যশোর শহরের বেসরকারি দেশ ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গত ২৯ মে বাঘারপাড়ার চানপুর গ্রামের মইনুল ইসলামের স্ত্রী ডলি খাতুনের সিজার হয়। সিজার করেন যশোর জেনারেল হাসপাতালের ইএনটি বিভাগের ডাক্তার শাহীন রেজা। ডলি খাতুনের কন্যাসন্তান হয়। পরে সেখানে আরও তিন দিন চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফেরেন তিনি। এর কয়েকদিন পর থেকে ডলি খাতুনের অবস্থার অবনতি হতে থাকে। স্বজনরা তাকে অন্য একটি ক্লিনিকে নিয়ে যান। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানানো হয়, অপচিকিৎসার শিকার হয়েছেন ডলি। সিজার করার সময় তার খাদ্য ও মূত্রনালি কেটে ফেলা হয়। পরে আবার সে দুটি একসঙ্গে সেলাই করে দেওয়া হয়। যে কারণে মূত্রনালি দিয়ে রোগীর টয়লেট বের হচ্ছে। বিষয়টি জানতে পেরে রবিবার বিকালে রোগীর স্বজনরা ডাক্তার শাহীন রেজাকে তার অপারেশন কক্ষে আটকে রেখে বিচার দাবি করেন। স্থানীয়রা উত্তেজিত হয়ে ডাক্তার শাহীনকে মারতে উদ্যত হন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। রোগীর স্বজনরা জানান, গাইনি ডাক্তার পরিচয় দিয়ে ওই ডাক্তার রোগীর সিজার করেছেন। পরে রোগীর সমস্যা হলে তারা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন যে তিনি আসলে নাক, কান, গলার ডাক্তার। রোগীর বোনের ছেলে সাকিবুজ্জামান সাকিব বলেন, সমস্যা হওয়ার পর ডাক্তার কিংবা ক্লিনিক কেউই তার ফুপুর দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করে। বর্তমানে রোগী ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ৬ লাখ টাকারও বেশি খরচ হয়ে গেছে, কিন্তু রোগীর কোনো উন্নতি হচ্ছে না। সাকিব এ ঘটনার বিচার দাবি করে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। যশোর কোতোয়ালি থানার এসআই জাহিদুল ইসলাম বলেন, ওই ক্লিনিকে ডাক্তার ও রোগীর স্বজনদের মধ্যে হট্টগোল হচ্ছে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। রোগীর স্বজনরা মৌখিক অভিযোগ করেছেন। ডাক্তারও বলেছেন যে, তাকে আটকে রেখে নির্যাতন করতে চেয়েছিল রোগীর স্বজনরা। তবে কোনো পক্ষই লিখিত অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান। এদিকে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডাক্তার শাহীন রেজা স্বীকার করেন যে, তিনি গাইনি বা সার্জারির ডাক্তার নন। যশোর জেনারেল হাসপাতালের ইএনটি বিভাগে কর্মরত আছেন। তবে তিনি বলেন, এমবিবিএস ডাক্তার সব চিকিৎসা ও অপারেশন করতে পারে। শাহীন রেজা বলেন, রোগীর স্বজনরা আগে কোনো অভিযোগ করেনি। একটি চক্র তাকে ফাঁসাতে এখন এসব অভিযোগ করছে বলে তিনি জানান।