রবিবার, ১৯ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

পুতিন যুদ্ধাপরাধ করেছেন : বাইডেন

প্রতিদিন ডেস্ক

পুতিন যুদ্ধাপরাধ করেছেন : বাইডেন

যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) সদস্য না হলেও রুশ প্রেসিডেন্ট প্রশ্নে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ওই আদালতের রায়কে সমর্থন করেছেন। আইসিসি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলে বাইডেন সায় মিলিয়ে বলেন, ‘পুতিন স্পষ্টতই যুদ্ধাপরাধ করেছেন এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) তার বিরুদ্ধে যে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে- তা ন্যায্য।’ সূত্র : রয়টার্স, বিবিসি, আলজাজিরা। পুতিনকে ইঙ্গিত করে সাংবাদিকদের বাইডেন বলেন, ‘আমার মনে হয় গ্রেফতারি পরোয়ানা ন্যায্য। কিন্তু বিষয় হচ্ছে, আমরা বা রাশিয়া কেউই ওই আদালতকে স্বীকৃতি দেইনি, কিন্তু আমি মনে করি এই পরোয়ানা একটি শক্তিশালী পয়েন্ট দাঁড় করিয়েছে।’ প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, শিশুদের বেআইনি নির্বাসন এবং ইউক্রেনের নাগরিককে তাদের ভূখণ্ড থেকে রাশিয়ান ফেডারেশনে বেআইনিভাবে স্থানান্তরের অভিযোগে স্থানীয় সময় গত শুক্রবার পুতিনের বিরুদ্ধে এই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আইসিসি।

একই অভিযোগে রাশিয়ার শিশু অধিকার কমিশনার মারিয়া লভোভা-বেলোভার বিরুদ্ধেও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। উল্লেখ্য, রাশিয়াও আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) সদস্য নয় এবং দেশটি এই আদালতকে স্বীকৃতিও দেয়নি। এদিকে এ রকম রায়ের পর প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা তার টেলিগ্রাম চ্যানেলে বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সিদ্ধান্তগুলো আমাদের দেশের জন্য কোনো অর্থ বহন করে না। রাশিয়া আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের রোম আইনের পক্ষে নয় এবং এর অধীনে কোনো বাধ্যবাধকতা রাশিয়ার নেই।’ পাশপাশি ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাকে ‘টয়লেট পেপার’-এর সঙ্গে তুলনা করেছেন সাবেক রুশ প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ। এ ছাড়া ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রির পেসকভ গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘আমরা একে (রায়কে) আপত্তিকর ও অগ্রহণযোগ্য মনে করি। রাশিয়া ও অন্যান্য দেশ আদালতের এই নির্দেশকে স্বীকৃতি দেয় না। আইনের দৃষ্টিতে এটি অন্তঃসারশূন্য।’ এদিকে এসব ঘটনা প্রেসিডেন্ট পুতিনের গ্রেফতারি পরোয়ানায় কোনো প্রভাব ফেলবে কিনা- সে প্রশ্নে আইসিসি বলেছে, ‘এটি অপ্রাসঙ্গিক।’ তবে গ্রেফতারি পরোয়ানা দেওয়ার সময় আদালতের প্রেসিডেন্ট পিওতর হফমানস্কি বলেন, ‘আইসিসির সদস্য দেশগুলোয় ভ্রমণের সময় রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনকে গ্রেফতার করা যেতেই পারে।’ আবার আইসিসির চিফ প্রসিকিউটর করিম খান বলেছেন, ‘পুতিন যতদিন ক্ষমতায় আছেন, ততদিন তাকে কাঠগড়ায় নিয়ে আসার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।’ মামলাটি প্রমাণসহ সাজানোর প্রয়োজন আছে বলেও মনে করেন তিনি।

পুতিনকে গ্রেফতার কি সম্ভব : দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলমান ইউক্রেন যুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে পুতিনের বিরুদ্ধে আইসিসির গ্রেফতারি পরোয়ানাকে মানবাধিকার সংগঠনগুলো সাধুবাদ জানালেও ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় তার বিচারের সম্ভাবনা খুবই কম। কেননা, আইসিসি কোনো ক্ষমতাসীন রাষ্ট্রপ্রধানকে গ্রেফতার বা আদালতে আনার ক্ষমতা রাখে না। তাই কোনো অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা না গেলে তার শুনানি কখনই হবে না। এ প্রসঙ্গে বিবিসির বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, এই মুহূর্তে রাশিয়ায় এমন কেউ নেই যিনি প্রেসিডেন্ট পুতিনের হাতে কড়া পরানোর ক্ষমতা রাখেন। তবে নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মস্কো আইসিসির নির্দেশকে উপেক্ষা করলেও সন্দেহ নেই যে, এই পরোয়ানার কারণে পশ্চিমের দেশগুলোয় পুতিনের গ্রহণযোগ্যতা আরও অনেক কমে যাবে। এমনকি, এটি তার বিদেশ ভ্রমণ সীমিত করে দেবে।

সর্বশেষ খবর