শুক্রবার, ১৯ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা
জাতীয় সংসদ নির্বাচন

পুরো আসন নয়, কেন্দ্রের ফল বাতিল করতে পারবে ইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক

পুরো আসন নয়, কেন্দ্রের ফল বাতিল করতে পারবে ইসি

নির্বাচনে অনিয়ম হলে গেজেট প্রকাশের পর পুরো আসন বা নির্বাচনী এলাকার ভোট বাতিলের ক্ষমতা চেয়ে গণপ্রতিনিধিত্ব আইনের খসড়ায় একটি সংশোধন প্রস্তাব দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তাতে সায় দেয়নি মন্ত্রিসভা। নির্বাচনে কেবল অনিয়ম হওয়া কেন্দ্রের ভোটের ফল বাতিলের ক্ষমতা দিয়ে একটি আইনের খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। অর্থাৎ যদি এক বা একাধিক কেন্দ্রে অনিয়ম হয়, সে ক্ষেত্রে কেবল সেই কেন্দ্রের ভোট বাতিল করা যাবে। পুরো আসন বা নির্বাচনী এলাকার ভোট বাতিল করতে পারবে না ইসি। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে ‘রিপ্রেজেন্টেশন অব দ্য পিপল (অ্যামেন্ডমেন্ট) অ্যাক্ট, ২০২৩’-এর খসড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়। আইনটি ‘গণপ্রতিনিধিত্ব (সংশোধন) আইন, ২০২৩’ নামে পরিচিত। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, সব দিক বিবেচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তা জেলাভিত্তিক নন, আসনভিত্তিক করার বিধানও যুক্ত হয়েছে সংশোধনে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বৈঠকে এ নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে গুরুত্ব পেয়েছে ইসির নির্বাচন বাতিলের ক্ষমতা। কোনো কেন্দ্রে অনিয়ম-বিশৃঙ্খলা হলে ইসি নির্বাচন বাতিলের ক্ষমতা চেয়ে প্রস্তাব দিয়েছিল। গেজেট প্রকাশের পরও সেই ক্ষমতা চেয়েছিল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। তবে ইসির প্রস্তাবে রাজি নয় মন্ত্রিসভা। পুরো আসন নয়, শুধু এক বা একাধিক কেন্দ্রের নির্বাচন বন্ধ বা বাতিল করতে পারবে ইসি। জাতীয় নির্বাচনের সময় আর বেশি নেই উল্লেখ করে মাহবুব হোসেন জানান, এর আগেই সংশোধন হচ্ছে গণপ্রতিনিধিত্ব আইনের (আরপিও) কয়েকটি ধারা। এ ছাড়া মনোনয়নপত্র দাখিলের আগের দিন কৃষি ও ক্ষুদ্র ঋণ এবং বিলখেলাপিরা তাদের খেলাপি টাকা পরিশোধ করলেই নির্বাচনে প্রার্থী হতে সুযোগ রাখা হয়েছে সংশোধনে। বিদ্যমান আইনে সাত দিন আগে এসব পরিশোধের বিধান রয়েছে।

মাহবুব হোসেন বলেন, আরপিওতে যুক্ত হচ্ছে আরও কিছু নতুন ধারা। সে অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের আগের দিন পর্যন্ত ইউটিলিটি বিল জমা দিতে পারবেন প্রার্থীরা। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর কেউ রিজেক্ট (বাতিল) হলে তিনি তখন আপিল করতে পারতেন। এখন শুধু রিজেক্ট না, রিটার্নিং অফিসার যে সিদ্ধান্তই দেন, যদি গ্রহণও করেন, তা হলেও আপিল করা যাবে। তার যে কোনো সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে। উপযুক্ত কাগজপত্র ও সুনির্দিষ্ট প্রমাণসহ অভিযোগ দাখিল করে এ আপিল করা যাবে। এর আগে ২৮ মার্চ আইনটির নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। আজ (গতকাল) চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। একইভাবে আয়করের রসিদ সাবমিট করতে হবে। বৈধভাবে গণমাধ্যমকর্মী ও পর্যবেক্ষকের নির্বাচন কেন্দ্রে প্রবেশে ও কাজে যে কেউ বাধা দিলে দুই থেকে সাত বছরের সাজারও বিধান রয়েছে প্রস্তাবিত আইনে। রাজনৈতিক দলের গঠনতন্ত্র, আয়-ব্যয় জমা দেওয়ার সময়সীমা ২০২০ থেকে বাড়িয়ে ২০৩০ সাল করা হয়েছে।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদীয় আসন অনুযায়ী একজন রিটার্নিং কর্মকর্তা আগে জেলাভিত্তিক হতেন। এখন আসনভিত্তিক করার বিধানও সংশোধনে যুক্ত হয়েছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তিনি আরও জানান, মন্ত্রিসভা প্রকিউরমেন্ট অথরিটি আইন, সুরক্ষিত লেনদেন, ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনসহ তিনটি আইনের খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে।

সর্বশেষ খবর