ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল দলবীর সিংহ সুহাগ চার দিনের সফরে চীনে গেছেন। সফরকালে তিনি চীনের সশস্ত্র বাহিনী পিপল’স লিবারেশন আর্মির ইস্টার্ন থিয়েটার কম্যান্ড পরিদর্শন করবেন বলে সেনা সূত্রে জানা গেছে।
সফরকালে চীনের সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান ফ্যান চ্যাংলং-এর সঙ্গে জেনারেল দলবীর সিংহ সুহাগের বৈঠক হওয়ার কথা। সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশন চীনের সর্বশক্তিমান প্রতিষ্ঠান। চীনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং নিজেই এই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান। অর্থাৎ জেনারেল দলবীর সিংহ সুগাহের সঙ্গে যার বৈঠক হবে, সেই ফ্যান চ্যাংলং সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনে পদাধিকার বলে প্রেসিডেন্ট চিনফিং-এর ঠিক পরের ধাপেই রয়েছেন।
চ্যাংলং-সুহাগ বৈঠকে কী আলোচনা হবে, তা নিয়ে স্পষ্ট করে কোনো পক্ষই কিছু জানায়নি। বেজিং-এর ভারতীয় দূতাবাস বিবৃতি প্রকাশ করে জানিয়েছে, সন্ত্রাসবাদ বিরোধী লড়াই, মানবিক সহায়তা এবং শান্তি রক্ষার মতো পারস্পরিক স্বার্থ সংক্রান্ত বিষয়গুলোতে সহযোগিতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যেই ভারতীয় সেনাপ্রধানের এই চীন সফর।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, 'এই সফর চীনের পিপল’স লিবারেশন আর্মিকে সামরিক সমঝোতার পথে ফিরিয়ে আনার এবং অস্তিত্বশীল যৌথ সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলোকে আরও প্রসারিত করার একটি সুযোগ। ইনফ্যান্ট্রি ডিভিশন এবং এয়ার ডিফেন্স ব্রিগেডসহ চীনা সেনার বিভিন্ন সামরিক পরিকাঠামোও ভারতীয় প্রতিনিধি দল ঘুরে দেখবে।'
জেনারেল দলবীর সিংহ সুহাগ ও তার সফরসঙ্গীরা চীনা সেনার যে ইস্টার্ন থিয়েটার কম্যান্ড পরিদর্শন করবেন, সেটি হল চীনা সেনাবাহিনীর পাঁচটি জোনের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি জোনের একটি। মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্রের কথা মাথায় রেখে চীনা সেনার এই জোনের এয়ার ডিফেন্স ব্রিগেডকেই সবচেয়ে শক্তিশালী করে তোলা হয়েছে। ভারতীয় প্রতিনিধি দল সেই ব্রিগেড পরিদর্শন করবে।
জেনারেল দলবীর সিংহ সুহাগ চীন সফর শেষে ফেরার পর চীনা সেনার ওয়েস্টার্ন থিয়েটার কম্যান্ডের প্রধান জেনারেল ঝাও জঙ্গকি ভারত সফরে যাবেন। সুহাগের এই চীন সফরের বিষয়ে ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আগে থেকে তেমন কিছু জানায়নি।
চীনা সেনার শীর্ষ কর্মকর্তাও যে ভারতে আসবেন, সে বিষয়টি নিয়েও এত দিন খুব একটা জানা যায়নি। ভারত-চীনের শীর্ষ সেনাকর্তাদের মধ্যে এই আদান-প্রদান তাই চাপে ফেলছে পাকিস্তানকে। ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের যত আস্ফালন, তার প্রায় সবটাই চীনের ভরসায়। সেখানে, চীন এবং ভারতের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তারা পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির চেষ্টা শুরু করায় ইসলামাবাদ মোটেই স্বস্তিতে থাকতে পারছে না বলে মন্তব্য করেছে বিশেষজ্ঞ মহল।
সূত্র : আনন্দবাজার
বিডি প্রতিদিন/ ২২ নভেম্বর ২০১৬/ এনায়েত করিম-২