ঝুমবৃষ্টির মধ্যেও বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনায় গত বৃহস্পতিবার দেশব্যাপী উদযাপিত হয়েছে মুসলমানদের অন্যতম বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর এ ঈদে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় পশু কোরবানি করেন সামর্থ্যবান মুসলমানরা। কোরবানির আগে বৃষ্টির মধ্যেও ঈদের দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করতে ছাতা মাথায় সবাই ছুটে গেছেন পাশের মসজিদ বা ঈদগাহে। নামাজ শেষে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
রাজধানীতে ঈদুল আজহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় ঈদগাহে সকাল সাড়ে ৭টায়। এতে ইমামতি করেন তেজগাঁও রেলওয়ে জামে মসজিদের খতিব ড. মাওলানা মুশতাক আহমেদ। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্য, রাজনীতিবিদ, কূটনীতিকসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ এখানে ঈদ জামাতে অংশ নেন।
জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে যথারীতি ঈদুল আজহার পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
বৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে দিনাজপুরের ঐতিহাসিক গোর-এ-শহীদ ময়দানে দেশের অন্যতম বৃহৎ ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এখানে প্রায় ২ লাখ মুসল্লি ঈদের নামাজ আদায় করেছেন বলে জানিয়েছেন ঈদগাহ মাঠের সমন্বয়ক ও পৃষ্ঠপোষক জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম। এখানে জামাতে ইমামতি করেন দিনাজপুরের জেনারেল হাসপাতাল জামে মসজিদের ইমাম শামসুল হক কাসেমি।
একইভাবে বৃষ্টি উপেক্ষা করে সকাল ৯টায় কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে লাখো মুসল্লি ঈদের নামাজ আদায় করেছেন। এবার এই মাঠে ১৯৬তম পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এবারের ঈদ জামাতে ইমামতি করেন মাওলানা হিফজুর রহমান। মাঠের রেওয়াজ অনুযায়ী, জামাত শুরুর আগে মুসল্লিদের সংকেত দিতে শর্টগানের ছয়টি ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়।
বৃষ্টি উপেক্ষা করে চট্টগ্রামে ঈদুল আজহার প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল সাড়ে ৭টায় জমিয়তুল ফালাহ জাতীয় মসজিদে। এই জামাতে ইমামতি করেন খতিব সৈয়দ আবু তালেব মোহাম্মদ আলাউদ্দীন আল কাদেরী। এখানে দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল সাড়ে ৮টায়। এতে ইমামতি করেন হাফেজ মাওলানা আহমদুল হক। চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় ও চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় ঈদ জামাত কমিটির উদ্যোগে নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের সামনে সকাল ৮টায় ঈদুল আজহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এখানে ইমামতি করেন মাওলানা অধ্যক্ষ ড. সাইয়েদ মুহাম্মদ আবু নোমান।
বৃষ্টি উপেক্ষা করে সিলেটে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয় শাহী ঈদগাহ ময়দানে।
রাজশাহীতে হযরত শাহ মখদুম (রহ.) দরগা মসজিদে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। রংপুরে ঈদুল আজহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয় রংপুর মডেল মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র মসজিদে। খুলনায় প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয় নগরীর টাউন জামে মসজিদে। বরিশালের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয় হেমায়েতউদ্দিন কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে। ময়মনসিংহে প্রধান ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয় কেন্দ্রীয় আঞ্জুমান ঈদগাহ মাঠে।
এ ছাড়া দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলা, শহরের পাড়া-মহল্লা ও গ্রামের বিভিন্ন ঈদগাহ ও স্থানীয় মসজিদে মুসল্লিরা ঈদের নামাজ আদায় করেন।
এবারও দেশের বিভিন্ন স্থানে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে গত বুধবার ঈদ উদযাপন করা হয়।