গণ অভ্যুত্থানের পর গতকাল রাজধানীতে বেশ কয়েকটি স্থানে একযোগে ঝটিকা মিছিলের চেষ্টা করেছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ। একই সঙ্গে চোরাগোপ্তা বোমাও বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে দলটির নেতা-কর্মীরা। রাজধানীর গুলিস্তান, ফার্মগেট ছাড়াও কারওয়ান বাজার, আগারগাঁও, পান্থপথ এলাকায় মিছিল বের করে। হঠাৎ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির এমন অবনতিতে জনমনে সৃষ্টি হয়েছে আতঙ্ক। এ পরিস্থিতিতে যে কোনো ধরনের অপতৎপরতা ঠেকাতে সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত রেখেছে যৌথ বাহিনী। পুলিশ বলছে, আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে তারা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। কার্যক্রম নিষিদ্ধ সংগঠনের যে কোনো অপতৎপরতা রোধে পুলিশের চলমান অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং আইনশৃঙ্খলা বিনষ্টকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মিছিলের প্রস্তুতির অভিযোগে গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের অন্তত ২৪৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। গতকাল বিকাল ৩টায় রাজধানীর পান্থপথে ঝটিকা মিছিলের প্রস্তুতির সময় কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কয়েক নেতা-কর্মীকে আটক করে পুলিশ।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, পান্থপথ সিগন্যালের সামনে একজনের ব্যাগ থেকে বোমাসদৃশ বস্তু জব্দ করা হয়েছে। ডিবি, সিটিটিসি এবং পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তা জব্দ করে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে নাশকতার উদ্দেশ্যে এটি নেওয়া হচ্ছিল। ফার্মগেট, পানি ভবনসহ তেজগাঁও এলাকায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের লোকজন ঝটিকা মিছিলের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত। পরে জানা যায়, দুপুর ২টায় পানি ভবনের সামনে থেকে ঝটিকা মিছিলের প্রস্তুতিকালে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সংগঠনের ৪০ নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়।
হোটেল-ফ্ল্যাটে আওয়ামী লীগ থাকলে তথ্য দেওয়ার অনুরোধ পুলিশের : রাজধানীর আবাসিক হোটেল, ফ্ল্যাট ও ছাত্রাবাসে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী থাকলে তাদের তথ্য দিতে অনুরোধ জানিয়েছে ঢাকা মহানগর (ডিএমপি) পুলিশ।
তথ্যদাতাদের নাম-পরিচয় গোপন রাখা হবে বলে জানানো হয়। গতকাল বিকালে রাজধানীর ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এ অনুরোধ করেন অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) এস এন নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, আবাসিক হোটেল, ফ্ল্যাট ও ছাত্রাবাসে পুলিশের রেইড দেওয়া হয়। গোয়েন্দা নজরদারি চলছে। অনেক ফ্ল্যাটে থাকছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। জনগণ তথ্য দিলে পুলিশ সেখানে গিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করবে।