ভারতের জাতীয় কংগ্রেস দলের সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধীর লোকসভা (সংসদের নিম্নকক্ষ) সদস্য পদ খারিজ করা হয়েছে। লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা শুক্রবার এতে তাঁর সম্মতি দেন। সুরাটের আদালতে ফৌজদারি মানহানি মামলায় বৃহস্পতিবার রাহুল গান্ধীকে দোষী সাব্যস্ত করে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ভারতের সংবিধান এবং নির্বাচন আইন অনুযায়ী কেউ দুই বছরের জন্য কারাদণ্ডে দোষী সাব্যস্ত হলে সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর সংসদ বা বিধানসভা সদস্য পদ বাতিল হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে লোকসভা সচিবালয় থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে ঘোষণা করা হয়, ‘কেরালার ওয়েনাড় থেকে নির্বাচিত রাহুল গান্ধীর সংসদ সদস্য পদ খারিজ হয়ে গেল।’ নিয়ম রয়েছে, একবার সংসদ সদস্য পদ খারিজ হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি পরবর্তী ছয় বছর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। সে হিসেবে রাহুল গান্ধী ২০২৯ সাল পর্যন্ত লোকসভায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। এর মধ্যে উচ্চ আদালত যদি ভিন্ন রায় দেন তাহলে অন্য কথা। জাতীয় কংগ্রেসেরে মুখপাত্র জয়রাম রমেশ জানিয়েছেন, কংগ্রেস দল উচ্চ আদালতে আপিল করবে। ১৯৫১ সালের নির্বাচনী জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ৮ ধারার ৩ উপধারা অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি দুই বছর বা তার বেশি কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে তাঁর সাংসদ বা বিধায়ক পদ সঙ্গে সঙ্গেই খারিজ হয়ে যাবে। শুক্রবার সকালে রাহুল গান্ধী লোকসভায় গিয়েছিলেন। কিন্তু প্রবল শোরগোলে অধিবেশন পণ্ড হয়ে যায়। তারপরই লোকসভা সচিবালয় রাহুলের সদস্য পদ খারিজ করে আদেশ জারি করে। সুরাটের আদালত কারাদণ্ড দিলেও রাহুলকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়। উচ্চ আদালতে আপিল করার জন্য ৩০ দিন সময়ও দেওয়া হয়। এর মধ্যে কংগ্রেসসহ ১২টি বিরোধী দলের সদস্যরা রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে আবেদন জানানোর জন্য মিছিল করেন। পুলিশ তাঁদের আটকে দেয়।
গত ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের প্রচারের সময় রাহুল গান্ধী ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বিদেশে পলাতক শিল্পপতি ললিত মোদি, নীরব মোদির প্রসঙ্গ উল্লেখ করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদির নাম জুড়ে দেন। বলেছিলেন, ‘সব অপরাধীর নাম মোদি হয় কেন?’ এ মন্তব্যের কারণেই বিজেপি বিধায়ক পুর্ণেদু মোদি আদালতে মামলা করেন। বৃহস্পতিবার আদালত রাহুলকে দোষী সাব্যস্ত করে রায় দেন।