রবিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস আজ

বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস আজ

ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিক ফেডারেশনের আহ্বানে প্রতি বছর ১৪ নভেম্বর বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস পালিত হয়। ‘সার্বজনীন ডায়াবেটিস চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতকরণ’- প্রতিপাদ্য নিয়ে এ বছর দিবসটি পালিত হচ্ছে। ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিক ফেডারেশনের হিসাব মতে ২০১৯ সালে পৃথিবীতে ৪৬৩ মিলিয়ন ডায়াবেটিস রোগী ছিল। এদের চার ভাগের তিন ভাগই নিম্ন ও নিম্নমধ্যম আয়ের দেশের নাগরিক। অসংক্রামক রোগের মধ্যে ডায়াবেটিস অন্যতম; তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো, ডায়াবেটিস নিজে কোটি কোটি মানুষের মৃত্যুর কারণ। ডায়াবেটিসের জটিলতা হিসেবে সংঘটিত দীর্ঘস্থায়ী জটিলতায় (যেমন, হৃদরোগ, কিডনি রোগ, চোখের রোগ, স্নায়ু রোগ, গর্ভকালীন জটিলতা এবং আরও অনেক) অনেক গুণ বেশি মানুষ প্রতি বছর অকাল মৃত্যুতে নিপতিত হচ্ছেন। বাংলাদেশে যেমন ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা বেশি, তেমনি ডায়াবেটিস বৃদ্ধির হারও বেশি। ২০১৯ সালে বাংলাদেশ শীর্ষ ১০ ডায়াবেটিস সংখ্যাধিক্য দেশের মধ্যে দশম। কিন্তু আরও ভয়াবহ হলো ২০৩০ ও ২০৪৫ সালে বাংলাদেশ নবম অবস্থানে থাকবে। পৃথিবীতে বর্তমানে সবচেয়ে উচ্চহারে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে বাংলাদেশ, ভারত ও চীনে। বাংলাদেশসহ সব উন্নয়নশীল দেশে খুব দ্রুত নগরায়ন হচ্ছে, মানুষের দৈহিক ওজন বৃদ্ধি পাচ্ছে আনুপাতিক ও কাক্সিক্ষত হারের চেয়ে বেশি, মানুষের দৈহিক শ্রম দিনে দিনে কমে যাচ্ছে, বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কারণে মানসিক চাপ বেড়েছে অনেকগুণ। উন্নত দেশগুলোতে ডায়াবেটিস রোগীর হার কমলেও তবে তা খুব উল্লেখযোগ্য হারে নয়। ডায়াবেটিস রোগীর পরবর্তী আজীবনের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে হলে রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা অতীব জরুরি। ডায়াবেটিস কন্ট্রোল পরিমাপের সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য পরীক্ষা হলো রক্তের এইচবিএ-১সি, যারা ৩-৪ মাসের গড় হিসাব বোঝায়। প্রায় সব ডায়বেটিস রোগীর জন্য গড়পরতা এইচবিএ-১সি-এর লক্ষ্য মাত্রা হলো -৭%।

কিন্তু সব মানুষই এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কমবেশি ব্যর্থ। বাংলাদেশের বেলায় তা আরও হতাশাব্যঞ্জক। বাংলাদেশের ৭৫%-৮০% ডায়াবেটিস রোগী নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না। ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যেটিকে প্রতিরোধ করার যথেষ্ট সুযোগ আছে (প্রতি ২ জনে একজনের ক্ষেত্রে), কিন্তু একবার ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে বাকি জীবন ডায়াবেটিস নিয়েই কাটাতে হবে এবং প্রহর গুনতে হবে যে, কখন ডায়াবেটিস সংক্রান্ত জটিলতাগুলো দেখা দেয়। তাই সর্বস্তরের মানুষকে সচেতনভাবে ডায়াবেটিস প্রতিরোধের কর্মযজ্ঞে নিজের সামর্থ্য অনুসারে অংশগ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস চিকিৎসা যেমন জরুরি, তার চেয়েও বেশি জরুরি ডায়াবেটিস প্রতিরোধের সর্বাত্মক সুগভীর কর্মকান্ড।

- ডা. শাহজাদা সেলিম, সহযোগী অধ্যাপক

এন্ডোক্রাইনলজি বিভাগ, বিএসএমএমইউ, ঢাকা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর