শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ফেসস্ক্রাব কি উপকারী?

ত্বকের প্রাণ ফেরাতে দারুণ কার্যকর। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের মরা চামড়া দূর হওয়ার পাশাপাশি ত্বককে করে তোলে নরম ও কোমল।

ফেসস্ক্রাব কি উপকারী?

ছবি : ফারহান আহমেদ

আমাদের ত্বক অনেক সংবেদনশীল। আর সংবেদনশীল ত্বকের জন্য স্ক্রাব ভীষণ প্রয়োজনীয়। তবে তা না বুঝে ব্যবহার করলে ঘটতে পারে নানা রকম বিপদও। ত্বকের পরিচর্চায় স্ক্রাব অনেক ধরনের হয়ে থাকে। ব্যবহারের আগে অবশ্যই সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে-বুঝে ব্যবহার করা উচিত। ত্বক আর স্ক্রাব প্রতিদিন, সপ্তাহে এক দিন বা মাসে দুবার ব্যবহার করা যায়।

 

কেন স্ক্রাব ব্যবহার করবেন

♦  ত্বকের শুষ্কতা দূর করে।

♦  ত্বক মসৃণ করে।

♦  ব্ল্যাক ও হোয়াইটহেডস দূর করে। 

♦  ত্বকের রোদে পোড়া দাগ দূর করে।

♦  ত্বকে জমে থাকা মরা চামড়া দূর করে।

♦  ত্বকের পিএইচ লেভেল ঠিক রাখে।

 

কোন ত্বকে কেমন স্ক্রাব

যাদের মুখে খুব বেশি ব্রণের সমস্যা ভুলেও শক্ত দানাযুক্ত স্ক্রাব ব্যবহার করতে পারবেন না। এতে জীবাণু আরও জড়িয়ে পড়তে পারে। ব্রণের সমস্যায় জর্জরিত ত্বকের জন্য বাজারে স্পেশাল স্ক্রাব পাওয়া পাওয়া যায়। একইভাবে তৈলাক্ত ত্বকের মতো স্পর্শকাতর ত্বকে খসখসে বা মোটা দানার স্ক্রাব ব্যবহার করা ঠিক হবে না। এক্ষেত্রে ফ্রুট বা প্ল্যান্ট এনজাইম আছে এমন স্ক্রাব বেছে নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিউটিশিয়ানরা। যারা সেনসেটিভ বা সংবেদনশীল ত্বকের অধিকারী তারা বাড়িতে স্ক্রাব ব্যবহার না করাই ভালো। একান্তই ফেস ক্লিনআপের জন্য বিউটি ক্লিনিকে চলে যান। এক্সপার্ট বা কসমোলজিস্টরা আপনার ত্বকের ধরন বুঝে ট্রিটমেন্ট দেবেন। এ ছাড়া যাদের চামড়া বেশ পুরু আর প্রতিদিনই ব্ল্যাক হেডস বা হোয়াইট হেডসের মতো সমস্যায় ভোগেন তাদের জন্য স্ক্রাব একটি নিত্যনৈমিত্তিক উপাদান। এক্ষেত্রে তারা ব্যবহার করতে পারেন মাইল্ড এবং মাইক্রো স্ক্রাব।

 

যারা নিয়মিত পারলারে বা বিউটি ক্লিনিকে ফেসিয়াল বা ফেস ক্লিনআপ করেন তাদের বাড়িতে বাড়তিভাবে স্ক্রাব করার প্রয়োজন হয় না। তবে পারলারে বা বিউটি ক্লিনিকে সব সময় ফেসিয়াল স্ক্রাবিং করা উচিত নয়। এর চেয়ে ঘরোয়া উপায়ে তৈরি স্ক্রাব ব্যবহার নিরাপদ। কারণ এগুলোতে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার শঙ্কা থাকে না। স্ক্রাব নিয়মিত করলে ত্বকের মৃত কোষ ভালোভাবে দূর হয়ে যায়। ত্বক হয় সজীব, সতেজ, উজ্জ্বল। ব্ল্যাক হেডস, হোয়াইট হেডসও দূর হয়ে যায় ভালোভাবে স্ক্রাব করতে পারলে। তবে স্ক্রাব সঠিকভাবে ব্যবহার করতে না জানলে ত্বক হয়ে উঠতে পারে রুক্ষ। অনেক সময় ক্ষতির পরিমাণ সেনসেটিভ এবং অ্যালার্জিপ্রবণে গিয়ে ঠেকে। যা মোটেও কাম্য নয়। এ ছাড়া স্ক্রাব কখনোই চোখের আশপাশে ব্যবহার করবেন না।

 

ব্যবহারের সঠিক সময়

সকালে বা রাতে যে কোনো সময়ই স্ক্রাব ব্যবহার করতে পারেন। তবে রাতে কোনো ট্রিটমেন্ট ত্বকে মেখে ঘুমালে স্ক্রাবিং না করাই ভালো। এক্সফলিয়েট করার পর ত্বকে এই ট্রিটমেন্ট সহজে কাজ করবে। স্ক্রাব করার পর অবশ্যই ভালো একটি ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।

 

পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে

স্ক্রাব ব্যবহারে ত্বকে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে ওই স্ক্রাব ব্যবহার না করাই ভালো। কিছুদিন ত্বকে হালকা ক্লিনজার ও ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। দরকার হলে ত্বকের চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করুন।

 

কয়েকটি উপকারী স্ক্রাব

♦  তিন টেবিল চামচ ওটের গুঁড়া, সামান্য টক দই ও প্রয়োজন মতো অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে ধীরে ধীরে মুখ ও ঘারে ম্যাসাজ করুন। ৪-৫ মিনিট পর পানির ঝাপটায় ধুয়ে ফেলুন।

♦  কাজুবাদামের গুঁড়ার সঙ্গে চিনি ও টমেটোর রস মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে মুখে ভালোভাবে ম্যাসাজ করুন। ১০ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

♦  অরেঞ্জ পিল পাউডার আর ওটস একত্রে মধু দিয়ে মিশিয়ে নিন। তারপর সামান্য পানি দিয়ে মুখে মেখে ভালো করে স্ক্রাব করে নিন। দুদিন পরই দেখবেন ত্বকের উজ্জ্বলতা বেড়ে গেছে।

♦  পেঁপের কাঁথের সঙ্গে টক দই এবং  ওটমিলের গুঁড়া মিশিয়ে মুখে লাগান। ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এবার সার্কুলেশন মোশনে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ম্যাসাজ করে ঠান্ডা পানি ধুয়ে ফেলুন।

♦  পাকা কলার সঙ্গে গুঁড়া করা চিনি মিশিয়ে নিন। এরপর এতে অল্প মধু মিশিয়ে মুখের ত্বকে ব্যবহার করুন। এক দিন বিরতি নিয়ে প্যাকটি ব্যবহারে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।

 

লিখেছেন : শোভন সাহা

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর