বৃহস্পতিবার, ১১ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা
যৌন হয়রানির প্রমাণ

ট্রাম্পকে ৫০ লাখ ডলার জরিমানা

লাবলু আনসার, যুক্তরাষ্ট্র

ট্রাম্পকে ৫০ লাখ ডলার জরিমানা

অবশেষে ট্রাম্পকে যৌন নির্যাতন এবং লেখক ই জিন ক্যারলকে অপদস্থ করার মামলায় দোষী সাব্যস্ত করা হলো। নিউইয়র্ক সিটির ম্যানহাটান কোর্টের জুরি বোর্ড ৯ মে মঙ্গলবার এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে ট্রাম্পকে ৫ মিলিয়ন ডলার জরিমানা করেছেন এবং এ অর্থ পাবেন ই জিন ক্যারল। উল্লেখ্য, ডজনখানেকের অধিক নারী দীর্ঘদিন ধরে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করে এলেও এটাই প্রথম ঘটনা, যেখানে আদালত কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করলেন। তবে ই জিন ক্যারলকে ট্রাম্প ধর্ষণ করেছেন বলে যে অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছিল, ৯ সদস্যের জুরি বোর্ড তার সত্যতা পাননি। উল্লেখ্য, প্রায় ৩০ বছর আগে ম্যানহাটানে বার্গডর্ফ গুডম্যান স্টোরের ড্রেসিং রুমে ক্যারলকে ট্রাম্প যৌন হামলা, যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণ করেন বলে এ মামলা দায়ের করা হয়েছে। আরও উল্লেখ্য, মামলার বিচার চলাকালে ট্রাম্প আদালতে হাজির হননি এবং তিনি বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিলেন। এটি দেওয়ানি আদালত। এ আদালতের জুরি বোর্ডের ৯ সদস্যের তিনজনই নারী। তারা সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নেন যে, ক্যারল তার অভিযোগের পক্ষে পর্যাপ্ত তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপনে সক্ষম হয়েছেন। এ সময় জুরি বোর্ড আরও উল্লেখ করেন, গত অক্টোবরে ট্রাম্প তার ‘ট্রুথ সোশ্যাল’ প্ল্যাটফরমে ক্যারলের মামলাকে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট বলে অভিহিত করেছিলেন। জুরি বোর্ডের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ট্রাম্প আপিল করবেন বলে তার আইনজীবীরা জানিয়েছেন। জুরি বোর্ডের উপরিউক্ত সিদ্ধান্ত উপস্থাপন করেন আদালতের পেশকার। তা শুনে ক্যারল মাথা নাড়েন এবং তার সম্মতি জ্ঞাপন করেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্যারলের মানহানির জন্যও দায়ী বলে এ সময় পেশকার উল্লেখ করেন। এরপর নিজের আইনজীবী রবার্টা এ ক্যাপলনের হাত ধরে কথা বলতে বলতে আদালত ত্যাগের সময় মিস ক্যারলের উদ্দেশে চিৎকার করে এক নারী বলেন, ‘আপনি ভীষণ সাহসী এবং খুব সুন্দর।’ পাল্টা উচ্চস্বরে জবাবে ক্যারল বলেন, ‘আপনাকে ধন্যবাদ, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।’ এদিন সন্ধ্যায় ক্যারল এক বিবৃতিতে বলেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আমি এ মামলাটি দায়ের করেছি নিজেকে কালিমামুক্ত করতে এবং আমার হারানো জীবন ফিরে পেতে। আজ, বিশ্ব অবশেষে প্রকৃত সত্য জানল। এই জয় শুধু আমার জন্য নয়, প্রত্যেক নারীর জন্য, যারা তাকে বিশ্বাস করা হয়নি বলে নিদারুণ কষ্টে রয়েছেন।’ কয়েক দশক ধরেই ডোনাল্ড ট্রাম্প নারীদের কাছে অপ্রতিরোধ্য একজন পুরুষের ইমেজ তুলে ধরেছিলেন। ‘আমার কাছে সেরা যৌনতা ছিল’ এমনটি মন্তব্য করেছিলেন ট্রাম্প ১৯৯৯ সালে প্লেবয় ম্যাগাজিনের মাঝখানের দুই পাতা জুড়ে একটি প্রতিবেদনে। সেখানে বড়াই করেছিলেন, তিনি কীভাবে মহিলাদের যৌনাঙ্গে হাতড়ানোর পরও কোনো ধরনের অপরাধবোধ কাজ করে না। কেউ তাকে দোষীও ভাবার সাহস পায় না। তবে ম্যানহাটানের দেওয়ানি আদালত ট্রাম্পের সে মিথ্যা বড়াই দুমড়ে দিলেন বলে সুধীজনেরা মন্তব্য করেন। ট্রাম্প এখন একজন চিহ্নিত অপরাধী হিসেবেও সামাজিক ধিক্কারের মধ্যে থাকবেন। তবে এটি দেওয়ানি আদালতের শাস্তি হওয়ায় ট্রাম্পকে জেল খাটতে হবে না। কিন্তু এ রায়ের প্রভাব নিদারুণভাবে ট্রাম্পকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে নির্বাচনী প্রচারণায়। এদিকে এ রায়ের পর ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প এক পোস্টে লিখেছেন, তিনি এই নারীকে কখনোই চেনেন না- ‘আমার কোনো ধারণাই নেই কে এই নারী। মামলার নামে একটি সার্কাস মঞ্চস্থ হলো।’

সর্বশেষ খবর