জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘একটি উগ্র গোষ্ঠী বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে চট্টগ্রাম আদালতের এক আইনজীবীকে হত্যা করেছে। তারা চেয়েছিল বাংলাদেশকে তপ্ত শ্মশানে পরিণত করতে। কিন্তু এদেশের দায়িত্বশীল মুসলমানরা তাদের পাতানো ফাঁদে পা দেয়নি। আমরা ধৈর্য ধরেছি দেশের মানুষকে শান্ত করেছি। এদেশে হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ খ্রিস্টান সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে শান্তিতে বসবাস করবে। কোনো ধর্মীয় উপাসনালয় কাউকে পাহারা দিতে হবে না। আমরা এমন বাংলাদেশ চাই যেখানে কোর্ট কাচারি অফিস আদালতে কোথাও গিয়ে আপনি লাঞ্ছিত হবেন না। কৃষক তার ফসলের ন্যায্য দাম পাবেন, শ্রমিক পাবেন তার ঘামের মজুরি। জামায়াত রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় গেলে কাউকে অধিকার ভিক্ষা করতে হবে না। সবাইকে তার অধিকার সম্মানের সঙ্গে দেওয়া হবে। ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানের বিষয়ে শফিকুর রহমান বলেন, ‘যারা আন্দোলনে শহীদ হয়েছেন তারা আমাদের জাতীয় বীর। তাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ ও স্যালুট জানাই।’
ঝালকাঠিতে গতকাল সকাল সাড়ে ৮টায় দলীয় কর্মীদের দায়িত্বশীল সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় আমির ডা. শফিকুর রহমান এসব কথা বলেন।
জেলা জামায়াতের আমির ও কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য অ্যাড. হাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন, জামায়াত নেতা মাসুদ সাঈদী। এরপর ঝালকাঠি নেছারাবাদ এনএস কামিল মাদরাসা মাঠে সুধী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জামায়াতের আমির। দ্বিতীয় স্বাধীনতা প্রসঙ্গে জামায়াতের আমির বলেন, ‘আবু সাঈদ আমাদের এই স্বাধীনতাযুদ্ধের প্রধান আইকন ও সেনাপতি। তিনি অধিকার চেয়েছিলেন কিন্তু তাকে পর পর তিনটি গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আমরা তাকে স্যালুট জানাই। আমরা সবাইকে ধৈর্য ধরতে বলেছি। এই বাংলাদেশে যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে। কোনো ধর্মের ওপর হস্তক্ষেপ করা যাবে না। আগামীতে কোনো ধর্মীয় উপাসনালয় পাহারা দিতে হবে না। সবাই নিরাপদ থাকবেন। বিচারকের আসনে বসে মানুষকে জুলুম করা যাবে না। আমরা এমন বাংলাদেশ চাই যেখানে কোর্ট কাচারি কোথাও গিয়ে আপনি লাঞ্ছিত হবেন না। কৃষক তার ফসলের ন্যায্য দাম পাবেন। জামায়াত রাষ্ট্র পরিচালনায় দায়িত্ব পেলে কেউ মানুষের ওপর জুলুম করতে পারবে না। আগামীর শান্তি সুন্দর বাংলাদেশ গঠন করতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বর্তমান সরকারকে বলছি, এখনো যারা কারাগারে বন্দি আছেন, তাদের মুক্ত করতে হবে। অতীতের স্বৈরশাসক জাতিকে ভাগ করে টুকরো টুকরো করে জাতির মধ্যে হিংসা ও বিদ্বেষ ছড়িয়ে দিয়েছে। আমরা চাই হিংসা-বিদ্বেষের অবসান হোক। সব হাত এক মোহনায় একত্রিত হোক। সবাই মিলে একটা মহাসমুদ্রে একত্রিত হোক।