি ব্লক ধরা পড়ার কথা জানিয়েছিলেন সে সময়। ২০২১ সালের এপ্রিলে তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। এরপর একই বছরের জুন পর্যন্ত তাঁকে পাঁচ দফায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে তিনি আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানান জটিলতায় ভুগছেন। গত বছর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তাঁর পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণ এবং লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার কথাও জানান চিকিৎসকরা। বেগম খালেদা জিয়া দুদকের দায়ের করা দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালে কারাগারে গিয়েছিলেন। দেশে করোনা মহামারি শুরুর পর পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ কয়েকটি শর্তে তাঁকে নির্বাহী আদেশে ‘সাময়িক মুক্তি’ দেয় সরকার। তারপর কয়েক দফা তাঁর দণ্ডাদেশ স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানো হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর