সোমবার, ২৭ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা
প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

ইফতার পার্টির টাকা গরিবদের দান করুন

নিজস্ব প্রতিবেদক

ইফতার পার্টি না করে সেই টাকা বাঁচিয়ে গরিব-অসহায় মানুষকে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারপ্রধানের এই আহ্বানে সাড়া পড়েছে। সাধুবাদ জানিয়েছেন সর্বস্তরের মানুষ। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার আহ্বানে সাড়া দিয়ে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ইফতার পার্টি বাতিল করেছে। প্রধানমন্ত্রীর কৃচ্ছ্র সাধনের সিদ্ধান্তের ধারাবাহিকতায় সরকারের তিনটি বাহিনী তাদের পূর্বঘোষিত ইফতার কর্মসূচি বাতিল করেছে। বাংলাদেশ পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) ইফতারের আয়োজন করবে না। পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া) মনজুর রহমান বলেন, ‘২৯ মার্চ পুলিশ স্টাফ কলেজ কনভেনশন হলে অনুষ্ঠিতব্য ইফতার পার্টি বাতিল করা হয়েছে।’ বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম জানান, ‘২৮ মার্চ বিজিবির অনুষ্ঠিতব্য ইফতার পার্টি বাতিল করেছে কর্তৃপক্ষ।’ র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, প্রধানমন্ত্রী গণভবনে ইফতার পার্টি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সেই জন্য র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নও (র‌্যাব) এ বছর ইফতার পার্টির ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। বর্তমান বিশ্বে মন্দা পরিস্থিতিতে এই কৃচ্ছ্র সাধন খুবই জরুরি।’ এই তিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গরিব-অসহায় মানুষের মাঝে খাদ্য বিতরণ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বলে জানা গেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। বিগত করোনার সময়ে দলীয় নেতা-কর্মী, বিত্তশালীদের অসহায় গরিবদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন। তাঁর আহ্বানে সাড়া দিয়ে আওয়ামী লীগ, সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতারা সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছিলেন। সেই সঙ্গে হাত বাড়িয়েছিলেন দেশের বিত্তশালীরাও। বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, শিল্পগোষ্ঠী করোনায় মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছেন। জানা যায়, সাধারণত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতি রমজান মাসেই গণভবনে এতিম, মুক্তিযোদ্ধা, বিশিষ্ট ব্যক্তি, রাজনীতিকসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে ইফতার পার্টির আয়োজন করে থাকেন। গত দুই বছর করোনার কারণে হয়নি। এবার বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে আর্থিক সাশ্রয়ের কারণে কোনো ইফতার পার্টি রাখা হয়নি। এখানেই শেষ নয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যক্তিগত ইফতারে সাদামাটা রাখছেন। কৃচ্ছ্র সাধন করবেন। ইফতারের টাকা বাঁচিয়ে গরিব অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।  গত শনিবার রাজধানীতে আওয়ামী লীগের এক কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, পবিত্র রমজান মাসে কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনগুলো কোনো ইফতার মাহফিলের আয়োজন করবে না। আমাদের নেত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। সেই টাকা দিয়ে দরিদ্র মানুষের মধ্যে ইফতারসামগ্রী বিতরণ করবেন। তিনি বলেন, আমরা ইফতারের আয়োজন না করে পার্টির পক্ষ থেকে যারা কষ্টে আছেন, যারা গরিব মানুষ, তাদের হাতে খাবার তুলে দেব। বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী যে সাশ্রয়ের নীতি অবলম্বন করেছেন, ব্যক্তিগত জীবনে সেটারই অংশ হিসেবে তিনি এবার কোনো ধরনের ইফতার পার্টি করবেন না। ইফতারে সংযম এবং ব্যয় সংকোচন করবেন। আনুষ্ঠানিক আয়োজন না রাখার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যক্তিগত ইফতারও সাদামাটা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ব্যক্তিগত ইফতারেও তিনি কৃচ্ছ্র সাধন করবেন।

সর্বশেষ খবর