রবিবার, ২৬ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধু

সাজ্জাদুল হাসান

স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধু

ব্রিটিশ শাসন অবসানের দীর্ঘ পথপরিক্রমার পর জনগণ পেয়েছিল পাকিস্তান ও ভারত নামক দুটি রাষ্ট্র। পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্মের পর শুরু হয় বাঙালিদের নতুন করে শোষণ ও পরাধীনতার শৃঙ্খলে বেঁধে রাখার ষড়যন্ত্র। পাকিস্তানি হানাদারদের সেই শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় বাঙালি জাতি। স্বাধীনতা লাভের দৃঢ় প্রত্যয়ে উজ্জীবিত বাঙালির সামনে কোনো মারণাস্ত্রই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। বাঙালি জাতিকে মুক্তির এ মহামন্ত্রে উজ্জীবিত করে ধাপে ধাপে স্বাধীনতার পথে এগিয়ে নিয়ে যান ইতিহাসের মহানায়ক, মহাবীর, বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সর্বশক্তি দিয়ে হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ ও চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত দেশের মুক্তিকামী জনগণকে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। এরপর ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়। দেশের ৫৩তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস আজ ২৬ মার্চ।

স্বাধীনতার মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গোপালগঞ্জ মিশন স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করার পর কলকাতার ইসলামীয়া কলেজে (বর্তমান নাম মাওলানা আজাদ কলেজ) ভর্তি হন। পাকিস্তান-ভারত পৃথক হয়ে যাওয়ার পর শেখ মুজিব কলকাতা থেকে পূর্ব পাকিস্তানে ফিরে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন, যার মাধ্যমে তিনি উক্ত প্রদেশের অন্যতম প্রধান ছাত্রনেতায় পরিণত হন। ভাষা আন্দোলনের সূচনালগ্নেই অর্থাৎ ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ তিনি গ্রেফতার হন, তারপর ১৯৬৬ সালের ৬ দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭০-এর নির্বাচন কোথায় নেই বঙ্গবন্ধুর নাম। কারাগারে বন্দি বা বাইরে যেখানেই বঙ্গবন্ধু থেকেছেন সব সময় তিনি ছিলেন নেতৃত্বের কেন্দ্রবিন্দুতে।

মহান মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ’৭০-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচারণা ছিল ৬ দফাকেন্দ্রিক এবং নির্বাচনী প্রচারাভিযান শুরু হয় ৭ জুন ৬ দফা দিবসেই। ১৯৬৬ সালে আওয়ামী লীগ ৬ দফা কর্মসূচিকে তাদের প্রধান রাজনৈতিক কর্মসূচি হিসেবে গ্রহণ করে প্রকৃতপক্ষে স্বাধীনতা সংগ্রামের দিকে ধাবিত হতে থাকে।

১৯৭১ সালের ৭ জানুয়ারি কানাডার রাজনৈতিক ও বাণিজ্য বিশ্লেষণভিত্তিক পত্রিকা অটোয়া গ্লোব অ্যান্ড মেইলের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করে যে ‘শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা দিয়েছেন, যদি প্রয়োজন

পড়ে তাহলে আমি বিপ্লবের ডাক দেব।’ ২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৭১ ব্যাংকক পোস্ট লিখেছে- মুজিব বলেছেন, পশ্চিম পাকিস্তান যদি তাঁর দলের ঘোষিত ৬ দফা কর্মসূচি হুবহু গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তিনি এককভাবে অগ্রসর হবেন এবং সংবিধান রচনা করবেন।

২৩ ফেব্রুয়ারি লন্ডন টাইমসের রিপোর্টে বলা হয়, মুজিব ইতোমধ্যেই তাঁর বিবৃতিতে পূর্ব পাকিস্তান শব্দের পরিবর্তে ‘বাঙালি জাতি’ উল্লেখ করছেন। ২৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৭১ লিভারপুল ডেইলি পোস্ট লিখেছে, হোয়াইট হলের (ব্রিটেনের এস্টাবলিশমেন্ট) আশঙ্কা পাকিস্তান ভেঙে যেতে পারে। পূর্ব পাকিস্তান নিজেকে একটি ‘স্বাধীন বাঙালি মুসলিম প্রজাতন্ত্র’ ঘোষণা করতে পারে। শেখ মুজিব ইতোমধ্যেই পূর্ব পাকিস্তানের পক্ষে নয়, বাঙালি প্রজাতন্ত্রের পক্ষে কথা বলতে শুরু করেছেন। ফলে ব্রিটিশ সরকারের মধ্যে এ উপলব্ধি এসেছে যে তারা কমনওয়েলথের একটি দেশ ভেঙে যাওয়ার মতো গুরুতর পরিস্থিতি মোকাবিলার সম্মুখীন হচ্ছে।

’৭০-এর নির্বাচনকে সামনে রেখে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আমরা যদি সময়ের ডাকে সাড়া দিতে ব্যর্থ হই তাহলে আগামী প্রজন্ম আমাদের দায়ী করবে।’

১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। আওয়ামী লীগ পূর্ব পাকিস্তানে জাতীয় পরিষদের মহিলাসহ ১৬৯টি আসনের মধ্যে ১৬৭টি আসন এবং প্রাদেশিক পরিষদের ৩০০টি আসনের মধ্যে ১৮৮টি আসনে জয়লাভ করে।

১৯৭১ সালের ৩ জানুয়ারি তৎকালীন রেসকোর্সের জনসভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জনপ্রতিনিধিদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। আওয়ামী লীগ দলীয় সদস্যরা ৬ দফার ভিত্তিতে শাসনতন্ত্র রচনা এবং জনগণের প্রতি অনুগত থাকার শপথ গ্রহণ করেন।

১৯৭১ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ৩ মার্চ ঢাকায় জাতীয় পরিষদের বৈঠক আহ্বান করেন। ১৫ ফেব্রুয়ারি ভুট্টো জাতীয় পরিষদের বৈঠক বয়কটের ঘোষণা দিয়ে দুই প্রদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ দুই দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি জানান। ১৬ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু এক বিবৃতিতে ভুট্টোর দাবির তীব্র সমালোচনা করে বলেন, ‘ভুট্টো সাহেবের দাবি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। ক্ষমতা একমাত্র সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগের কাছে হস্তান্তর করতে হবে। ক্ষমতার মালিক এখন পূর্ব বাংলার জনগণ।’

অথচ ১৯৭১ সালের ১ মার্চ ইয়াহিয়া খান অনির্দিষ্টকালের জন্য জাতীয় পরিষদের বৈঠক স্থগিতের ঘোষণা প্রদান করেন। ফলে সারা বাংলায় প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। অতঃপর বঙ্গবন্ধুর সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগ কার্যকরী পরিষদের জরুরি বৈঠক ডেকে ৩ মার্চ দেশব্যাপী হরতাল আহ্বান করা হয়। এদিন সারা বাংলায় হরতাল পালিত হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু অবিলম্বে ক্ষমতা হস্তান্তর করার জন্য প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের প্রতি দাবি জানান। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্সের ঐতিহাসিক জনসভায় জনসমুদ্র থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা করেন ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। প্রকৃতপক্ষে ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ থেকেই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি হয়ে যায় এবং পাকিস্তান রাষ্ট্রের সঙ্গে পূর্ব বাংলার তথা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জনগণের মানসিক দূরত্ব স্পষ্ট হয়ে ওঠে। তিনি ইয়াহিয়া খানের সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। পূর্ব বাংলার অফিস-আদালত বাংলার মানুষ বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ মেনেছে। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার সব নির্দেশ অমান্য করে অসহযোগ আন্দোলনে বাংলার মানুষের সেই অভূতপূর্ব সাড়া ইতিহাসে বিরল ঘটনা।

৯ মার্চ ১৯৭১ লন্ডনের ডেইলি টেলিগ্রাফের রিপোর্টে বলা হয়, ৭ মার্চে মুজিবের ঘোষণা এক পাতলা ছদ্মাবরণে পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা ঘোষণা। কারণ, মুজিবের দাবিগুলো ইয়াহিয়া খান পূরণ করতে পারেন না। একই দিনে লন্ডনের ডেইলি টেলিগ্রাফ একটি সম্পাদকীয়তে লিখেছে- ‘ইতোমধ্যেই পৃথক রাষ্ট্রের নাম ভেসে আসছে। পূর্ব পাকিস্তান হবে ‘বাংলাদেশ’। বাঙালির ভূখন্ড। তৈরি করা হয়েছে এই রাষ্ট্রের পতাকা।’

দ্য ইকোনমিস্ট ১৩ মার্চ লিখেছে-‘৭ মার্চে দেওয়া মুজিবের চার শর্তের মধ্যে দুটি শর্ত অবিলম্বে সামরিক আইন প্রত্যাহার এবং নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে অবিলম্বে ক্ষমতা হস্তান্তর কার্যত রাষ্ট্রপতির পক্ষে গ্রহণ করা অসম্ভব। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া শিগগিরই ঢাকায় যাচ্ছেন, শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে সেটাই হতে পারে তার শেষ বৈঠক।’

১৯৭১ সালের ১৬ মার্চ ঢাকায় ক্ষমতা হস্তান্তর প্রসঙ্গে মুজিব-ইয়াহিয়া বৈঠক শুরু হয়। আলোচনার জন্য ভুট্টোও ঢাকায় আসেন। ২৪ মার্চ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে ইয়াহিয়া-মুজিব-ভুট্টো আলোচনা হয়। ২৫ মার্চ আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার পর সন্ধ্যায় ইয়াহিয়া ঢাকা ত্যাগ করেন। ২৫ মার্চ দিবাগত রাতে নিরীহ নিরস্ত্র বাঙালির ওপর পাকিস্তান সেনাবাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়ে। আক্রমণ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পিলখানা রাইফেল সদর দফতর ও রাজারবাগ পুলিশ লাইনস।  ২৬ মার্চ পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর হাতে বন্দি হওয়ার আগে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে               বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা ট্রান্সমিটারযোগে চট্টগ্রাম ইপিআর হেডকোয়ার্টার্সসহ দেশের অনেক জায়গায় প্রেরণ করেন।

বঙ্গবন্ধুর উক্ত ঘোষণাটি ছিল নিম্নরূপ-

This may be my last message, from today Bangladesh is independent. I call upon the people of Bangladesh wherever you might be and with whatever you have, to resist the army of occupation to the last. Your fight must go on until the last soldier of the Pakistan occupation army is expelled from the soil of Bangladesh. Final victory is ours.

[বঙ্গানুবাদ : ‘সম্ভবত এটাই আমার শেষ বার্তা, আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন। আমি বাংলাদেশের জনসাধারণকে আহ্বান জানাচ্ছি, তোমরা যে যেখানেই আছো এবং যা-ই তোমাদের হাতে আছে তার দ্বারাই শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত দখলদার সৈন্যবাহিনীকে প্রতিরোধ করতে হবে। যতক্ষণ না পাকিস্তান দখলদার বাহিনীর শেষ ব্যক্তি বাংলাদেশের মাটি থেকে বিতাড়িত হবে এবং যতক্ষণ পর্যন্ত না চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হবে, তোমাদের যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে।’]

এর সঙ্গে সঙ্গেই তিনি বাংলায় নিম্নলিখিত একটি ঘোষণা পাঠান :

‘পাকিস্তান সেনাবাহিনী অতর্কিতভাবে পিলখানা ইপিআর ঘাঁটি, রাজারবাগ পুলিশ লাইনস আক্রমণ করেছে এবং শহরের রাস্তায় রাস্তায় যুদ্ধ চলছে, আমি বিশ্বের জাতিসমূহের কাছে সাহায্যের আবেদন করছি। আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা বীরত্বের সঙ্গে মাতৃভূমি মুক্ত করার জন্য শত্রুদের সঙ্গে যুদ্ধ করছে। সর্বশক্তিমান আল্লাহর নামে আপনাদের কাছে আমার আবেদন ও আদেশ- দেশকে স্বাধীন করার জন্য শেষ রক্তবিন্দু থাকা পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যান। আপনাদের পাশে এসে যুদ্ধ করার জন্য পুলিশ, ইপিআর, বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও আনসারদের সাহায্য চান। কোনো আপস নাই। জয় আমাদের হবেই। পবিত্র মাতৃভূমি থেকে শেষ শত্রুকে বিতাড়িত করুন। সকল আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী এবং অন্যান্য দেশপ্রেমিক প্রিয় লোকদের কাছে এ সংবাদ পৌঁছে দিন। আল্লাহ আপনাদের মঙ্গল করুন। জয় বাংলা।’ এভাবেই হানাদার পাকিস্তান বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য বাঙালি সামরিক ও বেসামরিক যোদ্ধা, ছাত্র, শ্রমিক, কৃষকসহ সর্বস্তরের মানুষের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান। বঙ্গবন্ধুর এ আহ্বান বেতারযন্ত্র মারফত তাৎক্ষণিকভাবে বিশেষ ব্যবস্থায় সারা দেশে পাঠানো হয়। চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা প্রচার করা হয় এবং চট্টগ্রামে সাইক্লোস্টাইল কপি করে ২৬ মার্চ জনগণের মধ্যে বিতরণ করা হয়।

২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে স্বাধীনতার বার্তা প্রেরণের পরপর পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বঙ্গবন্ধুকে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের বাসভবন থেকে গ্রেফতার করে ঢাকা সেনানিবাসে নিয়ে যায় এবং পরবর্তীতে তাঁকে বন্দি অবস্থায় ঢাকা সেনানিবাস থেকেই পাকিস্তানে নিয়ে লায়ালপুর (বর্তমানে ফয়সালাবাদ) জেলে বন্দি করে রাখে। জাতিকে বঙ্গবন্ধু ২৩ বছরের আন্দোলন ও সংগ্রামের মাধ্যমে ধাপে ধাপে স্বাধীনতার জন্য উদ্বুদ্ধ করেছেন, প্রস্তুত করেছেন। এই বীরোচিত গণতান্ত্রিক সংগ্রাম এবং নয় মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের ভিতর দিয়ে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ কীর্তি। বাঙালির ইতিহাসে প্রথম জাতিরাষ্ট্রের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আর এ কারণেই তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে একসাগর রক্তের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠিত হয় অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক জাতিরাষ্ট্র গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ। তাই স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধু একে অন্যের পরিপূরক।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের মাধ্যমে গরিব-দুঃখী-মেহনতি মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই ছিল বঙ্গবন্ধুর সারা জীবনের একমাত্র লক্ষ্য। তিনি জেল-জুলুম-হুলিয়া, শত যন্ত্রণা, দুঃখ-কষ্ট -বেদনা সহ্য করে বাংলার কৃষক-শ্রমিক জনতার মুখে হাসি ফোটাতে নিরবচ্ছিন্ন সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন। বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের মধ্যে বঙ্গবন্ধু চিরদিন অম্লান এবং বাংলার জনতার হৃদয়ে চিরভাস্বর হয়ে থাকবেন।

                লেখক : সাবেক সিনিয়র সচিব প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর